সেনা ও পুলিশের গাড়িতে পোশাক শ্রমিকদের আগুন, গুলিবিদ্ধ ২

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
  • আপডেট : ০৫:৪২:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪
  • / 15

বিক্ষুব্ধ পোশাকশ্রমিকরা গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর মিরপুর ১৪ নম্বরে বৃহস্পতিবার সকালে যৌথ বাহিনীর সঙ্গে পোশাকশ্রমিকদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে দুই পোশাকশ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। বিক্ষুব্ধ পোশাকশ্রমিকরা পুলিশের একটি ও সেনাবাহিনীর একটি গাড়িতে আগুন দিয়েছে।

গুলিবিদ্ধ দুই পোশাকশ্রমিক হলেন- আল আমিন (১৮) ও ঝুমা আক্তার (১৫)। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের অপারেটর আব্দুস সামাদ আজাদ বলেন, সকাল ৯টা ৫২ মিনিটে তারা আগুনের খবর পান।

তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর একটি গাড়ি এবং পুলিশের একটি ট্রাকে আগুনের খবর পেয়ে দুইটি ইউনিট পাঠানো হয়। আগুন নির্বাপণ করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে ফিরতি রিপোর্ট পেলে বিস্তারিত জানা যাবে।

পুলিশের পোড়া ট্রাক সড়কে পড়ে ছিল। পরে রেকার দিয়ে তা সরানো হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ বলেছে, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তৈরি পোশাক কারখানার কয়েক শ শ্রমিক বিভিন্ন দাবিতে মিরপুর-১৪ নম্বর কচুক্ষেত সড়কে বিক্ষোভ করেন। এ সময় তারা সড়ক অবরোধ করেন। একপর্যায়ে যৌথ বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত আড়াই ঘণ্টা ধরে সংঘর্ষ চলে।

সংঘর্ষ মিরপুর ১৪ নম্বর থেকে কচুক্ষেত পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় মিরপুর ১৪ নম্বর সড়কের সঙ্গে সংযোগ সড়কগুলোর যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। একপর্যায়ে পুলিশ পোশাকশ্রমিকদের লাঠিপেটা করে। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা সেনাবাহিনীর একটি গাড়ি ও পুলিশের একটি গাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন।

পুলিশ একপর্যায়ে টিয়ার শেল ও গুলি চালায়। এতে দুই পোশাকশ্রমিক গুলিবিদ্ধ হন। আল আমিনের দুই কাঁধে ও ঝুমার ডান পায়ের গোড়ালিতে গুলি লাগে। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বেলা ১১টার দিকে পরিস্থিতি শান্ত হলে ধীরে ধীরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

ভাষানটেক থানার ওসি শাহ মোহাম্মদ ফয়সাল বলেন, আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সকাল থেকেই রাস্তায় ছিলাম। গার্মেন্টস শ্রমিকরা হঠাৎ করে তাদের আন্দোলন থেকে পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। একপর্যায়ে তারা সেনাবাহিনী ও পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।

পুলিশের মিরপুর বিভাগের উপ-কমিশনার মাকসুদুর রহমান বেলা ১১টার দিকে বলেন, এখানে কয়েকটি গার্মেন্টেসের শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করছিল। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই তারা রাস্তায় নেমে আসে। তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছোড়ে। এই অবস্থায় তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও শক্তি প্রয়োগ করে। এই গাড়ি দুটি এখানেই ছিল, যতদূর জেনেছি আমরা- শ্রমিকরাই আগুন দিয়েছে।

বেলা ১১টার দিকে পুলিশের একটি পিকআপে করে কয়েকজন তরুণকে তুলে নিয়ে যেতে দেখা গেছে।

পুলিশ কর্মকর্তা মাকসুদুর বলেন, এ ঘটনায় কয়েকজন আটক করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। কোনো সংশ্লিষ্টতা না থাকলে ছেড়ে দেয়া হবে।

এদিকে, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ১৪ নম্বর থেকে সেনানিবাসমুখী সড়কে যান চলাচল শুরু হয়েছে। এ সময় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর দুটি রেকার এসে পুড়ে যাওয়া গাড়ি দুটি সরিয়ে নেয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

সেনা ও পুলিশের গাড়িতে পোশাক শ্রমিকদের আগুন, গুলিবিদ্ধ ২

আপডেট : ০৫:৪২:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪
রাজধানীর মিরপুর ১৪ নম্বরে বৃহস্পতিবার সকালে যৌথ বাহিনীর সঙ্গে পোশাকশ্রমিকদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে দুই পোশাকশ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। বিক্ষুব্ধ পোশাকশ্রমিকরা পুলিশের একটি ও সেনাবাহিনীর একটি গাড়িতে আগুন দিয়েছে।

গুলিবিদ্ধ দুই পোশাকশ্রমিক হলেন- আল আমিন (১৮) ও ঝুমা আক্তার (১৫)। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের অপারেটর আব্দুস সামাদ আজাদ বলেন, সকাল ৯টা ৫২ মিনিটে তারা আগুনের খবর পান।

তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর একটি গাড়ি এবং পুলিশের একটি ট্রাকে আগুনের খবর পেয়ে দুইটি ইউনিট পাঠানো হয়। আগুন নির্বাপণ করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে ফিরতি রিপোর্ট পেলে বিস্তারিত জানা যাবে।

পুলিশের পোড়া ট্রাক সড়কে পড়ে ছিল। পরে রেকার দিয়ে তা সরানো হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ বলেছে, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তৈরি পোশাক কারখানার কয়েক শ শ্রমিক বিভিন্ন দাবিতে মিরপুর-১৪ নম্বর কচুক্ষেত সড়কে বিক্ষোভ করেন। এ সময় তারা সড়ক অবরোধ করেন। একপর্যায়ে যৌথ বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত আড়াই ঘণ্টা ধরে সংঘর্ষ চলে।

সংঘর্ষ মিরপুর ১৪ নম্বর থেকে কচুক্ষেত পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় মিরপুর ১৪ নম্বর সড়কের সঙ্গে সংযোগ সড়কগুলোর যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। একপর্যায়ে পুলিশ পোশাকশ্রমিকদের লাঠিপেটা করে। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা সেনাবাহিনীর একটি গাড়ি ও পুলিশের একটি গাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন।

পুলিশ একপর্যায়ে টিয়ার শেল ও গুলি চালায়। এতে দুই পোশাকশ্রমিক গুলিবিদ্ধ হন। আল আমিনের দুই কাঁধে ও ঝুমার ডান পায়ের গোড়ালিতে গুলি লাগে। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বেলা ১১টার দিকে পরিস্থিতি শান্ত হলে ধীরে ধীরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

ভাষানটেক থানার ওসি শাহ মোহাম্মদ ফয়সাল বলেন, আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সকাল থেকেই রাস্তায় ছিলাম। গার্মেন্টস শ্রমিকরা হঠাৎ করে তাদের আন্দোলন থেকে পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। একপর্যায়ে তারা সেনাবাহিনী ও পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।

পুলিশের মিরপুর বিভাগের উপ-কমিশনার মাকসুদুর রহমান বেলা ১১টার দিকে বলেন, এখানে কয়েকটি গার্মেন্টেসের শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করছিল। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই তারা রাস্তায় নেমে আসে। তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছোড়ে। এই অবস্থায় তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও শক্তি প্রয়োগ করে। এই গাড়ি দুটি এখানেই ছিল, যতদূর জেনেছি আমরা- শ্রমিকরাই আগুন দিয়েছে।

বেলা ১১টার দিকে পুলিশের একটি পিকআপে করে কয়েকজন তরুণকে তুলে নিয়ে যেতে দেখা গেছে।

পুলিশ কর্মকর্তা মাকসুদুর বলেন, এ ঘটনায় কয়েকজন আটক করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। কোনো সংশ্লিষ্টতা না থাকলে ছেড়ে দেয়া হবে।

এদিকে, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ১৪ নম্বর থেকে সেনানিবাসমুখী সড়কে যান চলাচল শুরু হয়েছে। এ সময় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর দুটি রেকার এসে পুড়ে যাওয়া গাড়ি দুটি সরিয়ে নেয়।