ঢাকা ১১:৪৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবে নারী সাংবাদিককে বহিষ্কার, নিষ্পতির নির্দেশ হাইকোর্টের

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : ০৭:৪২:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ মে ২০২২
  • / 327

মৌলভীবাজারের এক নারী সাংবাদিকের ফল উৎসব আয়োজনকে কেন্দ্র করে প্রেসক্লাবের সভাপতি এম.এ.সালাম ও সাধারণ সম্পাদক পান্না দও ক্ষমতার অপব্যবহার করে বেআইনী ভাবে প্রেসক্লাব থেকে বহিষ্কারের অভিযোগ উঠেছে। পরবর্তীতে মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশে বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে যৌথমূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তর থেকে মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবকে একটি পত্র পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার (১২ মে) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে অয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে এসব জানান দৈনিক ভোরের পাতা ও দ্যা পিপলস টাইমের মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি এ.এস.কাঁকন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নাসিমুন আরা হক মিনু ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল নোমান।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, ‘মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের তিনি প্রথম নারী সদস্য এবং ২০২০-২০২২ সালের নির্বাচনে বিজয়ী প্রথম নারী ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক। মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবে ফল উৎসব আয়োজনকে কেন্দ্র করে গত ২০-০৭ ২০২১ তারিখে সভাপতি এম. এ সালামের একান্ত অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক পান্না দত্ত সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ এনে তার বিরুদ্ধে অসত্য, ভিওিহীন ও সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে কারন দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেন। তিনি গত ২-০৮-২০২১ তারিখ লিখিত জবাবে বিষয়টি কার্যকরী কমিটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ জানান।’
নোটিশে ১৪ দিনের মধ্যে জবাব দেয়ার কথা উল্লেখ থাকলেও জবাব দেয়ার প্রায় ৩ মাস ৩ দিন পর গত ৬ নভেম্বর ২০২১ ইংরেজি শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব ভবনে কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় এ প্রসঙ্গটি উত্থাপিত হয়।
সংবাদিক এ.এস.কাঁকন আরও জানান, তার প্রতি এ অন্যায়ের প্রতিকার চেয়ে মহামান্য হাইকোর্টের স্বরণাপন্ন হন। যথাযথ প্রমাণসহ মহামান্য হাইকোর্টে একটি রিটপিটিশন দায়ের করেন (রীট পিটিশন নাম্বার ১১৭১৭/২০২১)। গত ৫ ডিসেম্বর ২০২১ ইং রিটের পক্ষে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল নোমান। শুনানি শেষে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে রেজিষ্ট্রার জয়েন্ট স্টক কোম্পানি ও ফার্মের নিবন্ধক (আরজেএসসি) কে নির্দেশ দেন। হাইকোর্টের নির্দেশ ও সংবাদিক এ.এস.কাঁকন এর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৬-০৪-২০২২ ইংরেজি তারিখে যৌথমূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তর থেকে তাকে প্রেসক্লাব থেকে অন্যায়ভাবে বহিষ্কারের আদেশ বাতিল প্রসঙ্গে মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবকে একটি পত্র পাঠানো হয়।
যেখানে উল্লেখ করা হয় মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব নামীয় সোসাইটি গত ৬-১২-১৯৮৭ তারিখে নিবন্ধিত হবার পর থেকে নির্বাহী পর্ষদের কোন তালিকাই তাদেরকে দাখিল করেননি, যেখানে সোসাইটি রেজিষ্ট্রেশন অ্যাক্ট-১৮৬০ এর ৪ ধারা অনুযায়ী প্রত্যেক বছর নির্বাহী পর্ষদের তালিকা তাদের নিকট দাখিল করার বিধান রয়েছে। পত্রে আরও উল্লেখ করা হয় যে সোসাইটি রেজিষ্ট্রেশন অ্যাক্ট-১৮৬০ এর ৪ ধারা অনুযায়ী নির্ধারিত ফি প্রদান সাপেক্ষে অনলাইনের মাধ্যমে নির্বাহী পরিষদের তালিকা দাখিল করার জন্য এবং একই সাথে এ.এস.কাঁকন কর্তৃক উপস্থাপিত অভিযোগ সোসাইটির রুলস ও রেগুলেশন অনুযায়ী নিষ্পওির জন্য।
একজন নারী সাংবাদিক হিসেবে কাঁকন জানান, হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে রেজিষ্ট্রার জয়েন্ট স্টক কোম্পানিকে নির্দেশ দেন। নির্দ্দেশ পেয়ে জয়েন্ট স্টক কোম্পানি প্রেসক্লাব সভাপতিকে অন্যায়ভাবে বহিষ্কারের আদেশ বাতিল বলে নির্দ্দেশ দেন। এ আদেশ পাওয়ার পরও তাকে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক এর দায়িত্ব পালনে কোন প্রকার সুযোগ দিচ্ছেন না সভাপতি ও সম্পাদক। কার্যনির্বাহী কমিটির ওই সভা চলাকালিন সময়ে তার প্রতি অন্যায় ও অশালিন আচরণের একটি ভিডিও/অডিও কপি তার কাছে সংরক্ষিত আছে বলে জানিয়ে তিনি তাঁর প্রতি এমন অহিংস অচরণের বিষয়ে উর্ধ্বতন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবে নারী সাংবাদিককে বহিষ্কার, নিষ্পতির নির্দেশ হাইকোর্টের

আপডেট : ০৭:৪২:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ মে ২০২২

মৌলভীবাজারের এক নারী সাংবাদিকের ফল উৎসব আয়োজনকে কেন্দ্র করে প্রেসক্লাবের সভাপতি এম.এ.সালাম ও সাধারণ সম্পাদক পান্না দও ক্ষমতার অপব্যবহার করে বেআইনী ভাবে প্রেসক্লাব থেকে বহিষ্কারের অভিযোগ উঠেছে। পরবর্তীতে মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশে বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে যৌথমূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তর থেকে মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবকে একটি পত্র পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার (১২ মে) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে অয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে এসব জানান দৈনিক ভোরের পাতা ও দ্যা পিপলস টাইমের মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি এ.এস.কাঁকন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নাসিমুন আরা হক মিনু ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল নোমান।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, ‘মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের তিনি প্রথম নারী সদস্য এবং ২০২০-২০২২ সালের নির্বাচনে বিজয়ী প্রথম নারী ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক। মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবে ফল উৎসব আয়োজনকে কেন্দ্র করে গত ২০-০৭ ২০২১ তারিখে সভাপতি এম. এ সালামের একান্ত অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক পান্না দত্ত সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ এনে তার বিরুদ্ধে অসত্য, ভিওিহীন ও সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে কারন দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেন। তিনি গত ২-০৮-২০২১ তারিখ লিখিত জবাবে বিষয়টি কার্যকরী কমিটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ জানান।’
নোটিশে ১৪ দিনের মধ্যে জবাব দেয়ার কথা উল্লেখ থাকলেও জবাব দেয়ার প্রায় ৩ মাস ৩ দিন পর গত ৬ নভেম্বর ২০২১ ইংরেজি শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব ভবনে কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় এ প্রসঙ্গটি উত্থাপিত হয়।
সংবাদিক এ.এস.কাঁকন আরও জানান, তার প্রতি এ অন্যায়ের প্রতিকার চেয়ে মহামান্য হাইকোর্টের স্বরণাপন্ন হন। যথাযথ প্রমাণসহ মহামান্য হাইকোর্টে একটি রিটপিটিশন দায়ের করেন (রীট পিটিশন নাম্বার ১১৭১৭/২০২১)। গত ৫ ডিসেম্বর ২০২১ ইং রিটের পক্ষে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল নোমান। শুনানি শেষে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে রেজিষ্ট্রার জয়েন্ট স্টক কোম্পানি ও ফার্মের নিবন্ধক (আরজেএসসি) কে নির্দেশ দেন। হাইকোর্টের নির্দেশ ও সংবাদিক এ.এস.কাঁকন এর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৬-০৪-২০২২ ইংরেজি তারিখে যৌথমূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তর থেকে তাকে প্রেসক্লাব থেকে অন্যায়ভাবে বহিষ্কারের আদেশ বাতিল প্রসঙ্গে মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবকে একটি পত্র পাঠানো হয়।
যেখানে উল্লেখ করা হয় মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব নামীয় সোসাইটি গত ৬-১২-১৯৮৭ তারিখে নিবন্ধিত হবার পর থেকে নির্বাহী পর্ষদের কোন তালিকাই তাদেরকে দাখিল করেননি, যেখানে সোসাইটি রেজিষ্ট্রেশন অ্যাক্ট-১৮৬০ এর ৪ ধারা অনুযায়ী প্রত্যেক বছর নির্বাহী পর্ষদের তালিকা তাদের নিকট দাখিল করার বিধান রয়েছে। পত্রে আরও উল্লেখ করা হয় যে সোসাইটি রেজিষ্ট্রেশন অ্যাক্ট-১৮৬০ এর ৪ ধারা অনুযায়ী নির্ধারিত ফি প্রদান সাপেক্ষে অনলাইনের মাধ্যমে নির্বাহী পরিষদের তালিকা দাখিল করার জন্য এবং একই সাথে এ.এস.কাঁকন কর্তৃক উপস্থাপিত অভিযোগ সোসাইটির রুলস ও রেগুলেশন অনুযায়ী নিষ্পওির জন্য।
একজন নারী সাংবাদিক হিসেবে কাঁকন জানান, হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে রেজিষ্ট্রার জয়েন্ট স্টক কোম্পানিকে নির্দেশ দেন। নির্দ্দেশ পেয়ে জয়েন্ট স্টক কোম্পানি প্রেসক্লাব সভাপতিকে অন্যায়ভাবে বহিষ্কারের আদেশ বাতিল বলে নির্দ্দেশ দেন। এ আদেশ পাওয়ার পরও তাকে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক এর দায়িত্ব পালনে কোন প্রকার সুযোগ দিচ্ছেন না সভাপতি ও সম্পাদক। কার্যনির্বাহী কমিটির ওই সভা চলাকালিন সময়ে তার প্রতি অন্যায় ও অশালিন আচরণের একটি ভিডিও/অডিও কপি তার কাছে সংরক্ষিত আছে বলে জানিয়ে তিনি তাঁর প্রতি এমন অহিংস অচরণের বিষয়ে উর্ধ্বতন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করেন।