র্যাবে কর্মরত পুলিশ কর্মকর্তাদের হঠাৎ কেন বদলি?
- আপডেট : ০২:৪৪:৪৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ মে ২০২১
- / 252
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এর ৫০ কর্মকর্তাকে একযোগে বদলি করে তাদের ৩ জুনের মধ্যে বর্তমান কর্মস্থলের দায়িত্ব হস্তান্তর করতে বলা হয়েছে। না হলে পরদিন তাদের স্ট্যান্ড রিলিজের আওতায় আনা হবে। পুলিশের এতো কর্মকর্তাকে একসঙ্গে বদলি করার ঘটনা অন্ত-দ্বন্দ্বের কারণে হতে পারে বলে র্যাব এবং পুলিশের সাবেক কর্মকর্তাদের ধারণা।
গত বৃহস্পতিবার পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ বদলির আদেশ দেয়া হয়।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের সাবেক একজন কর্মকর্তা বলেন, একইসঙ্গে র্যাবে দায়িত্বে থাকা এতো পুলিশ কর্মকর্তাদের বদলি হয়নি, এই ঘটনা নজিরবিহীন।
এ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বিবিসি বাংলাকে বলেন, বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা র্যাবে থাকলেও তাদের মধ্যে সম্পর্কের কোনো টানাপোড়েন বা সমস্যা নেই। একসঙ্গে বদলির এটা রুটিন বদলির মধ্যে পরে।
র্যাব গঠন করা হয়েছিল সেনা, বিমান, নৌবাহিনী ও পুলিশসহ ৭টি বাহিনীর কর্মকর্তা বা লোকবল নিয়ে। বাহিনীটির নীতিমালাতেই বলা আছে, সেনাবাহিনী এবং পুলিশ থেকে ৪৪ শতাংশ করে কর্মকর্তা র্যাবে থাকবে। এছাড়া বাকি ১২ শতাংশ কর্মকর্তা নেয়া হবে অন্যান্য বাহিনী থেকে।
পলিশ সূত্রে জানা যায়, র্যাবে এতোদিন এসপি পদের পুলিশ কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়নি। এবার ৪৭ জন পুলিশ কর্মকর্তাকে এসপি পদে পদন্নোতি দিয়ে তাদের র্যাবে পাঠানো হয়েছে। ফলে র্যাবে পুলিশ থেকে ৪৪ শতাংশ কর্মকর্তা নিয়োগের যে বিধান আছে, সেখানে পুলিশ কর্মকর্তার সংখ্যা অতিরিক্ত বা বেশি হয়ে গেছে। সেজন্য র্যাবে আগে থেকে কর্মরত কিছু কর্মকর্তাকে সেখান থেকে বদলি করা হয়েছে।
র্যাবে কর্মরত পুলিশের ৫০ জন কর্মকর্তাকে একযোগে বদলি করে তাদের বর্তমান কর্মস্থলের দায়িত্ব হস্তান্তরের জন্য সময় দেয়া হয়েছে ৩ জুন পর্যন্ত। বদলিকৃত কর্মকর্তারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দায়িত্ব হস্তান্তর না করলে পরদিন তাদের স্ট্যান্ড রিলিজের আওতায় আনা হবে বলে বদলি আদেশে উল্লেখ করা হয়।
এই বদলির তালিকার মধ্যে ১০ জন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অ্যাডিশনাল এসপি) এবং ৪০ জন সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) রয়েছেন।
এ বিষয়ে পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মোখলেছুর রহমান বলেন, এটা অত্যন্ত স্বাভাবিক যে, কোনো একটা ডিপার্টমেন্টে যদি বিভিন্ন ডিসিপ্লিনের মানুষকে একসাথে করা হয়- তাদের টেমপারমেন্ট, তাদের ট্রেনিং বা দৃষ্টিভঙ্গি এক ট্র্যাকে নেয়া সময়সাপেক্ষ, দীর্ঘমেয়াদী বিষয়।
তবে বিভিন্ন সময় র্যাবে কর্মকর্তা এবং পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব বা টানাপোড়েনের খবর সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও বিভিন্ন সময় দ্বন্দ্ব সম্পর্কিত লিখিত নানা অভিযোগের সমাধান করেছে।
র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, ‘আমরা যেটা মনে করি, এই বদলি প্রক্রিয়া একটা নিয়মিত প্রসেসের মধ্যে পরে। এর আগে ৩৬ তম বিসিএসের ৪৭ কর্মকর্তা একসঙ্গে র্যাবে জয়েন করেছিলো, হয়তো আবার কোনো অফিসার র্যাবে জয়েন করতে পারে। সাতটি বাহিনীর সংমিশ্রণে র্যাব। যারা এসপি হয়ে আমাদের এখানে বদলি এসেছেন, তারা যাচ্ছেন না। তাদের এখনও পদায়ন হয়নি।’
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, যাদের বদলি করা হয়েছে তারা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবং সহকারী পুলিশ সুপার পদ মর্যাদার। তাদের এখানে দু’বছর বা কারো ৪ বছর চাকরি হয়েছে। এখন তাদের বদলি এটা রুটিন প্রসেস।
র্যাবে অন্ত কোন্দল আছে কি না জানতে চাইলে র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, আমরা সবাই একসঙ্গে মিলে কাজ করছি। এমন কিছু থাকার কথা না। এখানে ৭ বাহিনীর লোকবল আছে, সবাই প্রফেশনাল কম্পিটিশন হিসেবেই কাজ করছি।