ওএমএসে সবজি বিক্রি করতে চায় সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
  • আপডেট : ০৬:৪২:৫৬ অপরাহ্ন, সোমাবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪
  • / 21

ফাইল ছবি

রাজধানীতে পাইলট প্রকল্প হিসেবে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ভর্তুকি মূল্যে সবজি বিক্রির পরিকল্পনা করছে সরকার। পরিকল্পনা অনুযায়ী সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে আলু, পেঁয়াজ ও কাঁচা মরিচ কিনে নির্ধারিত কিছু এলাকায় খোলা বাজারে বিক্রি (ওএমএস) করা হবে।

পাইলট প্রকল্পের জন্য এ পর্যন্ত অন্তত ১০টি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। এ পদ্ধতি কাজ করলে বিক্রির স্থান সংখ্যা বাড়ানো হবে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় কাজ করছে।

গতকাল রোববার প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবনে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও অন্যান্য উপদেষ্টাদের মধ্যে এক বিশেষ বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। নিত্যপণ্যের আকাশছোঁয়া দাম নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা ও উদ্বেগের মধ্যে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

সম্প্রতি ডিম ও বিভিন্ন সবজির দাম বেড়েছে। তাই সরকার আরও ডিম আমদানি এবং বিভিন্ন নিত্যপণ্যের শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

সম্প্রতি চিনির শুল্ক কমানো হয়েছে। গত ৯ অক্টোবর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড চিনি আমদানিতে শুল্ক ৩০ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করে। অপরিশোধিত চিনির আমদানি খরচ প্রতি কেজিতে ১১ টাকা ১৮ পয়সা এবং পরিশোধিত চিনির খরচ ১৪ টাকা ২৬ পয়সা কমানো হয়েছে।

সরকার অন্যান্য পণ্যের উপরও শুল্ক কমানোর পরিকল্পনা করেছে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য এখনও প্রকাশ করা হয়নি।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বাজার মনিটরিং টাস্কফোর্সকে কৃত্রিমভাবে মূল্যবৃদ্ধির জন্য সিন্ডিকেটগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দেন।

এ ছাড়া, তিনি নিত্যপণ্য আমদানিকারকদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখার জন্য বাণিজ্য উপদেষ্টাকে নির্দেশ দেন।

জানতে চাইলে কৃষি মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, সাধারণ মানুষ বিশেষ করে স্বল্প আয়ের মানুষ- নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে হিমশিম খাচ্ছে। সরকার এই পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতন। সাম্প্রতিক বন্যার মতো অপ্রত্যাশিত কারণের কারণে সবজির বাজার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। সরকার ভর্তুকি দামে সবজি বিক্রির কথা ভাবছে।

কৃষি বিপণন বিভাগ, বাংলাদেশ ট্রেডিং কর্পোরেশন এবং বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন (বিআরটিসি) এই উদ্যোগের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবে বলে জানান তিনি।

এর আগে গত ৮ আগস্ট ক্ষমতায় আসার পর বর্তমান সরকার প্রথমবারের মতো এই পদ্ধতিতে সবজি বিক্রির পরিকল্পনা করছে।

সূত্র আরও জানায়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় উৎপাদন কেন্দ্র থেকে রাজধানীতে সবজি পরিবহনের জন্য বিআরটিসির ট্রাক দেবে। মুন্সীগঞ্জ থেকে আলু এবং ফরিদপুর ও পাবনা থেকে পেঁয়াজ আনা হবে।

বৈঠকে ড. ইউনূস জোর বলেন, নিত্যপণ্য যেন সাশ্রয়ী দামে পাওয়া যায়, তা নিশ্চিত করতে সম্ভব্য সব ব্যবস্থা নিতে হবে। এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নিতে উপদেষ্টারা যেন কোনো দ্বিধা না করেন, সে বিষয়েও নির্দেশনা দেন তিনি।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ, আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, সড়ক পরিবহন ও সেতু বিভাগের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফয়জুল কবির খান এবং কৃষি উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ওএমএসে সবজি বিক্রি করতে চায় সরকার

আপডেট : ০৬:৪২:৫৬ অপরাহ্ন, সোমাবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪
রাজধানীতে পাইলট প্রকল্প হিসেবে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ভর্তুকি মূল্যে সবজি বিক্রির পরিকল্পনা করছে সরকার। পরিকল্পনা অনুযায়ী সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে আলু, পেঁয়াজ ও কাঁচা মরিচ কিনে নির্ধারিত কিছু এলাকায় খোলা বাজারে বিক্রি (ওএমএস) করা হবে।

পাইলট প্রকল্পের জন্য এ পর্যন্ত অন্তত ১০টি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। এ পদ্ধতি কাজ করলে বিক্রির স্থান সংখ্যা বাড়ানো হবে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় কাজ করছে।

গতকাল রোববার প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবনে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও অন্যান্য উপদেষ্টাদের মধ্যে এক বিশেষ বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। নিত্যপণ্যের আকাশছোঁয়া দাম নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা ও উদ্বেগের মধ্যে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

সম্প্রতি ডিম ও বিভিন্ন সবজির দাম বেড়েছে। তাই সরকার আরও ডিম আমদানি এবং বিভিন্ন নিত্যপণ্যের শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

সম্প্রতি চিনির শুল্ক কমানো হয়েছে। গত ৯ অক্টোবর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড চিনি আমদানিতে শুল্ক ৩০ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করে। অপরিশোধিত চিনির আমদানি খরচ প্রতি কেজিতে ১১ টাকা ১৮ পয়সা এবং পরিশোধিত চিনির খরচ ১৪ টাকা ২৬ পয়সা কমানো হয়েছে।

সরকার অন্যান্য পণ্যের উপরও শুল্ক কমানোর পরিকল্পনা করেছে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য এখনও প্রকাশ করা হয়নি।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বাজার মনিটরিং টাস্কফোর্সকে কৃত্রিমভাবে মূল্যবৃদ্ধির জন্য সিন্ডিকেটগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দেন।

এ ছাড়া, তিনি নিত্যপণ্য আমদানিকারকদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখার জন্য বাণিজ্য উপদেষ্টাকে নির্দেশ দেন।

জানতে চাইলে কৃষি মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, সাধারণ মানুষ বিশেষ করে স্বল্প আয়ের মানুষ- নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে হিমশিম খাচ্ছে। সরকার এই পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতন। সাম্প্রতিক বন্যার মতো অপ্রত্যাশিত কারণের কারণে সবজির বাজার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। সরকার ভর্তুকি দামে সবজি বিক্রির কথা ভাবছে।

কৃষি বিপণন বিভাগ, বাংলাদেশ ট্রেডিং কর্পোরেশন এবং বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন (বিআরটিসি) এই উদ্যোগের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবে বলে জানান তিনি।

এর আগে গত ৮ আগস্ট ক্ষমতায় আসার পর বর্তমান সরকার প্রথমবারের মতো এই পদ্ধতিতে সবজি বিক্রির পরিকল্পনা করছে।

সূত্র আরও জানায়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় উৎপাদন কেন্দ্র থেকে রাজধানীতে সবজি পরিবহনের জন্য বিআরটিসির ট্রাক দেবে। মুন্সীগঞ্জ থেকে আলু এবং ফরিদপুর ও পাবনা থেকে পেঁয়াজ আনা হবে।

বৈঠকে ড. ইউনূস জোর বলেন, নিত্যপণ্য যেন সাশ্রয়ী দামে পাওয়া যায়, তা নিশ্চিত করতে সম্ভব্য সব ব্যবস্থা নিতে হবে। এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নিতে উপদেষ্টারা যেন কোনো দ্বিধা না করেন, সে বিষয়েও নির্দেশনা দেন তিনি।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ, আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, সড়ক পরিবহন ও সেতু বিভাগের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফয়জুল কবির খান এবং কৃষি উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।