চার বছর পরও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন অনিশ্চিত
- আপডেট : ০১:৩৩:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ অগাস্ট ২০২১
- / 171
সূত্র জানায়, সব মিলিয়ে বর্তমানে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গার সংখ্যা প্রায় ১১ লাখ। গত চার বছরে আরো দুই লাখ শিশুর জন্ম হয়েছে। ফলে তাদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর লক্ষ্যে দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় চুক্তি করেছে। চীনের মধ্যস্থতায় ত্রিপক্ষীয় আলোচনা শুরু করেছে।
এ বিষয়ে সাবেক রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জমির বলেন, রোহিঙ্গা সংকট মিয়ানমারের সৃষ্টি। মিয়ানমারকেই এই সংকট দূর করতে হবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বলতে হবে যে, এটি একটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ইস্যু। এই সংকট নিরসনকল্পে চীন ও রাশিয়ায় বিশেষ দূত পাঠানো উচিত।
সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির বলেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের চেষ্টা চলছে। তবে আমাদের চেষ্টার বাইরেও অনেক ঘটনা ঘটে। মিয়ানমারের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আফগানিস্তানের পরিস্থিতি, চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেনশন এসবের ওপর আমাদের কোনো হাত নেই। সব মিলে পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করেছে। আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। দ্রুত প্রত্যাবাসনের সঙ্গে আশিয়ানের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে হবে।
তিনি আরো বলেন, রোহিঙ্গাদের মধ্যে আশার সঞ্চার করতে হবে। রোহিঙ্গা সংকটের কারণে বাংলাদেশে নানা ধরনের সামাজিক সমস্যা হচ্ছে। কক্সবাজারে এদের শিবির এবং আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। ওই অঞ্চলের পরিবেশের ওপর মারাত্মক চাপ পড়েছে। ইতোমধ্যে ২০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়েছে। সব মিলে এখানে এক লাখের বেশি স্থান দেওয়া সম্ভব। এখানে বিভিন্ন এনজিও কাজ করছে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো কাজ করতে রাজি আছে বলে সরকারের তরফে বলা হচ্ছে।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, পৃথিবীর খুব কম দেশই আছে যারা শরণার্থীদের জন্য ভাসানচরের মতো অবকাঠামো নির্মাণ করে দিয়েছে। জাতিসংঘ শুরুতে ভাসানচরে যেতে রাজি না হলেও এখন তারা সেখানে যেতে রাজি হয়েছে।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, আগামী সপ্তাহে জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআরের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের চুক্তি হবে। সেপ্টেম্বর নাগাদ জাতিসংঘের উপস্থিতি ভাসানচরে দেখা যাবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক নিলুফার ইয়াসমিন বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য চার বছর অনেক দীর্ঘ সময়। আমার শঙ্কা হচ্ছে, আফগানসহ অন্যান্য সমস্যার কারণে রোহিঙ্গা ইস্যু সাইডলাইন হয়ে যায় কিনা। তবে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ। তাই বাংলাদেশে অস্থিরতা চাইবে না যুক্তরাষ্ট্র। সে কারণে রোহিঙ্গা ইস্যুটি বারবার আন্তর্জাতিক ফোরামে তুলে ধরতে হবে। সংকট সমাধান না হওয়া পর্যন্ত চেষ্টা চালাতে হবে।