‘উড়ে এসে জুড়ে বসাদের মানুষের জন্য দায়বদ্ধতা থাকে না’

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ১১:৩৩:০২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • / 142

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

বিএনপির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা উড়ে এসে ক্ষমতায় জুড়ে বসে তাদের দেশের মানুষের জন্য কোনো দায়বদ্ধতা থাকে না। ক্ষমতাটাকে তারা ভোগের জায়গা বানায়, অর্থ-সম্পদ বানানোর একটা মেশিন হিসেবে পায়। দেশের মানুষ মরুক-বাঁচুক সেটাতে তাদের কোনো খেয়াল থাকে না। এটাই হলো বাস্তবতা।

বুধবার (৮ সেপ্টম্বর) সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। ভূমি মন্ত্রণালয়ের ভূমি ভবন, উপজেলা ও ইউনিয়নের ভূমি অফিস ভবন, অনলাইন ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ কার্যক্রম এবং ভূমি ডাটা ব্যাংকের উদ্বোধন উপলক্ষে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়।

এ সময় সারাদেশে ভূমি অফিসগুলো বিগত সময়ে জরাজীর্ণ পরিবেশে থাকার কথা তুলে ধরেন এবং তার সরকার ভূমি ব্যবস্থাপনাকে উন্নত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে বলে দাবি করেন শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের আগে যারা ক্ষমতায় ছিল তারা সারাদেশের জরাজীর্ণ ভূমি অফিসগুলোর কেন সংস্কার করেননি?- সেই প্রশ্ন তোলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘ভূমি অফিসের জীর্ণদশা কেন ছিল? আমি জানি না। আমাদের আগে তো অনেকেই ক্ষমতায় এসেছে। কেন অফিসগুলোর কোনো সংস্কার করা হয়নি সেটাই বড় প্রশ্ন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনারা জানেন যে, বিএনপি-জামাত জোট ২০১৩ সালে যেভাবে আগুন-সন্ত্রাস শুরু করেছিল তাতে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তারা অনেকগুলি ভূমি অফিস জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দেয়। তারা শুধু ভূমি অফিস জ্বালায়নি, চলন্ত বাসে আগুন দিয়ে জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারে। সিএনজি চালককে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তখন একটা ঘোষণা দিয়েছিলাম যে, যারা এই ভূমি অফিস পোড়াচ্ছে তাদের যেন আর কোনোদিন কখনো জমির মালিকানা না থাকে। কারণ তারাতো আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। তাহলে তারা আর পাবে কেন? এই হুমকি দেওয়ার পরে কিন্তু তাদের ভূমি অফিস পোড়ানোটা বন্ধ হয়।’

তিনি বলেন, ‘তাদের এই ধ্বংসযজ্ঞ আমরা দেখেছি। আসলে বিএনপি-জামাত তো মানুষের জন্য কাজ করে না। এদের ক্ষমতাটা অবৈধভাবে দখলকারীদের হাত দিয়ে তৈরি মিলিটারি ডিক্টেটরের হাতে গড়া সংগঠন। কাজেই মানুষের প্রতি তাদের কোনো দায়িত্ববোধ নেই, দেশের জন্যও নেই। ক্ষমতা যাওয়া আর ক্ষমতায় থেকে টাকা বানানো এবং জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস-দুর্নীতি করাই তাদের কাজ।’

১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যার পর থেকে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পালা যখন শুরু হল তখন থেকেই বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বিনষ্ট হতে শুরু করে বলে উল্লেখ করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের প্রসঙ্গ স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু সেই ঐতিহাসিক ৭ মার্চ বলেছিলেন, কেউ দাবায়া রাখতে পারবা না। এই জাতিকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। আর এই কাজটা সম্ভব হয় একমাত্র আওয়ামী লীগ যখন সরকারে আসে। আমরা আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করি, একটা আদর্শ নিয়ে কাজ করি, একটা নীতি নিয়ে কাজ করি, সুদূর প্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করি।’

তিনি বলেন, ‘কেন করি? কারণ, এদেশের মানুষের মুক্তির জন্য, স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করেছে আওয়ামী লীগের কর্মীরা।’ আওয়ামী লীগ যখন সরকারে আসে দেশের মানুষের সর্বাত্মকভাবে উন্নতি হয় বলে দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি তার সরকারের বিভিন্ন মেয়াদে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে সুদূর প্রসারী পরিকল্পনা প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়ন করার প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।

করোনাকালীন অবস্থার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘হয়তো স্বাভাবিক অবস্থায় আমরা যেটা করতে পারতাম সেটা করতে পারছি না। তারপরও আমরা কিন্তু থেমে যাইনি। আমরা থেমে যাব না। আমরা এ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব। বাংলাদেশ তার এগিয়ে যাওয়া অব্যাহত রাখবে এবং অপ্রতিরোধ্য গতিতে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।’

ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তন প্রান্তে এই সময় ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, ভূমি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো.মকবুল হোসেন, মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

‘উড়ে এসে জুড়ে বসাদের মানুষের জন্য দায়বদ্ধতা থাকে না’

আপডেট : ১১:৩৩:০২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২১

বিএনপির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা উড়ে এসে ক্ষমতায় জুড়ে বসে তাদের দেশের মানুষের জন্য কোনো দায়বদ্ধতা থাকে না। ক্ষমতাটাকে তারা ভোগের জায়গা বানায়, অর্থ-সম্পদ বানানোর একটা মেশিন হিসেবে পায়। দেশের মানুষ মরুক-বাঁচুক সেটাতে তাদের কোনো খেয়াল থাকে না। এটাই হলো বাস্তবতা।

বুধবার (৮ সেপ্টম্বর) সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। ভূমি মন্ত্রণালয়ের ভূমি ভবন, উপজেলা ও ইউনিয়নের ভূমি অফিস ভবন, অনলাইন ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ কার্যক্রম এবং ভূমি ডাটা ব্যাংকের উদ্বোধন উপলক্ষে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়।

এ সময় সারাদেশে ভূমি অফিসগুলো বিগত সময়ে জরাজীর্ণ পরিবেশে থাকার কথা তুলে ধরেন এবং তার সরকার ভূমি ব্যবস্থাপনাকে উন্নত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে বলে দাবি করেন শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের আগে যারা ক্ষমতায় ছিল তারা সারাদেশের জরাজীর্ণ ভূমি অফিসগুলোর কেন সংস্কার করেননি?- সেই প্রশ্ন তোলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘ভূমি অফিসের জীর্ণদশা কেন ছিল? আমি জানি না। আমাদের আগে তো অনেকেই ক্ষমতায় এসেছে। কেন অফিসগুলোর কোনো সংস্কার করা হয়নি সেটাই বড় প্রশ্ন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনারা জানেন যে, বিএনপি-জামাত জোট ২০১৩ সালে যেভাবে আগুন-সন্ত্রাস শুরু করেছিল তাতে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তারা অনেকগুলি ভূমি অফিস জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দেয়। তারা শুধু ভূমি অফিস জ্বালায়নি, চলন্ত বাসে আগুন দিয়ে জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারে। সিএনজি চালককে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তখন একটা ঘোষণা দিয়েছিলাম যে, যারা এই ভূমি অফিস পোড়াচ্ছে তাদের যেন আর কোনোদিন কখনো জমির মালিকানা না থাকে। কারণ তারাতো আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। তাহলে তারা আর পাবে কেন? এই হুমকি দেওয়ার পরে কিন্তু তাদের ভূমি অফিস পোড়ানোটা বন্ধ হয়।’

তিনি বলেন, ‘তাদের এই ধ্বংসযজ্ঞ আমরা দেখেছি। আসলে বিএনপি-জামাত তো মানুষের জন্য কাজ করে না। এদের ক্ষমতাটা অবৈধভাবে দখলকারীদের হাত দিয়ে তৈরি মিলিটারি ডিক্টেটরের হাতে গড়া সংগঠন। কাজেই মানুষের প্রতি তাদের কোনো দায়িত্ববোধ নেই, দেশের জন্যও নেই। ক্ষমতা যাওয়া আর ক্ষমতায় থেকে টাকা বানানো এবং জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস-দুর্নীতি করাই তাদের কাজ।’

১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যার পর থেকে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পালা যখন শুরু হল তখন থেকেই বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বিনষ্ট হতে শুরু করে বলে উল্লেখ করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের প্রসঙ্গ স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু সেই ঐতিহাসিক ৭ মার্চ বলেছিলেন, কেউ দাবায়া রাখতে পারবা না। এই জাতিকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। আর এই কাজটা সম্ভব হয় একমাত্র আওয়ামী লীগ যখন সরকারে আসে। আমরা আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করি, একটা আদর্শ নিয়ে কাজ করি, একটা নীতি নিয়ে কাজ করি, সুদূর প্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করি।’

তিনি বলেন, ‘কেন করি? কারণ, এদেশের মানুষের মুক্তির জন্য, স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করেছে আওয়ামী লীগের কর্মীরা।’ আওয়ামী লীগ যখন সরকারে আসে দেশের মানুষের সর্বাত্মকভাবে উন্নতি হয় বলে দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি তার সরকারের বিভিন্ন মেয়াদে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে সুদূর প্রসারী পরিকল্পনা প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়ন করার প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।

করোনাকালীন অবস্থার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘হয়তো স্বাভাবিক অবস্থায় আমরা যেটা করতে পারতাম সেটা করতে পারছি না। তারপরও আমরা কিন্তু থেমে যাইনি। আমরা থেমে যাব না। আমরা এ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব। বাংলাদেশ তার এগিয়ে যাওয়া অব্যাহত রাখবে এবং অপ্রতিরোধ্য গতিতে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।’

ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তন প্রান্তে এই সময় ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, ভূমি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো.মকবুল হোসেন, মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।