ঢাকা ০২:৫২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ধুলাদূষণ নিয়ন্ত্রণে বিদ্যমান আইন বাস্তবায়নের দাবি

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ১২:১৬:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২১
  • / 123

ধূলাদূষণ নিয়ন্ত্রণে বিদ্যমান আইনগুলো বাস্তবায়ন ও সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষকে তাদের উপর অর্পিত আইনগত দায়িত্ব আন্তরিকতা, নিষ্ঠা, সততা এবং স্বচ্ছতার সঙ্গে পালনসহ ১১ দফা সুপারিশ জানিয়েছে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনসহ (পবা) ৯টি সংগঠন। শনিবার (২৭ নভেম্বর) জাতীয় জাদুঘরের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে এসব সুপারিশ জানানো হয়।

তাদের অন্যান্য সুপারিশগুলো হচ্ছে- ধুলা সৃষ্টি করে এমন কোনো সামগ্রী (বালু, মাটি, ইট, পাথর) বহনের সময় সঠিকভাবে আচ্ছাদনের ব্যবস্থা নেওয়া; ভবন নির্মাণ ও মেরামত বা অন্য যেকোনো অবকাঠামো নির্মাণের সময় নির্মাণ সামগ্রী ফুটপাত বা রাস্তার উপর বা রাস্তার পাশে খোলা জায়গায় না রাখা; নালা-নর্দমা পরিষ্কার করার পর আবর্জনা রাস্তার পাশে জমিয়ে না রাখা এবং দ্রুততম সময়ে সরিয়ে নেওয়া; সব আবর্জনা যথাযথ স্থানে ফেলা, সিটি করপোরেশনের আবর্জনা সংগ্রহ ও পরিবহনের সময় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাতে যানবাহন থেকে আর্বজনা রাস্তায় ছড়িয়ে না পড়ে; রাস্তাঘাট ও ফুটপাত নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও মেরামত করা; ইট প্রস্তুতে আধুনিক প্রযুক্তি ও লো সালফারযুক্ত কয়লা ব্যবহার করা; সব অবকাঠামো উন্নয়ন সংস্থা ও কর্তৃপক্ষকে ধুলাদূষণ বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহণে পরিবেশ অধিদফতরের নির্দেশনা দেওয়া; নির্দেশনা অমান্যকারী কর্তৃপক্ষ বা সংস্থাকে পরিবেশ আইন অনুসারে জরিমানা করা; ধুলাদূষণ বন্ধে নগরে পর্যাপ্ত গাছ লাগানো এবং ধুলাদূষণ ও এর ক্ষতিকর প্রভাব বিষয়ে নাগরিক সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সরকার ও বেসরকারি সংগঠন, গণমাধ্যম এবং সচেতন মহলের যথাযথ দায়িত্ব পালন করা।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, শীর্ষ দূষিত নগরীর মধ্যে ঢাকা মহানগরী অন্যতম। বায়ু দূষণের প্রধান উৎসগুলো প্রায় সবারই কমবেশি জানা। যন্ত্রচালিত যান থেকে উৎপন্ন ধোঁয়া, ইটভাটা থেকে নির্গত ধোঁয়া, বিভিন্ন শিল্প কারখানা থেকে নির্গত ধোঁয়া, প্লাস্টিক ও ইলেকট্রনিক্স বর্জ্য প্রসেসিং/পোড়ানো থেকে উৎপন্ন ধোঁয়া এগুলোর মধ্যে অন্যতম।

বর্ষাকালে বৃষ্টির ফলে বায়ু দূষণ কমে যায়, বাতাস চলাচলে দূষিত বায়ু দূরে চলে যায়। ফলে সে সময় বায়ুদূষণ কিছুটা কম থাকে। শীতকালে ইটের ভাটার কার্যক্রমের পরিমাণ ও দূষণ বাড়ে। কনস্ট্রাকশন ও রাস্তা খোঁড়াখুড়ির কাজ অনেকাংশে বেড়ে যায়। এ সময় আবহাওয়া শুষ্ক থাকার কারণে ধুলা বাতাসে অনেকক্ষণ উড়ে বেড়ায়। ফলে ধলাদূষণও অনেক বৃদ্ধি পায়। অন্যান্য উৎস থেকে ধোঁয়া ও ধুলা একত্র হয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি করে এবং এই দূষিত বায়ু দীর্ঘক্ষণ একই জায়গায় অবস্থান করে। ফলে অন্যান্য উৎস ধুলাদূষণ একত্রিত হওয়ার ফলে বাতাস দূষণের মাত্রা অত্যাধিক বৃদ্ধি পায়।

সরকার ধুলাদূষণ রোধে অনেক পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও তা বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে পর্যাপ্ত নয় উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, সম্প্রতি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে বায়ুদূষণের কারণে এত ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে যে, সে দেশের সরকার স্কুল-কলেজ বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। ঢাকার পরিস্থিতি সেদিকে ধাবিত হচ্ছে বলে আমরা আশঙ্কা প্রকাশ করছি। ফলে বায়ুদূষণের হাত থেকে বাঁচার জন্য সরকারকে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, সাধারণ সম্পাদক প্রকৌ. মো. আবদুস সোবহান, সম্পাদক এম এ ওয়াহেদ, নাসফ-এর সহসভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা কে এম সিদ্দিক আলী, নাসফ-এর সাধারণ সম্পাদক মো. তৈয়ব আলী, আইন বিষয়ক সম্পাদক মো. ওমর ফারুক, সদস্য ক্যামেলিয়া চৌধুরী, পুরান ঢাকা নাগরিক উদ্যোগের সভাপতি নাজিমউদ্দীন, বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলনের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাসিবুল হক পুনম, পরিষ্কার ঢাকার সমন্বয়ক মো. শাজাহান প্রমুখ।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ধুলাদূষণ নিয়ন্ত্রণে বিদ্যমান আইন বাস্তবায়নের দাবি

আপডেট : ১২:১৬:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২১

ধূলাদূষণ নিয়ন্ত্রণে বিদ্যমান আইনগুলো বাস্তবায়ন ও সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষকে তাদের উপর অর্পিত আইনগত দায়িত্ব আন্তরিকতা, নিষ্ঠা, সততা এবং স্বচ্ছতার সঙ্গে পালনসহ ১১ দফা সুপারিশ জানিয়েছে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনসহ (পবা) ৯টি সংগঠন। শনিবার (২৭ নভেম্বর) জাতীয় জাদুঘরের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে এসব সুপারিশ জানানো হয়।

তাদের অন্যান্য সুপারিশগুলো হচ্ছে- ধুলা সৃষ্টি করে এমন কোনো সামগ্রী (বালু, মাটি, ইট, পাথর) বহনের সময় সঠিকভাবে আচ্ছাদনের ব্যবস্থা নেওয়া; ভবন নির্মাণ ও মেরামত বা অন্য যেকোনো অবকাঠামো নির্মাণের সময় নির্মাণ সামগ্রী ফুটপাত বা রাস্তার উপর বা রাস্তার পাশে খোলা জায়গায় না রাখা; নালা-নর্দমা পরিষ্কার করার পর আবর্জনা রাস্তার পাশে জমিয়ে না রাখা এবং দ্রুততম সময়ে সরিয়ে নেওয়া; সব আবর্জনা যথাযথ স্থানে ফেলা, সিটি করপোরেশনের আবর্জনা সংগ্রহ ও পরিবহনের সময় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাতে যানবাহন থেকে আর্বজনা রাস্তায় ছড়িয়ে না পড়ে; রাস্তাঘাট ও ফুটপাত নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও মেরামত করা; ইট প্রস্তুতে আধুনিক প্রযুক্তি ও লো সালফারযুক্ত কয়লা ব্যবহার করা; সব অবকাঠামো উন্নয়ন সংস্থা ও কর্তৃপক্ষকে ধুলাদূষণ বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহণে পরিবেশ অধিদফতরের নির্দেশনা দেওয়া; নির্দেশনা অমান্যকারী কর্তৃপক্ষ বা সংস্থাকে পরিবেশ আইন অনুসারে জরিমানা করা; ধুলাদূষণ বন্ধে নগরে পর্যাপ্ত গাছ লাগানো এবং ধুলাদূষণ ও এর ক্ষতিকর প্রভাব বিষয়ে নাগরিক সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সরকার ও বেসরকারি সংগঠন, গণমাধ্যম এবং সচেতন মহলের যথাযথ দায়িত্ব পালন করা।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, শীর্ষ দূষিত নগরীর মধ্যে ঢাকা মহানগরী অন্যতম। বায়ু দূষণের প্রধান উৎসগুলো প্রায় সবারই কমবেশি জানা। যন্ত্রচালিত যান থেকে উৎপন্ন ধোঁয়া, ইটভাটা থেকে নির্গত ধোঁয়া, বিভিন্ন শিল্প কারখানা থেকে নির্গত ধোঁয়া, প্লাস্টিক ও ইলেকট্রনিক্স বর্জ্য প্রসেসিং/পোড়ানো থেকে উৎপন্ন ধোঁয়া এগুলোর মধ্যে অন্যতম।

বর্ষাকালে বৃষ্টির ফলে বায়ু দূষণ কমে যায়, বাতাস চলাচলে দূষিত বায়ু দূরে চলে যায়। ফলে সে সময় বায়ুদূষণ কিছুটা কম থাকে। শীতকালে ইটের ভাটার কার্যক্রমের পরিমাণ ও দূষণ বাড়ে। কনস্ট্রাকশন ও রাস্তা খোঁড়াখুড়ির কাজ অনেকাংশে বেড়ে যায়। এ সময় আবহাওয়া শুষ্ক থাকার কারণে ধুলা বাতাসে অনেকক্ষণ উড়ে বেড়ায়। ফলে ধলাদূষণও অনেক বৃদ্ধি পায়। অন্যান্য উৎস থেকে ধোঁয়া ও ধুলা একত্র হয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি করে এবং এই দূষিত বায়ু দীর্ঘক্ষণ একই জায়গায় অবস্থান করে। ফলে অন্যান্য উৎস ধুলাদূষণ একত্রিত হওয়ার ফলে বাতাস দূষণের মাত্রা অত্যাধিক বৃদ্ধি পায়।

সরকার ধুলাদূষণ রোধে অনেক পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও তা বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে পর্যাপ্ত নয় উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, সম্প্রতি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে বায়ুদূষণের কারণে এত ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে যে, সে দেশের সরকার স্কুল-কলেজ বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। ঢাকার পরিস্থিতি সেদিকে ধাবিত হচ্ছে বলে আমরা আশঙ্কা প্রকাশ করছি। ফলে বায়ুদূষণের হাত থেকে বাঁচার জন্য সরকারকে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, সাধারণ সম্পাদক প্রকৌ. মো. আবদুস সোবহান, সম্পাদক এম এ ওয়াহেদ, নাসফ-এর সহসভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা কে এম সিদ্দিক আলী, নাসফ-এর সাধারণ সম্পাদক মো. তৈয়ব আলী, আইন বিষয়ক সম্পাদক মো. ওমর ফারুক, সদস্য ক্যামেলিয়া চৌধুরী, পুরান ঢাকা নাগরিক উদ্যোগের সভাপতি নাজিমউদ্দীন, বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলনের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাসিবুল হক পুনম, পরিষ্কার ঢাকার সমন্বয়ক মো. শাজাহান প্রমুখ।