ঢাকা ০৩:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

পুরান ঢাকার বাখরখানি

আরফিন সানজু
  • আপডেট : ০৬:২৯:৪৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২২
  • / 163

বাঙালির প্রায় আড়াইশ’ বছরের প্রিয় খাবার বাখরখানি। ঐতিহ্যবাহী এ খাবারটি ঢাকার আদি বাসিন্দাদের কাছে জনপ্রিয়। বিশেষ করে সকালের নাশতা হিসেবেই এর কদর বেশি। এটি এখন শুধু ঢাকার আদি বাসিন্দাদের কাছে নয় এ বাখরখানি মফস্বল শহরগুলোও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

ঢাকার অনেক কিছুই আজ হারিয়ে গেছে। তারই মধ্যে বাখরখানি অন্যতম। অনেক খাবারের মধ্যেও বাখরখানি যেন এক আলাদা বৈশিষ্ট্য নিয়ে টিকে আছে। স্বাদের কথা বিচার করলে এর তেমন কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী খুঁজে পাওয়া যাবে না।

বাখরখানির আদি কথা সম্পর্কে জানা যায়, বাখরখানি নামটার সঙ্গে জড়িয়ে আছে ঢাকার ইতিহাস। আঠারো শতকের কথা। ঢাকার নায়েব নাজিম মীর লুতফুল্লাহ্ ওরফে দ্বিতীয় মুর্শিদ কুলি খাঁর জামাতা ছিলেন মির্জা আগা বাকের। নবাব সিরাজদ্দৌলার অনুরক্ত বাকের ছিলেন বুজর্গ উম্মেদপুর ও সালিমাবাদ পরগনা দুটির জমিদার।

আগা সাদিক ছিলেন তার পুত্র। জনশ্রুতি অনুযায়ী, আগা বাকের ও তার স্ত্রী খানি বেগমের নামানুসারেই মচমচে এ রুটির নাম রাখা হয় ‘বাখরখানি’, যা থেকে পরে লোকমুখে এর প্রচলিত নাম হয়ে যায় বাখরখানি। নবাব পরিবারের বাবুর্চিরাই বাখরখানির আবিষ্কারক।স্যার সলিমুল্লাহ্ থেকে শুরু করে নবার ও নবাব পরিবারের সদস্য ছিলেন বাখরখ বাখরখানি না হলে চলত না তাদের।

প্রথম নবাব পরিবারের প্রিয় খাবার হিসেবে থাকলেও পরে এর বিস্তৃতি ঘটে এলাকাবাসীর মধ্যে। সেই থেকে আজও আছে বাখরখানির চাহিদা। তবে এর চল আগের তুলনায় অনেক কমে এসেছে। কমে গেছে সকালের নাশতায় মাংস, চা কিংবা মিষ্টির সঙ্গে বাখরখানি রুটির প্রচলন। কমে গেছে এর তৈরি ও বিক্রি। ভাঙা দোকান আর পুরনো চুলায় তবু এখনও তৈরি হয় বাখরখানি।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

পুরান ঢাকার বাখরখানি

আপডেট : ০৬:২৯:৪৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২২

বাঙালির প্রায় আড়াইশ’ বছরের প্রিয় খাবার বাখরখানি। ঐতিহ্যবাহী এ খাবারটি ঢাকার আদি বাসিন্দাদের কাছে জনপ্রিয়। বিশেষ করে সকালের নাশতা হিসেবেই এর কদর বেশি। এটি এখন শুধু ঢাকার আদি বাসিন্দাদের কাছে নয় এ বাখরখানি মফস্বল শহরগুলোও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

ঢাকার অনেক কিছুই আজ হারিয়ে গেছে। তারই মধ্যে বাখরখানি অন্যতম। অনেক খাবারের মধ্যেও বাখরখানি যেন এক আলাদা বৈশিষ্ট্য নিয়ে টিকে আছে। স্বাদের কথা বিচার করলে এর তেমন কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী খুঁজে পাওয়া যাবে না।

বাখরখানির আদি কথা সম্পর্কে জানা যায়, বাখরখানি নামটার সঙ্গে জড়িয়ে আছে ঢাকার ইতিহাস। আঠারো শতকের কথা। ঢাকার নায়েব নাজিম মীর লুতফুল্লাহ্ ওরফে দ্বিতীয় মুর্শিদ কুলি খাঁর জামাতা ছিলেন মির্জা আগা বাকের। নবাব সিরাজদ্দৌলার অনুরক্ত বাকের ছিলেন বুজর্গ উম্মেদপুর ও সালিমাবাদ পরগনা দুটির জমিদার।

আগা সাদিক ছিলেন তার পুত্র। জনশ্রুতি অনুযায়ী, আগা বাকের ও তার স্ত্রী খানি বেগমের নামানুসারেই মচমচে এ রুটির নাম রাখা হয় ‘বাখরখানি’, যা থেকে পরে লোকমুখে এর প্রচলিত নাম হয়ে যায় বাখরখানি। নবাব পরিবারের বাবুর্চিরাই বাখরখানির আবিষ্কারক।স্যার সলিমুল্লাহ্ থেকে শুরু করে নবার ও নবাব পরিবারের সদস্য ছিলেন বাখরখ বাখরখানি না হলে চলত না তাদের।

প্রথম নবাব পরিবারের প্রিয় খাবার হিসেবে থাকলেও পরে এর বিস্তৃতি ঘটে এলাকাবাসীর মধ্যে। সেই থেকে আজও আছে বাখরখানির চাহিদা। তবে এর চল আগের তুলনায় অনেক কমে এসেছে। কমে গেছে সকালের নাশতায় মাংস, চা কিংবা মিষ্টির সঙ্গে বাখরখানি রুটির প্রচলন। কমে গেছে এর তৈরি ও বিক্রি। ভাঙা দোকান আর পুরনো চুলায় তবু এখনও তৈরি হয় বাখরখানি।