ভিসা পাননি ৪৪ হাজার হজযাত্রী, ফ্লাইট বিড়ম্বনার শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : ০৬:২৯:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ জুন ২০২৩
  • / 170
সৌদি আরবের দেয়া বিভিন্ন শর্ত পূরণ করতে না পারায় ভিসা পাননি ৪৪ হাজার ২৬৮ হজযাত্রী। ফলে শেষ সময়ে ফ্লাইট নিয়ে বিড়ম্বনার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। রোববার হজ এজেন্সিদের সংগঠন হাব ও ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।

হজ এজেন্সির জন্য দেয়া শর্ত পূরণ হলেই ভিসা দেয় সৌদি আরব। শর্তগুলোর মধ্যে বাড়ি ভাড়া, ফ্লাইটের টিকিট, প্রবেশ ও বের হওয়ার রুট এবং আসা-যাওয়ার তারিখ নিশ্চিত করা অন্যতম। কিন্তু অনেক এজেন্সি এসব শর্ত পূরণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় হজযাত্রীদের ভিসা মিলছে না। ফলে প্রতিদিনই বিমানের ফ্লাইট ফাঁকা যাচ্ছে। এতে শেষ সময়ে হাজীদের সৌদি আরব যেতে ফ্লাইট বিপর্যয় হতে পারে এমন শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

গত ৩১ মে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, আগামী তিন দিনের মধ্যে বেসরকারি এজেন্সির মাধ্যমে যারা হজে যাবেন তাদের ভিসা প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। সৌদি আরবে অতি দ্রুত ভিসা লজমেন্ট প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যাবে। এই সময়ে মধ্যে যারা ভিসা করতে ব্যর্থ হবেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি দিয়েছে মন্ত্রণালয়। কিন্তু সৌদি আরবের ভিসা পাওয়ার জন্য যেসব শর্ত পূরণ করতে হয়, অনেক এজেন্সি সেসব শর্ত পূরণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় হজযাত্রীদের ভিসা মিলছে না। ফলে প্রতিদিনই বিমানের ফ্লাইট ফাঁকা যাচ্ছে। এতে শেষ সময়ে হাজীদের সৌদি আরব যেতে ফ্লাইট বিপর্যয় হতে পারে এমন সংখ্যা প্রকাশ করেছে সংশ্লিষ্টরা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, কিছু হজ এজেন্সি মালিক এখনো সৌদি আরবের শর্তগুলো পূরণ করতে না পারায় ভিসা পাননি এসব হজযাত্রী।

এদিকে সৌদি সরকারের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী তওফিক আল-রাবিয়াহ দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাংলাদেশি হজযাত্রীদের ভিসা সম্পন্ন করার জন্য ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খানকে বার্তা পাঠিয়েছেন। এরপর হজ এজেন্সিগুলোকে দ্রুত হাজীদের ভিসা করানোর জন্য তাগিদ দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

ধর্ম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হজযাত্রীদের ভিসা ধীরগতির কারণে হজ ফ্লাইট নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। প্রায়ই খালি সিট নিয়ে ছাড়তে হচ্ছে বিমানের ফ্লাইট। হজযাত্রী সংকটে এরই মধ্যে বাতিল হয়েছে বেশ কয়েকটি ফ্লাইট। ফলে শেষ মুহূর্তে হজযাত্রী পরিবহন নিয়ে চাপ বাড়বে। এতে শেষ সময়ে অনিশ্চয়তার মুখে পড়তে পারেন বেশ কিছু হজযাত্রী। এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, এটা হজ এজেন্সিগুলোর ব্যর্থতা। তাদের আরও সচেতন হতে হবে। দ্রুত শর্ত পূরণে কাজ করতে হবে।

হাবের সভাপতি শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেন, শেষ সময়ে ভিসা জটিলতা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ভিসার জন্য সৌদির দেয়া প্রতিটি শর্তই পূরণ করতে হয় এজেন্সি মালিকদের। একটিও পূরণ করতে ব্যর্থ হলে ভিসা হবে না। অনেক এজেন্সি শর্ত পূরণ করতে পারেনি বলে ভিসা দিচ্ছে না। তবে হাবের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখা হচ্ছে।

চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এবার হজের খরচ বেশি হওয়ায় প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটা খালি রেখেই হজের সার্বিক প্রস্তুতি শেষ করেছে সরকার।

এরপর গত ২১ মে থেকে হজযাত্রীদের প্রথম ফ্লাইট শুরু হয়। রোববার পর্যন্ত ৫০ হাজার ১৪ জন হজযাত্রী সৌদি পৌঁছেছেন। এরমধ্যে চারজন মারা গেছেন।

হজ পালন শেষে দেশে ফেরার ফ্লাইট শুরু হবে আগামী ২ জুলাই। ফিরতি ফ্লাইট শেষ হবে ২ আগস্ট।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ভিসা পাননি ৪৪ হাজার হজযাত্রী, ফ্লাইট বিড়ম্বনার শঙ্কা

আপডেট : ০৬:২৯:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ জুন ২০২৩
সৌদি আরবের দেয়া বিভিন্ন শর্ত পূরণ করতে না পারায় ভিসা পাননি ৪৪ হাজার ২৬৮ হজযাত্রী। ফলে শেষ সময়ে ফ্লাইট নিয়ে বিড়ম্বনার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। রোববার হজ এজেন্সিদের সংগঠন হাব ও ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।

হজ এজেন্সির জন্য দেয়া শর্ত পূরণ হলেই ভিসা দেয় সৌদি আরব। শর্তগুলোর মধ্যে বাড়ি ভাড়া, ফ্লাইটের টিকিট, প্রবেশ ও বের হওয়ার রুট এবং আসা-যাওয়ার তারিখ নিশ্চিত করা অন্যতম। কিন্তু অনেক এজেন্সি এসব শর্ত পূরণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় হজযাত্রীদের ভিসা মিলছে না। ফলে প্রতিদিনই বিমানের ফ্লাইট ফাঁকা যাচ্ছে। এতে শেষ সময়ে হাজীদের সৌদি আরব যেতে ফ্লাইট বিপর্যয় হতে পারে এমন শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

গত ৩১ মে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, আগামী তিন দিনের মধ্যে বেসরকারি এজেন্সির মাধ্যমে যারা হজে যাবেন তাদের ভিসা প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। সৌদি আরবে অতি দ্রুত ভিসা লজমেন্ট প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যাবে। এই সময়ে মধ্যে যারা ভিসা করতে ব্যর্থ হবেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি দিয়েছে মন্ত্রণালয়। কিন্তু সৌদি আরবের ভিসা পাওয়ার জন্য যেসব শর্ত পূরণ করতে হয়, অনেক এজেন্সি সেসব শর্ত পূরণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় হজযাত্রীদের ভিসা মিলছে না। ফলে প্রতিদিনই বিমানের ফ্লাইট ফাঁকা যাচ্ছে। এতে শেষ সময়ে হাজীদের সৌদি আরব যেতে ফ্লাইট বিপর্যয় হতে পারে এমন সংখ্যা প্রকাশ করেছে সংশ্লিষ্টরা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, কিছু হজ এজেন্সি মালিক এখনো সৌদি আরবের শর্তগুলো পূরণ করতে না পারায় ভিসা পাননি এসব হজযাত্রী।

এদিকে সৌদি সরকারের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী তওফিক আল-রাবিয়াহ দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাংলাদেশি হজযাত্রীদের ভিসা সম্পন্ন করার জন্য ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খানকে বার্তা পাঠিয়েছেন। এরপর হজ এজেন্সিগুলোকে দ্রুত হাজীদের ভিসা করানোর জন্য তাগিদ দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

ধর্ম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হজযাত্রীদের ভিসা ধীরগতির কারণে হজ ফ্লাইট নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। প্রায়ই খালি সিট নিয়ে ছাড়তে হচ্ছে বিমানের ফ্লাইট। হজযাত্রী সংকটে এরই মধ্যে বাতিল হয়েছে বেশ কয়েকটি ফ্লাইট। ফলে শেষ মুহূর্তে হজযাত্রী পরিবহন নিয়ে চাপ বাড়বে। এতে শেষ সময়ে অনিশ্চয়তার মুখে পড়তে পারেন বেশ কিছু হজযাত্রী। এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, এটা হজ এজেন্সিগুলোর ব্যর্থতা। তাদের আরও সচেতন হতে হবে। দ্রুত শর্ত পূরণে কাজ করতে হবে।

হাবের সভাপতি শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেন, শেষ সময়ে ভিসা জটিলতা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ভিসার জন্য সৌদির দেয়া প্রতিটি শর্তই পূরণ করতে হয় এজেন্সি মালিকদের। একটিও পূরণ করতে ব্যর্থ হলে ভিসা হবে না। অনেক এজেন্সি শর্ত পূরণ করতে পারেনি বলে ভিসা দিচ্ছে না। তবে হাবের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখা হচ্ছে।

চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এবার হজের খরচ বেশি হওয়ায় প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটা খালি রেখেই হজের সার্বিক প্রস্তুতি শেষ করেছে সরকার।

এরপর গত ২১ মে থেকে হজযাত্রীদের প্রথম ফ্লাইট শুরু হয়। রোববার পর্যন্ত ৫০ হাজার ১৪ জন হজযাত্রী সৌদি পৌঁছেছেন। এরমধ্যে চারজন মারা গেছেন।

হজ পালন শেষে দেশে ফেরার ফ্লাইট শুরু হবে আগামী ২ জুলাই। ফিরতি ফ্লাইট শেষ হবে ২ আগস্ট।