ফের দস্যুতা করলে সব সহযোগিতা বন্ধ: র‌্যাব ডিজি

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ১২:১৯:৪২ অপরাহ্ন, সোমাবার, ১ নভেম্বর ২০২১
  • / 143

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেছেন, দস্যু জীবন থেকে আত্মসমর্পণকারীদের কেউ যদি বিপথে যেতে চান, র‌্যা বের সহযোগিতার হাত তাদের থেকে সংকুচিত হয়ে আসবে এবং আইনের হাত সম্প্রসারিত হবে।

তিনি বলেন, আমাদের সঙ্গে না থেকে যারা বিপথে যেতে চাইবে, তাদের বিরুদ্ধে থাকা কোনো মামলার নিষ্পত্তি করা হবে না। উল্টো তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সোমবার (১ নভেম্বর) দুপুরে বাগেরহাটের রামপালে দস্যুমুক্ত সুন্দরবন দিবসের তৃতীয় বর্ষপূর্তি ও আত্মসমর্পণ করা ব্যক্তিদের পুনর্বাসন অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সুন্দরবন দিবসের তৃতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আত্মসমর্পণকারী জলদস্যুদের মাঝে ১০২টি ঘর, ৯০টি মুদি দোকান (মালামালসহ), ১২টি জাল ও মাছ ধরার নৌকা, ৮টি ইঞ্জিনচালিত নৌকা এবং ২২৮টি গবাদিপশু (বাছুরসহ) উপহার দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
র‌্যাব ডিজি বলেন, দস্যুতা ছেড়ে যারা ভালো পথে এসেছেন, লজ্জা ও কলঙ্কিত পথ ছেড়ে যারা ভালো হয়েছেন, তাদের জন্য র‌্যা ব সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। ঈদ ও বিভিন্ন উৎসবসহ করোনাকালেও তাদের সহায়তা করা হয়েছে। ঘর, দোকান, মাছ ধরার নৌকা, জাল, গবাদিপশু উপহার দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, আত্মসমর্পণকারীদের বিরুদ্ধে যেসব মামলা রয়েছে সে বিষয়ে এখানকার বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ সুপারদের সঙ্গে কিছুদিন আগেও এসে আলোচনা করেছি।

‘হত্যা ও ধর্ষণ এই দুটি মামলা ছাড়া অন্য সব মামলা প্রত্যাহারের জন্য আলোচনা করেছি। পিপিদের নিয়েও বসা হয়েছে। এখান থেকে বেশকিছু মামলা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে গিয়েছে। যেসব মামলা আমরা নিতে পারিনি, সেগুলো জেলা কমিটির কাছে গিয়েছে। সেখান থেকে বিভাগীয় কমিশনার কার‌্যা লয়ে, সেখান থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে যাবে। এছাড়া অন্যান্য মামলাগুলো যাতে দ্রুতগতিতে নিষ্পত্তি হয় সেজন্য আমরা কাজ করছি।’

আত্মসমর্পণকারীদের মনিটরিং করা হচ্ছে জানিয়ে র‌্যাব মহাপরিচালক বলেন, যদি তাদের আচরণ খারাপ হয় তবে আমরা আইনি ব্যাবস্থা নেবো। আমরা বিশ্বাস করি, এখনও আপনারা আমাদের সঙ্গে আছেন। আর যদি আপনারা আমাদের সঙ্গে না থাকেন, তবে তাদের কোনো মামলা প্রত্যাহার হবে না।

তিনি আরও বলেন, আগে আপনারা যে দস্যুতার পথে ছিলেন, সেটা বুক ফুলিয়ে চলা বা বলার বিষয় নয়। আপনার স্ত্রী সন্তান গর্ব করে পরিচয় দিতে পারে না। যারা দস্যুপনা ছেড়ে ভালো পথে এসেছেন, আমরা আপনাদের সঙ্গে রাখতে চাই।

তিনি বলেন, সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত করার পথটি খুব সহজ ছিলো না। অভিযানে র‌্যা বের একজন সদস্য নিহত হয়েছেন, অনেক সদস্য আহত হয়েছেন। অনেকে গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন। আবার আহত হওয়ার কারণে অনেক সদস্য চাকরিচ্যুত হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী যখনই ক্ষমতা গ্রহণ করেন তখনই দেখা যায় পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি চুক্তি হয়। দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে যে তখন শান্তি বিরাজ করে। দেশে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ, অগ্নি সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় সুন্দরবনের দস্যু মুক্ত করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) কর্নেল কে এম আজাদ।

র‌্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) অতিরিক্ত আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন, বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ প্রমুখ।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ফের দস্যুতা করলে সব সহযোগিতা বন্ধ: র‌্যাব ডিজি

আপডেট : ১২:১৯:৪২ অপরাহ্ন, সোমাবার, ১ নভেম্বর ২০২১

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেছেন, দস্যু জীবন থেকে আত্মসমর্পণকারীদের কেউ যদি বিপথে যেতে চান, র‌্যা বের সহযোগিতার হাত তাদের থেকে সংকুচিত হয়ে আসবে এবং আইনের হাত সম্প্রসারিত হবে।

তিনি বলেন, আমাদের সঙ্গে না থেকে যারা বিপথে যেতে চাইবে, তাদের বিরুদ্ধে থাকা কোনো মামলার নিষ্পত্তি করা হবে না। উল্টো তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সোমবার (১ নভেম্বর) দুপুরে বাগেরহাটের রামপালে দস্যুমুক্ত সুন্দরবন দিবসের তৃতীয় বর্ষপূর্তি ও আত্মসমর্পণ করা ব্যক্তিদের পুনর্বাসন অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সুন্দরবন দিবসের তৃতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আত্মসমর্পণকারী জলদস্যুদের মাঝে ১০২টি ঘর, ৯০টি মুদি দোকান (মালামালসহ), ১২টি জাল ও মাছ ধরার নৌকা, ৮টি ইঞ্জিনচালিত নৌকা এবং ২২৮টি গবাদিপশু (বাছুরসহ) উপহার দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
র‌্যাব ডিজি বলেন, দস্যুতা ছেড়ে যারা ভালো পথে এসেছেন, লজ্জা ও কলঙ্কিত পথ ছেড়ে যারা ভালো হয়েছেন, তাদের জন্য র‌্যা ব সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। ঈদ ও বিভিন্ন উৎসবসহ করোনাকালেও তাদের সহায়তা করা হয়েছে। ঘর, দোকান, মাছ ধরার নৌকা, জাল, গবাদিপশু উপহার দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, আত্মসমর্পণকারীদের বিরুদ্ধে যেসব মামলা রয়েছে সে বিষয়ে এখানকার বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ সুপারদের সঙ্গে কিছুদিন আগেও এসে আলোচনা করেছি।

‘হত্যা ও ধর্ষণ এই দুটি মামলা ছাড়া অন্য সব মামলা প্রত্যাহারের জন্য আলোচনা করেছি। পিপিদের নিয়েও বসা হয়েছে। এখান থেকে বেশকিছু মামলা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে গিয়েছে। যেসব মামলা আমরা নিতে পারিনি, সেগুলো জেলা কমিটির কাছে গিয়েছে। সেখান থেকে বিভাগীয় কমিশনার কার‌্যা লয়ে, সেখান থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে যাবে। এছাড়া অন্যান্য মামলাগুলো যাতে দ্রুতগতিতে নিষ্পত্তি হয় সেজন্য আমরা কাজ করছি।’

আত্মসমর্পণকারীদের মনিটরিং করা হচ্ছে জানিয়ে র‌্যাব মহাপরিচালক বলেন, যদি তাদের আচরণ খারাপ হয় তবে আমরা আইনি ব্যাবস্থা নেবো। আমরা বিশ্বাস করি, এখনও আপনারা আমাদের সঙ্গে আছেন। আর যদি আপনারা আমাদের সঙ্গে না থাকেন, তবে তাদের কোনো মামলা প্রত্যাহার হবে না।

তিনি আরও বলেন, আগে আপনারা যে দস্যুতার পথে ছিলেন, সেটা বুক ফুলিয়ে চলা বা বলার বিষয় নয়। আপনার স্ত্রী সন্তান গর্ব করে পরিচয় দিতে পারে না। যারা দস্যুপনা ছেড়ে ভালো পথে এসেছেন, আমরা আপনাদের সঙ্গে রাখতে চাই।

তিনি বলেন, সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত করার পথটি খুব সহজ ছিলো না। অভিযানে র‌্যা বের একজন সদস্য নিহত হয়েছেন, অনেক সদস্য আহত হয়েছেন। অনেকে গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন। আবার আহত হওয়ার কারণে অনেক সদস্য চাকরিচ্যুত হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী যখনই ক্ষমতা গ্রহণ করেন তখনই দেখা যায় পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি চুক্তি হয়। দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে যে তখন শান্তি বিরাজ করে। দেশে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ, অগ্নি সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় সুন্দরবনের দস্যু মুক্ত করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) কর্নেল কে এম আজাদ।

র‌্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) অতিরিক্ত আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন, বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ প্রমুখ।