ঢাকা ০৩:০৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাহারা দিয়ে সহিংসতা ঠেকানো যায় না: সিইসি

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ০১:২৩:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ নভেম্বর ২০২১
  • / 116
পাহারা দিয়ে নির্বাচনী সহিংসতা ঠেকানো সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা। বুধবার বিকালে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।

ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচন ঘিরে বিভিন্ন এলাকায় উত্তেজনা, সংঘর্ষ ও সহিংসতার ঘটনার প্রেক্ষাপটে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

নরসিংদীসহ কয়েকটি ঘটনার সংঘাতের প্রসঙ্গ টেনে নূরুল হুদা বলেন, এ জাতীয় ঘটনা এভাবে পাহারা দিয়ে ঠেকানো যায় না, বাস্তবতা হলো এটা। ঘরে ঘরে মহল্লায় মহল্লায় পুলিশ দিয়ে পাহারা দিয়ে এ জাতীয় অপ্রীতিকর ঘটনা থামানো যায় না। এর একমাত্র উপায় হলো নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সহনশীলতা।

চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রতীকের এ নির্বাচনে সহিংসতার ঘটনায় ‘অস্বস্তি’ ও ‘উদ্বেগ’ প্রকাশ করে এর আগে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার হুঁশিয়ারিও দেয় ইসি।

এ ধাপে বৃহস্পতিবার ৮৩৫ ইউনিয়ন পরিষদে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোট নেয়া হবে। ইতোমধ্যে দ্বিতীয় ধাপের ভোটের প্রস্তুতি গুছিয়ে আনার কথা জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

বুধবার সিইসি বলেন, সহিংসতার দায় এককভাবে কাউকে দেয়া যাবে না। নির্বাচনী সহিংসতা থামাতে দরকার সহনশীলতা। এ জন্য রাজনৈতিক দল প্রার্থী সমর্থক সবার সহযোগিতা দরকার।

বৃহস্পতিবারের নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর হবে বলে আশা প্রকাশ করেন সিইসি। তিনি জানান, নির্বাচনী সহিংসতা দমন করতে কঠোর পদক্ষেপ নিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

নির্বাচন ভবনে ব্রিফিংয়ের সময় নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম শাহাদাত হোসেন চৌধুরী ও কবিতা খানম উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে ৪ নভেম্বর ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নির্বাচন-পূর্ব সহিংস ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রয়োজনে প্রার্থিতা বাতিলের মত পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন সিইসি।

সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরিতে রিটার্নিং অফিসার, প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যদের নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখারও নির্দেশনা দেয় ইসি।

ইউপি ভোট নিয়ে গত বৃহস্পতিবারও নরসিংদীতে দুই প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে ৩ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।

ভোটকেন্দ্রীক সহিংসতা বাড়ায় উদ্বেগ জানিয়ে ৩ নভেম্বরও সিইসি বলেছিলেন, সংঘাত এড়াতে রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যকর উদ্যোগ না দেখে তিনি ‘বিব্রত’।

দ্বিতীয় ধাপের ভোটে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন তিন হাজার ৩১০ জন। সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে নয় হাজার ১৬১ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২৮ হাজার ৭৪৭ জন।

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান পদে ৮১ জন, সংরক্ষিত সদস্য পদে ৭৬ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ২০৩ জন নির্বাচিত হয়েছেন।

২০টি ইউনিয়ন পরিষদে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) এবং বাকিগুলোতে প্রচলিত ব্যালট পেপারে ভোট হবে।

অক্টোবরের শেষ থেকে নভেম্বরের শুরুতে নরসিংদীর আলোকবালী এবং পাড়াতলী ইউনিয়নে এক সপ্তাহের ব্যবধানে সহিংসতায় পাঁচজনের প্রাণ যায়। ২৫ অক্টোবর বাঁশগাড়ী ইউনিয়নে দুই প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে ২০ জন আহত হন।

এছাড়া গত ৬ নভেম্বর কক্সবাজার সদরের ঝিলংজায় ‘দুর্বৃত্তের’ হামলায় জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম সিকদার ও তার ভাই ইউপি নির্বাচনের সদস্য প্রার্থী কুদরত উল্লাহ সিকদারসহ তিনজন গুলিবিদ্ধ হন।

পাবনার সুজানগরের ভায়না ইউনিয়নে গত ৯ নভেম্বর সংঘর্ষে ১০ জন আহত হন, ভাঙচুর করা হয় ১১টি মোটরসাইকেল।

এছাড়া ২৯ অক্টোবর একই উপজেলার হাটখালী ইউনিয়নে সংঘর্ষ, গোলাগুলি ও ভাঙচুরের ঘটনায় ১৫ জন আহত হন।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

পাহারা দিয়ে সহিংসতা ঠেকানো যায় না: সিইসি

আপডেট : ০১:২৩:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ নভেম্বর ২০২১
পাহারা দিয়ে নির্বাচনী সহিংসতা ঠেকানো সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা। বুধবার বিকালে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।

ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচন ঘিরে বিভিন্ন এলাকায় উত্তেজনা, সংঘর্ষ ও সহিংসতার ঘটনার প্রেক্ষাপটে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

নরসিংদীসহ কয়েকটি ঘটনার সংঘাতের প্রসঙ্গ টেনে নূরুল হুদা বলেন, এ জাতীয় ঘটনা এভাবে পাহারা দিয়ে ঠেকানো যায় না, বাস্তবতা হলো এটা। ঘরে ঘরে মহল্লায় মহল্লায় পুলিশ দিয়ে পাহারা দিয়ে এ জাতীয় অপ্রীতিকর ঘটনা থামানো যায় না। এর একমাত্র উপায় হলো নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সহনশীলতা।

চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রতীকের এ নির্বাচনে সহিংসতার ঘটনায় ‘অস্বস্তি’ ও ‘উদ্বেগ’ প্রকাশ করে এর আগে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার হুঁশিয়ারিও দেয় ইসি।

এ ধাপে বৃহস্পতিবার ৮৩৫ ইউনিয়ন পরিষদে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোট নেয়া হবে। ইতোমধ্যে দ্বিতীয় ধাপের ভোটের প্রস্তুতি গুছিয়ে আনার কথা জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

বুধবার সিইসি বলেন, সহিংসতার দায় এককভাবে কাউকে দেয়া যাবে না। নির্বাচনী সহিংসতা থামাতে দরকার সহনশীলতা। এ জন্য রাজনৈতিক দল প্রার্থী সমর্থক সবার সহযোগিতা দরকার।

বৃহস্পতিবারের নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর হবে বলে আশা প্রকাশ করেন সিইসি। তিনি জানান, নির্বাচনী সহিংসতা দমন করতে কঠোর পদক্ষেপ নিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

নির্বাচন ভবনে ব্রিফিংয়ের সময় নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম শাহাদাত হোসেন চৌধুরী ও কবিতা খানম উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে ৪ নভেম্বর ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নির্বাচন-পূর্ব সহিংস ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রয়োজনে প্রার্থিতা বাতিলের মত পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন সিইসি।

সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরিতে রিটার্নিং অফিসার, প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যদের নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখারও নির্দেশনা দেয় ইসি।

ইউপি ভোট নিয়ে গত বৃহস্পতিবারও নরসিংদীতে দুই প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে ৩ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।

ভোটকেন্দ্রীক সহিংসতা বাড়ায় উদ্বেগ জানিয়ে ৩ নভেম্বরও সিইসি বলেছিলেন, সংঘাত এড়াতে রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যকর উদ্যোগ না দেখে তিনি ‘বিব্রত’।

দ্বিতীয় ধাপের ভোটে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন তিন হাজার ৩১০ জন। সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে নয় হাজার ১৬১ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২৮ হাজার ৭৪৭ জন।

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান পদে ৮১ জন, সংরক্ষিত সদস্য পদে ৭৬ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ২০৩ জন নির্বাচিত হয়েছেন।

২০টি ইউনিয়ন পরিষদে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) এবং বাকিগুলোতে প্রচলিত ব্যালট পেপারে ভোট হবে।

অক্টোবরের শেষ থেকে নভেম্বরের শুরুতে নরসিংদীর আলোকবালী এবং পাড়াতলী ইউনিয়নে এক সপ্তাহের ব্যবধানে সহিংসতায় পাঁচজনের প্রাণ যায়। ২৫ অক্টোবর বাঁশগাড়ী ইউনিয়নে দুই প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে ২০ জন আহত হন।

এছাড়া গত ৬ নভেম্বর কক্সবাজার সদরের ঝিলংজায় ‘দুর্বৃত্তের’ হামলায় জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম সিকদার ও তার ভাই ইউপি নির্বাচনের সদস্য প্রার্থী কুদরত উল্লাহ সিকদারসহ তিনজন গুলিবিদ্ধ হন।

পাবনার সুজানগরের ভায়না ইউনিয়নে গত ৯ নভেম্বর সংঘর্ষে ১০ জন আহত হন, ভাঙচুর করা হয় ১১টি মোটরসাইকেল।

এছাড়া ২৯ অক্টোবর একই উপজেলার হাটখালী ইউনিয়নে সংঘর্ষ, গোলাগুলি ও ভাঙচুরের ঘটনায় ১৫ জন আহত হন।