ঢাকা ০৬:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের ১১ দফা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ১২:৪৮:৪৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ ডিসেম্বর ২০২১
  • / 93
নিরাপদ সড়ক চেয়ে ১১ দফা দাবি ও প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন শিক্ষার্থীরা। দ্রুত এই দাবি বাস্তবায়ন না হলে ছাত্রসমাজ কোনও অন্যায় সহ্য করবে না বলেও হুঁশিয়ার করেছেন শিক্ষার্থীরা।

বুধবার ১২টার পর রাজধানীর রামপুরায় শিক্ষার্থীরা এই ১১ দফা দাবি, প্রস্তাবনা ও সড়ক নীতিমালা উত্থাপন করেন। শিক্ষার্থীদের পক্ষে সোহাগী সায়মা নামে একজন এই দাবি উত্থাপন করেন।

শিক্ষার্থীদের ১১ দফা দাবি গুলো হচ্ছে……..

১. সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত নাঈম হাসান ও মাইনুদ্দীন ইসলাম দুর্জয়ের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। গুলিস্তান ও রামপুরায় পথচারী পারাপারের জন্য ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করতে হবে।

২. সারাদেশের গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের হাফভাড়া নিশ্চিত করতে সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে। এ জন্য দিন রাত বা ছুটির দিনসহ কোনও শর্ত জুড়ে দেয়া যাবে না। বর্ধিত বাসভাড়া প্রত্যাহার করতে হবে। সব রুটে বিআরটিসি’র বাস বাড়াতে হবে।

৩. সব ধরনের পরিবহনে নারীদের অবাধ যাত্রা নিশ্চিত করতে হবে। তাদের সঙ্গে সৌজন্য ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

৪. লাইসেন্সবিহীন চালককে নিয়োগদানকারী প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। গাড়ির নিবন্ধন, ফিটনেস কার্যক্রম ও লাইসেন্স দানে বিআরটিএ’র দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকার ব্যবস্থা নিতে হবে।

৫. সব সড়কে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করতে হবে। ট্রাফিক পুলিশের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে। ট্রাফিক পুলিশের ঘুষ দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে।

৬. সব রুটে প্রতিযোগিতা বন্ধে এক গ্রুপ বা কোম্পানির মাধ্যমে সব বাস চালানোর ব্যবস্থা করতে হবে। বাস অনুযায়ী মালিকদের মধ্যে লাভের টাকা বন্টনের নিয়ম করতে হবে।

৭. শ্রমিকের নিয়োগপত্রে পরিচয় নিশ্চিত করতে হবে। বাস চালক ও হেলপারদের চুক্তির পরিবর্তে সব গণপরিবহন টিকিট পদ্ধতিতে চালানোর ব্যবস্থা করতে হবে। শ্রমিকদের জন্য বিশ্রামাগার ও টয়লেটের ব্যবস্থা করতে হবে।

৮. গাড়ি ও চালকের কর্মঘণ্টা এক নাগাড়ে ছয় ঘণ্টার বেশি হতে পারবে না। বাসে দুজন চালক ও দুজন সহকারী থাকতে হবে। পর্যাপ্ত বাস টার্মিনাল তৈরি করতে হবে। শ্রমিকদের জন্য যথাযথ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।

১০. যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকদের মতামত নিয়ে সড়ক পরিবহন আইন সংস্কার করতে হবে এবং এর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। ট্রাক ও ময়লার গাড়ি চলাচলের জন্য রাত ১২টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত নির্ধারণ করতে হবে।

১১. মাদক প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। নিয়মিত ডোপ টেস্ট ও কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।

এর আগে নিরাপদ সড়কের দাবি ও মাইনুদ্দিন হত্যার প্রতিবাদে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো রাজধানীর রামপুরা ব্রিজের ওপর অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা।

বুধবার বেলা ১১টার দিকে রামপুরা ব্রিজের ওপর অবস্থান নেন আশপাশের বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন গণপরিবহন থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে তা আটকে দেন।

এছাড়া এইকই দাবিতে মতিঝিল শাপলা চত্বরে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। এতে ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।দুপুর ১টায় মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ উচ্চ বিদ্যালয় এবং মতিঝিল সেন্ট্রালের শিক্ষার্থীরা শাপলা চত্বরে অবস্থান নিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেন।

এ সময় ছাত্ররা জানান, দা‌বি একটাই, নিরাপদ সড়ক চাই। এছাড়া ‘জেগেছে জেগেছে ছাত্র সমাজ জেগেছে’,‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘আমার ভাইয়ের কিছু হলে জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে’এমন বি‌ভিন্ন স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের ১১ দফা

আপডেট : ১২:৪৮:৪৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ ডিসেম্বর ২০২১
নিরাপদ সড়ক চেয়ে ১১ দফা দাবি ও প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন শিক্ষার্থীরা। দ্রুত এই দাবি বাস্তবায়ন না হলে ছাত্রসমাজ কোনও অন্যায় সহ্য করবে না বলেও হুঁশিয়ার করেছেন শিক্ষার্থীরা।

বুধবার ১২টার পর রাজধানীর রামপুরায় শিক্ষার্থীরা এই ১১ দফা দাবি, প্রস্তাবনা ও সড়ক নীতিমালা উত্থাপন করেন। শিক্ষার্থীদের পক্ষে সোহাগী সায়মা নামে একজন এই দাবি উত্থাপন করেন।

শিক্ষার্থীদের ১১ দফা দাবি গুলো হচ্ছে……..

১. সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত নাঈম হাসান ও মাইনুদ্দীন ইসলাম দুর্জয়ের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। গুলিস্তান ও রামপুরায় পথচারী পারাপারের জন্য ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করতে হবে।

২. সারাদেশের গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের হাফভাড়া নিশ্চিত করতে সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে। এ জন্য দিন রাত বা ছুটির দিনসহ কোনও শর্ত জুড়ে দেয়া যাবে না। বর্ধিত বাসভাড়া প্রত্যাহার করতে হবে। সব রুটে বিআরটিসি’র বাস বাড়াতে হবে।

৩. সব ধরনের পরিবহনে নারীদের অবাধ যাত্রা নিশ্চিত করতে হবে। তাদের সঙ্গে সৌজন্য ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

৪. লাইসেন্সবিহীন চালককে নিয়োগদানকারী প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। গাড়ির নিবন্ধন, ফিটনেস কার্যক্রম ও লাইসেন্স দানে বিআরটিএ’র দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকার ব্যবস্থা নিতে হবে।

৫. সব সড়কে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করতে হবে। ট্রাফিক পুলিশের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে। ট্রাফিক পুলিশের ঘুষ দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে।

৬. সব রুটে প্রতিযোগিতা বন্ধে এক গ্রুপ বা কোম্পানির মাধ্যমে সব বাস চালানোর ব্যবস্থা করতে হবে। বাস অনুযায়ী মালিকদের মধ্যে লাভের টাকা বন্টনের নিয়ম করতে হবে।

৭. শ্রমিকের নিয়োগপত্রে পরিচয় নিশ্চিত করতে হবে। বাস চালক ও হেলপারদের চুক্তির পরিবর্তে সব গণপরিবহন টিকিট পদ্ধতিতে চালানোর ব্যবস্থা করতে হবে। শ্রমিকদের জন্য বিশ্রামাগার ও টয়লেটের ব্যবস্থা করতে হবে।

৮. গাড়ি ও চালকের কর্মঘণ্টা এক নাগাড়ে ছয় ঘণ্টার বেশি হতে পারবে না। বাসে দুজন চালক ও দুজন সহকারী থাকতে হবে। পর্যাপ্ত বাস টার্মিনাল তৈরি করতে হবে। শ্রমিকদের জন্য যথাযথ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।

১০. যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকদের মতামত নিয়ে সড়ক পরিবহন আইন সংস্কার করতে হবে এবং এর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। ট্রাক ও ময়লার গাড়ি চলাচলের জন্য রাত ১২টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত নির্ধারণ করতে হবে।

১১. মাদক প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। নিয়মিত ডোপ টেস্ট ও কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।

এর আগে নিরাপদ সড়কের দাবি ও মাইনুদ্দিন হত্যার প্রতিবাদে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো রাজধানীর রামপুরা ব্রিজের ওপর অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা।

বুধবার বেলা ১১টার দিকে রামপুরা ব্রিজের ওপর অবস্থান নেন আশপাশের বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন গণপরিবহন থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে তা আটকে দেন।

এছাড়া এইকই দাবিতে মতিঝিল শাপলা চত্বরে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। এতে ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।দুপুর ১টায় মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ উচ্চ বিদ্যালয় এবং মতিঝিল সেন্ট্রালের শিক্ষার্থীরা শাপলা চত্বরে অবস্থান নিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেন।

এ সময় ছাত্ররা জানান, দা‌বি একটাই, নিরাপদ সড়ক চাই। এছাড়া ‘জেগেছে জেগেছে ছাত্র সমাজ জেগেছে’,‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘আমার ভাইয়ের কিছু হলে জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে’এমন বি‌ভিন্ন স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।