করোনার অভিঘাতেও যেভাবে ঘুরে দাঁড়ালো বাংলাদেশ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ০১:৫০:৩২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২১
  • / 213
বিশ্বের অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও করোনার ভয়াবহ আঘাত আসতো। কিন্তু আমরা দ্রুততার সঙ্গে ঝুঁকিপূর্ণ মানুষ ও ব্যবসা-বাণিজ্য টিকিয়ে রাখার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছি। যে কারণে মহামারির নেতিবাচক প্রভাব বাংলাদেশে অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ‘ফরচুন’এ প্রকাশিত এক কমেন্টারিতে এভাবেই করোনা মোকাবিলায় তার সরকারের নেয়া নানা পদক্ষেপের বিষয়ে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশ জার্নাল-এর পাঠকদের জন্য প্রতিবেদনটি তুলে ধরা হলো-

করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল জীবন এবং জীবিকার ভারসাম্য বজায় রাখা, সর্বপ্রথমে মানুষের চাহিদার দিকে মনোনিবেশ করা এবং তারপর উদ্যোক্তা-ব্যবসায়ীদের সহায়তা করা। আগে বিদ্যমান সামাজিক কর্মসূচি ও জরুরি সহায়তার সংমিশ্রণ দেশকে মহামারি মোকাবিলায় সাহায্য করেছে বলেও জানান তিনি।

গত বছর মহামারির শুরুতে সরকার অতিদরিদ্র, প্রতিবন্ধী, বয়স্ক, অভিবাসী ও দরিদ্র নারীদের ত্রাণ দিয়েছে। প্রায় ৪০ মিলিয়ন মানুষকে নগদ ও অন্যান্য ধরনের সহায়তা দেয়া হয়েছে। আমরা ভ্যাকসিন ও অন্যান্য জরুরি ব্যবস্থার জন্য অতিরিক্ত কয়েক বিলিয়ন ডলার খরচ করেছি।

এক দশক আগে শুরু হওয়া অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে চেয়েছি। সরকার ছোট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও তাদের কর্মীদের সহায়তাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। আমরা ক্ষুদ্র-ব্যবসায়িক উদ্যোক্তাদের, বিশেষ করে নারী ও কৃষকদের স্বল্প সুদে ঋণ দিয়েছি। পর্যটন এবং আতিথেয়তা শিল্পে কর্মীদের অর্থ প্রদানের জন্য অনুকূল শর্তে সরকারি ঋণও দেয়া হয়, যারা লকডাউনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।

করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন সংক্রমণের শঙ্কা নিয়ে প্রতিবেদনে তিনি উল্লেখ করেন- আর যাই হোক না কেন, আমরা যা কিছু করি তার মূলে থাকে মানুষ। ‘কেউ ক্ষুধার্ত হবে না’ নামে একটি নীতি চালু করেছে সরকার। যা প্রায় ১৭ মিলিয়ন পরিবারকে ভাত, শিশুখাদ্য ও নগদ অর্থ প্রদান করেছে। আমরা বয়স্ক, প্রতিবন্ধী এবং নিঃস্ব মহিলাদের জন্য অর্থ সহায়তার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি।

মহামারির সময়ের গৃহীত পদক্ষেপ নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, মহামারিতে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নীতি প্রবর্তন করেছে। গত বছরের মার্চের শেষ থেকে জুনের শুরু পর্যন্ত ৬৬ দিনের সরকারি ছুটি কার্যকর করা হয়েছে। এতে শিল্প উৎপাদন কমে গেছে। ছোট ও মাঝারি আকারের অনেক ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে। বিশ্বব্যাপী লকডাউন পণ্য চাহিদা হ্রাস করেছে এবং আমাদের সমগ্র অর্থনীতিকে ধাক্কা দিয়েছে। এতোকিছুর পরেও আমরা কখনই নিজেদের উপর বিশ্বাস হারাইনি। আমাদের মানুষের জন্য বিনিয়োগ অব্যাহত রেখেছি। আমরা করোনা পরীক্ষার বহুবিধ সুবিধা স্থাপন করেছি। সারা দেশের হাসপাতালে আইসোলেশন সুবিধা স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও আমরা ৬ হাজার ২০০ ডাক্তার, ১০ হাজার নার্স ও ৩ হাজার অন্যান্য প্রধান চিকিৎসাকর্মী নিয়োগ করা হয়েছে।

জাতির পিতা ও বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী স্মরণে আমরা গৃহহীনদের জন্য ঘর নির্মাণের একটি কর্মসূচি সম্প্রসারিত করেছি মহামারির আগেই। এর ফলে অনেক গৃহহীন নিজের ঘর পেয়েছে। কর্মসূচিটি রোগের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াইয়ে ব্যাপক অবদান রেখেছে।

বর্তমান সরকার ছোট ব্যবসা ও তাদের কর্মীদের সহায়তার ব্যাপারটিকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। আমরা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা, বিশেষ করে নারী ও কৃষকদের স্বল্প সুদে ঋণ দিয়েছি।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

করোনার অভিঘাতেও যেভাবে ঘুরে দাঁড়ালো বাংলাদেশ

আপডেট : ০১:৫০:৩২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২১
বিশ্বের অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও করোনার ভয়াবহ আঘাত আসতো। কিন্তু আমরা দ্রুততার সঙ্গে ঝুঁকিপূর্ণ মানুষ ও ব্যবসা-বাণিজ্য টিকিয়ে রাখার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছি। যে কারণে মহামারির নেতিবাচক প্রভাব বাংলাদেশে অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ‘ফরচুন’এ প্রকাশিত এক কমেন্টারিতে এভাবেই করোনা মোকাবিলায় তার সরকারের নেয়া নানা পদক্ষেপের বিষয়ে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশ জার্নাল-এর পাঠকদের জন্য প্রতিবেদনটি তুলে ধরা হলো-

করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল জীবন এবং জীবিকার ভারসাম্য বজায় রাখা, সর্বপ্রথমে মানুষের চাহিদার দিকে মনোনিবেশ করা এবং তারপর উদ্যোক্তা-ব্যবসায়ীদের সহায়তা করা। আগে বিদ্যমান সামাজিক কর্মসূচি ও জরুরি সহায়তার সংমিশ্রণ দেশকে মহামারি মোকাবিলায় সাহায্য করেছে বলেও জানান তিনি।

গত বছর মহামারির শুরুতে সরকার অতিদরিদ্র, প্রতিবন্ধী, বয়স্ক, অভিবাসী ও দরিদ্র নারীদের ত্রাণ দিয়েছে। প্রায় ৪০ মিলিয়ন মানুষকে নগদ ও অন্যান্য ধরনের সহায়তা দেয়া হয়েছে। আমরা ভ্যাকসিন ও অন্যান্য জরুরি ব্যবস্থার জন্য অতিরিক্ত কয়েক বিলিয়ন ডলার খরচ করেছি।

এক দশক আগে শুরু হওয়া অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে চেয়েছি। সরকার ছোট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও তাদের কর্মীদের সহায়তাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। আমরা ক্ষুদ্র-ব্যবসায়িক উদ্যোক্তাদের, বিশেষ করে নারী ও কৃষকদের স্বল্প সুদে ঋণ দিয়েছি। পর্যটন এবং আতিথেয়তা শিল্পে কর্মীদের অর্থ প্রদানের জন্য অনুকূল শর্তে সরকারি ঋণও দেয়া হয়, যারা লকডাউনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।

করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন সংক্রমণের শঙ্কা নিয়ে প্রতিবেদনে তিনি উল্লেখ করেন- আর যাই হোক না কেন, আমরা যা কিছু করি তার মূলে থাকে মানুষ। ‘কেউ ক্ষুধার্ত হবে না’ নামে একটি নীতি চালু করেছে সরকার। যা প্রায় ১৭ মিলিয়ন পরিবারকে ভাত, শিশুখাদ্য ও নগদ অর্থ প্রদান করেছে। আমরা বয়স্ক, প্রতিবন্ধী এবং নিঃস্ব মহিলাদের জন্য অর্থ সহায়তার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি।

মহামারির সময়ের গৃহীত পদক্ষেপ নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, মহামারিতে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নীতি প্রবর্তন করেছে। গত বছরের মার্চের শেষ থেকে জুনের শুরু পর্যন্ত ৬৬ দিনের সরকারি ছুটি কার্যকর করা হয়েছে। এতে শিল্প উৎপাদন কমে গেছে। ছোট ও মাঝারি আকারের অনেক ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে। বিশ্বব্যাপী লকডাউন পণ্য চাহিদা হ্রাস করেছে এবং আমাদের সমগ্র অর্থনীতিকে ধাক্কা দিয়েছে। এতোকিছুর পরেও আমরা কখনই নিজেদের উপর বিশ্বাস হারাইনি। আমাদের মানুষের জন্য বিনিয়োগ অব্যাহত রেখেছি। আমরা করোনা পরীক্ষার বহুবিধ সুবিধা স্থাপন করেছি। সারা দেশের হাসপাতালে আইসোলেশন সুবিধা স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও আমরা ৬ হাজার ২০০ ডাক্তার, ১০ হাজার নার্স ও ৩ হাজার অন্যান্য প্রধান চিকিৎসাকর্মী নিয়োগ করা হয়েছে।

জাতির পিতা ও বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী স্মরণে আমরা গৃহহীনদের জন্য ঘর নির্মাণের একটি কর্মসূচি সম্প্রসারিত করেছি মহামারির আগেই। এর ফলে অনেক গৃহহীন নিজের ঘর পেয়েছে। কর্মসূচিটি রোগের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াইয়ে ব্যাপক অবদান রেখেছে।

বর্তমান সরকার ছোট ব্যবসা ও তাদের কর্মীদের সহায়তার ব্যাপারটিকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। আমরা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা, বিশেষ করে নারী ও কৃষকদের স্বল্প সুদে ঋণ দিয়েছি।