আর্থিক প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকদের ঋণ পরিশোধে বিশেষ সুবিধা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : ০৮:০১:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • / 157
অ-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকদের ঋণ পরিশোধে বিশেষ সুবিধা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ঋণের দুই শতাংশ পরিশোধ করলেই ঋণখেলাপি হবেন না গ্রহীতা। তবে শর্তানুসারে পরের বছরে ওই ঋণ শোধ করতে হবে।

বড় অঙ্কের সুদ মওকুফ সুবিধাসহ ঋণ পরিশোধের সুযোগ দিতে ‘এককালীন এক্সিট’নামে একটি সার্কুলার জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বাজার বিভাগ থেকে নির্দেশনাটি সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী বা ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে পাঠানো হয়েছে।

করোনা মহামারির কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সঙ্কট বা অন্য কোনো কারণে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়া যেসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়েছে, তাদের ঋণের দায় শোধ করতে এই সুবিধা দেয়া হচ্ছে বলে নির্দেশনায় বলা হয়েছে।

সার্কুলারে বলা হয়, এককালীন বা সর্বোচ্চ এক বছরের মধ্যে ঋণ পরিশোধের শর্তে অ-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকরা সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ সুদ মওকুফ সুবিধা পাবেন। তবে এ সুবিধা নিতে হলে আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে সংশ্লিষ্ট গ্রাহককে ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর তারিখে ঋণের সর্বশেষ স্থিতির কমপক্ষে ২ শতাংশ ‘ডাউন পেমেন্ট’ দিয়ে আবেদন করতে হবে।

এই সার্কুলার জারির আগে ঋণের কোনো কিস্তি বা অংশবিশেষ পরিশোধ করে থাকলে তা ‘ডাউন পেমেন্ট’ হিসেবে গণ্য হবে না।

২ শতাংশ ডাউন পেমেন্টসহ এমন আবেদন পেলে সংশ্লিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ৬০ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিতে হবে বলে সার্কুলারে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে জাল-জালিয়াতি বা কোনো ধরনের প্রতারণা বা অনিয়মের মাধ্যমে নেয়া ঋণের ক্ষেত্রে এ সুবিধা মিলবে না।

সার্কুলারে আরও বলা হয়, চাইলে সংশ্লিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ এমন গ্রাহককে ঋণের সুদের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ মওকুফ করতে পারবে। এর বাইরে অনারোপিত সুদ বা অন্য কোনো জরিমানা বা চার্জ বা ফিও মওকুফ করতে পারবে। এক্ষেত্রে কোনোভাবেই মূল ঋণ মওকুফ করতে পারবে না।

ঋণ প্রদানের দিন থেকে ঋণ সমন্বয় বা পুরো আদায়ের দিন পর্যন্ত আদায়যোগ্য অর্থের ওপর ‘কস্ট অব ফান্ড’ সুদ (ইসলামি শরিয়াহ মাফিক অর্থায়নের ক্ষেত্রে মুনাফা) আরোপ করতে পারবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান। সম্পূর্ণ পরিশোধ না করা পর্যন্ত এ ঋণ ‘শ্রেণিকৃত’ বা খেলাপি হিসেবে বিবেচনা করা হবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সার্কুলারে আরও বলা হয়, সুদ মওকুফের সিদ্ধান্ত অনুমোদন পেলে মওকুফকৃত সুদ হিসাব একটি পৃথক সুদবিহীন ব্লকড হিসাবে স্থানান্তর করতে হবে। ঋণের সমুদয় অর্থ আদায় হলে সুদ মওকুফ কার্যকর হবে। এর আগে সুদ বা মুনাফা কোনোভাবেই সংশ্লিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠান তার আয় খাতে দেখাতে পারবে না।

খেলাপি ঋণ আদায়ে কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান তার গ্রাহকদের বিরুদ্ধে মামলা করে থাকলে, তাদের কারও থেকে এমন ‘এক্সিট’ আবেদন পেলে সোলেনামার ভিত্তিতে ওই মামলা স্থগিত রাখতে পারবে ঋণ প্রদানকারী আর্থিক প্রতিষ্ঠান।

পরবর্তীতে ‘এক্সিট প্লান’-এর শর্ত ভঙ্গ করলে ওই গ্রাহককে প্রদত্ত সব সুবিধা বাতিল বলে গণ্য হবে এবং মামলা পুনরুজ্জীবিত করাসহ ঋণ আদায়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারবে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

আর্থিক প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকদের ঋণ পরিশোধে বিশেষ সুবিধা

আপডেট : ০৮:০১:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২২
অ-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকদের ঋণ পরিশোধে বিশেষ সুবিধা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ঋণের দুই শতাংশ পরিশোধ করলেই ঋণখেলাপি হবেন না গ্রহীতা। তবে শর্তানুসারে পরের বছরে ওই ঋণ শোধ করতে হবে।

বড় অঙ্কের সুদ মওকুফ সুবিধাসহ ঋণ পরিশোধের সুযোগ দিতে ‘এককালীন এক্সিট’নামে একটি সার্কুলার জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বাজার বিভাগ থেকে নির্দেশনাটি সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী বা ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে পাঠানো হয়েছে।

করোনা মহামারির কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সঙ্কট বা অন্য কোনো কারণে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়া যেসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়েছে, তাদের ঋণের দায় শোধ করতে এই সুবিধা দেয়া হচ্ছে বলে নির্দেশনায় বলা হয়েছে।

সার্কুলারে বলা হয়, এককালীন বা সর্বোচ্চ এক বছরের মধ্যে ঋণ পরিশোধের শর্তে অ-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকরা সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ সুদ মওকুফ সুবিধা পাবেন। তবে এ সুবিধা নিতে হলে আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে সংশ্লিষ্ট গ্রাহককে ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর তারিখে ঋণের সর্বশেষ স্থিতির কমপক্ষে ২ শতাংশ ‘ডাউন পেমেন্ট’ দিয়ে আবেদন করতে হবে।

এই সার্কুলার জারির আগে ঋণের কোনো কিস্তি বা অংশবিশেষ পরিশোধ করে থাকলে তা ‘ডাউন পেমেন্ট’ হিসেবে গণ্য হবে না।

২ শতাংশ ডাউন পেমেন্টসহ এমন আবেদন পেলে সংশ্লিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ৬০ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিতে হবে বলে সার্কুলারে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে জাল-জালিয়াতি বা কোনো ধরনের প্রতারণা বা অনিয়মের মাধ্যমে নেয়া ঋণের ক্ষেত্রে এ সুবিধা মিলবে না।

সার্কুলারে আরও বলা হয়, চাইলে সংশ্লিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ এমন গ্রাহককে ঋণের সুদের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ মওকুফ করতে পারবে। এর বাইরে অনারোপিত সুদ বা অন্য কোনো জরিমানা বা চার্জ বা ফিও মওকুফ করতে পারবে। এক্ষেত্রে কোনোভাবেই মূল ঋণ মওকুফ করতে পারবে না।

ঋণ প্রদানের দিন থেকে ঋণ সমন্বয় বা পুরো আদায়ের দিন পর্যন্ত আদায়যোগ্য অর্থের ওপর ‘কস্ট অব ফান্ড’ সুদ (ইসলামি শরিয়াহ মাফিক অর্থায়নের ক্ষেত্রে মুনাফা) আরোপ করতে পারবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান। সম্পূর্ণ পরিশোধ না করা পর্যন্ত এ ঋণ ‘শ্রেণিকৃত’ বা খেলাপি হিসেবে বিবেচনা করা হবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সার্কুলারে আরও বলা হয়, সুদ মওকুফের সিদ্ধান্ত অনুমোদন পেলে মওকুফকৃত সুদ হিসাব একটি পৃথক সুদবিহীন ব্লকড হিসাবে স্থানান্তর করতে হবে। ঋণের সমুদয় অর্থ আদায় হলে সুদ মওকুফ কার্যকর হবে। এর আগে সুদ বা মুনাফা কোনোভাবেই সংশ্লিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠান তার আয় খাতে দেখাতে পারবে না।

খেলাপি ঋণ আদায়ে কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান তার গ্রাহকদের বিরুদ্ধে মামলা করে থাকলে, তাদের কারও থেকে এমন ‘এক্সিট’ আবেদন পেলে সোলেনামার ভিত্তিতে ওই মামলা স্থগিত রাখতে পারবে ঋণ প্রদানকারী আর্থিক প্রতিষ্ঠান।

পরবর্তীতে ‘এক্সিট প্লান’-এর শর্ত ভঙ্গ করলে ওই গ্রাহককে প্রদত্ত সব সুবিধা বাতিল বলে গণ্য হবে এবং মামলা পুনরুজ্জীবিত করাসহ ঋণ আদায়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারবে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো।