আমাদের ছেলে-মেয়েরা যেন আরো উন্নত জীবন পায়
- আপডেট : ০৮:২৯:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ জুন ২০২২
- / 173
পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে শনিবার দুপুরে মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়িতে আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিশাল জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাবা, মা, ভাই সব হারিয়ে পেয়েছি আপনাদের। আপনাদের মাঝেই আমি ফিরে পেয়েছি আমার বাবার স্নেহ, মায়ের স্নেহ, ভাইয়ের স্নেহ, আপনাদের পাশেই আমি আছি, আপনাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। আপনাদের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য আমি যে কোন ত্যাগ স্বীকারে সবসময় প্রস্তুত।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই দেশ আপনাদের, এই দেশ আমাদের। জাতির পিতা আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন এবং এই দেশকে আমরা উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলব।
সরকারপ্রধান বলেন, এই পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য ২০০১ সালে তিনি ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করলেও খালেদা জিয়া সরকারের এসে সেই নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়। আবার ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকারে এসে এই পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করে।
পদ্মা সেতু নির্মাণের সময় দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখন ড. ইউনূসকে গ্রামীণ ব্যাংকের এমডির পদ থেকে বয়সের কারণে চলে যেতে হলো, তখন তিনি আমেরিকায় গিয়ে তদবির করে ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন বন্ধ করে দিলেন।
তিনি বলেন, সে সময় বলা হলো, দুর্নীতি হয়েছে, কিন্তু কে দুর্নীতি করেছে। যে সেতু আমাদের প্রাণের সেতু, যে সেতুর সঙ্গে আমার এই দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ভাগ্য জড়িত। এই সেতু নির্মাণে কেন দুর্নীতি হবে? তারা (বিশ্বব্যাংক) টাকা দেয়নি কিন্তু দুর্নীতি-ষড়যন্ত্র বলে টাকা বন্ধ করল।
আর কাউকে এই বর্ষাকালে খরস্রোতা পদ্মা আর পাড়ি দিতে হবে না উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, আর কাউকে এই পদ্মা নদী পাড়ি দিতে গিয়ে বাবা, মা, ভাই-বোন, সন্তান বা আপনজনকে হারাতে হবে না, আপনারা সেখানে নির্বিঘ্নে চলতে পারবেন। সেই ব্যবস্থাই আমরা করে দিয়েছি।
তিনি বলেন, আর যারা এই সেতু নির্মাণে বাধার সৃষ্টি করেছিল তাদেরকে এই পদ্মা সেতুর মধ্যদিয়ে উপযুক্ত একটা জবাব আমরা দিতে পেরেছি- না, বাংলাদেশ পারে। আর বাংলাদেশকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারে নাই এবং ভবিষ্যতেও পারবে না।
’৭৫ এর বাবা, মা, ভাইদের হারানোর পর ’৮১ সালে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর একরকম জোর করেই নির্বাসিত জীবন থেকে তার দেশে ফিরে আসার কথা স্মরণ করে বলেন, নিঃস্ব, রিক্ত হয়ে ফিরে এসেছিলেন এই বাংলাদেশে, সমগ্র বাংলাদেশ তখন ঘুরে বেরিয়েছেন।
তিনি সে সময় শরীয়তপুরে আসার স্মৃতিচারণ করে বলেন, লঞ্চে করে আসার পর লঞ্চ নষ্ট হয়ে গেলে নৌকায় করে প্রত্যন্ত অঞ্চল ঘুরে বেরিয়েছেন, কাদা-পানিতে নেমেছেন, মিটিং করেছেন, আজকে সে শরীয়তপুরের চেহারা পাল্টে গেছে। কারণ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে রাস্তা-ঘাট, পুল, ব্রিজ করেছে এবং সার্বিক উন্নয়ন করেছে। সে সময় মাদারীপুরও সেই লঞ্চে যেতে হতো এবং গোপালগঞ্জ যেতে ঢাকা থেকে ২২ ঘণ্টা সময় লাগতো এবং এসব এলাকা অত্যন্ত দুর্গম ছিল বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এসব এলাকার রাস্তা-ঘাট উন্নয়নসহ তার সরকার শিকারপুর, দোয়ারিকা এবং গাবখান সেতু করে পুরো দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করেছে।
তিনি এ সময় করোনাভাইরাস এবং রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের পাশাপাশি সবাইকে টিকা গ্রহণের এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিধি মেনে চলারও পরামর্শ দেন। পাশাপাশি দেশের এক ইঞ্চি জমিও যাতে অনাবাদি না থাকে তা নিশ্চিত করারও আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
সারাদেশে একশটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে পদ্মা সেতু হয়েছে এখানে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল হবে, কল-কারখানা এবং খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পসহ নানা শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠে মানুষের কর্মসংস্থান হবে। অন্তত ২১টি জেলার মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন আমরা করতে পারব।