বিদেশি সিরিয়ালের আদলে হত্যার পর প্রমান লোপাট করেন তারা
- আপডেট : ০২:৪১:০২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ অগাস্ট ২০২১
- / 123
গ্রেপ্তারা হলেন- মো. সাব্বির হোসেন (২২), মো. আনোয়ার হোসেন (২০) ও মো. সুরুজ আলী (১৮)।
মঙ্গলবার বিকেলে কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন র্যাব-১ এর অধিনায়ক (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আব্দুল মুত্তাকিম।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তার সাব্বির আশুলিয়ার একটি গার্মেন্টেসে চাকুরির করার সুবাধে তার স্ত্রীকে নিয়ে জামগড়া এলাকায় গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে দুই রুমের একটি ফ্ল্যাটে সপরিবারে ভাড়ায় বসবাস করতেন। নিহত জয়নাল ও সাব্বির গ্রামের বন্ধু হওয়ায় সে সাব্বিরের ভাড়া বাসায় মে মাস থেকে সাবলেট হিসেবে বসবাস করতে দেন। একই বাসায় বসবাসের ফলে সাব্বিরের স্ত্রীর সঙ্গে জয়নালের সু-সম্পর্ক তৈরি হয়, যা সাব্বির বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক হিসেবে সন্দেহ করে। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। মনোমালিন্যের জের ধরে গত জুন মাসে সাব্বির তার স্ত্রীকে শ্বশুর বাড়ি লালমনিরহাটে পাঠিয়ে দেয়।
মো. আব্দুল মুত্তাকিম বলেন, তার স্ত্রীকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়ার পর সাব্বির জয়নালকে হত্যার পরিকল্পনা করে। হত্যা-পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সাব্বির জয়নালকে চাকুরি দেয়ার কথা বলে আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে পুনরায় তার ভাড়া বাসায় নিয়ে আসে। এরপর জয়নালকে হত্যার জন্য সাব্বির পরিকল্পিতভাবে তার গ্রামের বন্ধু আনোয়ার ও সুরুজকে ঢাকায় নিয়ে আসে। পরবর্তীতে গত ১৪ আগস্ট রাতে সাব্বির জয়নালকে আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায় তার ভাড়া বাসায় পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আনোয়ার ও সুরুজের সহায়তায় গলাটিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। হত্যা করার পর লাশ গুম করার জন্য একটি পানির ড্রামের মধ্যে জয়নালের মৃতদেহ রেখে দরজা বন্ধ করে বাসায় তালা দিয়ে তারা সবাই পালিয়ে যায়।
গত ২৮ আগস্ট দুপুরে জামগড়া এলাকার ওই ভবনের ৩য় তলার ফ্ল্যাটের গোসলখানার পানির ড্রাম থেকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির গলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত ব্যক্তির লাশ পচে কঙ্কাল হয়ে যাওয়ায় নিহতের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছিল না।
র্যাব আরও জামায়, এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমে গুরুত্বের সঙ্গে প্রচারিত হয়। ওই চাঞ্চল্যকর ক্লুলেস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় র্যাব-১ তাৎক্ষনিকভাবে নিহত অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির পরিচয় সনাক্ত এবং হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে দ্রুততার সঙ্গে ছায়া তদন্ত শুরু করে ও গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আব্দুল মুত্তাকিম আরও বলেন, র্যাব-১ এর একটি আভিযানিক দল দ্রুততার সঙ্গে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এই চাঞ্চল্যকর ক্লুলেস হত্যাকান্ডের রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য ঘটনাস্থলে সোর্স নিয়োগ করে এবং পরবর্তীতে সোর্সের মাধ্যমে বাসায় সচরাচর যাতায়াতকারী একজন সন্দেহভাজন ব্যক্তির নাম ও ঠিকানা জানতে পারে।
নিহত ব্যক্তি ও সাব্বিরের সঙ্গে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক ছিল কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে জানতে চাইলে র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল না তবে তাদের মধ্যে সু-সম্পর্ক তৈরি হয়। এরই জেরে সাব্বিরসহ তিনজন জয়নালকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।