ঢাকা ০৭:৩৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

‘যারা আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর ভেঙেছে, তাদের তালিকা হাতে আছে’

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ০১:৫১:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • / 108

মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভূমি ও গৃহহীনদের জন্য সরকারের তরফ থেকে দেওয়া উপহারের ঘর কিছু মানুষ ভেঙে তা গণমাধ্যমে প্রচার করেছে বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যারা এ ধরনের কর্মকাণ্ড চালিয়েছে, তাদের তালিকা সরকারের হাতে রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষে আশ্রায়ন-২ প্রকল্পের অধীনে নির্মাণ করে দেওয়া ঘর কিছু মানুষ হাতুড়ি-শাবল দিয়ে ভেঙেছে। সেগুলো মিডিয়ায় প্রচার করেছে। যারা ঘর ভেঙেছে তাদের নামের তালিকাসহ পুরো ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন আমাদের হাতে রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভার সূচনা বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। প্রায় এক বছর পর এদিন দলের কেন্দ্রীয় এই কমিটির বৈঠকে বসে আওয়ামী লীগ। দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে সভাপতিত্ব করেন।

সভার সূচনা বক্তব্যে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি সিদ্ধান্ত নিলাম, প্রতিটি মানুষকে আমরা ঘর করে দেবো। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়— আমাদের দেশের কিছু মানুষের চরিত্র অত্যন্ত জঘন্য। হঠাৎ দেখলাম, আমাদের তৈরি করে দেওয়া ঘর অনেক জায়গায় ঘর ভেঙে পড়ছে। এসব ছবি দেখার পর আমরা পুরো প্রকল্প পরিদর্শন করে তথ্য নিলাম।’

তিনি বলেন, আমরা প্রায় দেড় লাখের মতো ঘর তৈরি করে দিয়েছি। এর মধ্যে তিনশ ঘর ভেঙেছে। বিভিন্ন এলাকায় কিছু মানুষ নিজে থেকে গিয়ে হাতুড়ি-শাবল দিয়ে সেগুলো ভেঙে তারপর ছবি তুলে গণমাধ্যমে দিয়েছে। এনকোয়ারি করে তাদের নাম-পরিচয় সব বের করা হয়েছে। আমার কাছে কিন্তু পুরো রিপোর্টটা আছে।

এই প্রকল্প বাস্তবায়নে সবাই আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেছে বলে জানিয়েছেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমি দেখেছি— প্রত্যেকে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেছে। আমাদের ইউএনও-ডিসিসহ কর্মচারী যারা ছিল, তারা কিন্তু নিজেরাই এগিয়ে এসেছেন ঘরগুলো তৈরিতে সহযোগিতা করার জন্য। যারা ইট তৈরি করে, তারাও এগিয়ে এসেছে। অল্প পয়সায় তারা ইট দিয়ে দিয়েছে। এভাবে সবাই যার যার জায়গা থেকে এগিয়ে এসেছে। সবার সহযোগিতা, আন্তরিকতাটাই বেশি ছিল।

তা সত্ত্বেও কিছু কিছু মানুষ আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের এসব ঘর ভেঙে দিয়ে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেন শেখ হাসিনা। এর নিন্দা জানিয়ে গণমাধ্যমেরও সমালোচনা করেন তিনি। বলেন, গরিবের জন্য ঘর করে দিচ্ছি, সেই ঘরও যে এভাবে কেউ ভেঙে দিতে পারে, এটি ধারণার বাইরে। কিন্তু ছবিতে এটি স্পষ্ট উঠে এসেছে। সবচেয়ে কষ্টের কথা— দুষ্টু বুদ্ধির কিছু মানুষ, তারা গরিবদের ঘরে হাত দিয়েছে। এটা কীভাবে করে! আর মিডিয়াও এগুলো ধারণ করে প্রচার করেছে। কিন্তু এর পেছনের যে কারণ, কীভাবে এটি হলো— সেটি কিন্তু করেনি।

আশ্রয়ন-২ প্রকল্প নিয়ে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় সেটি তদন্তও করেছে সরকার। তদন্তে সামান্য কিছু জায়গায় দুর্নীতির তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, কিছু কিছু স্থানে কিছু অনিয়ম পাওয়া গেছে। এক জায়গায় যেমন ৬০০ ঘর আছে। সেখানে হয়তো তিন-চারটি ঘর প্রবল বৃষ্টির কারণে মাটি ধ্বসে নষ্ট হয়েছে। মাত্র ৯টি জায়গা আমরা পেয়েছি, যেখানে কিছুটা দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।

নেতাকর্মীসহ সংশ্লিষ্টদের আরও সর্তক থাকার নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা এ পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছি। তবে আমাদের নেতাকর্মীদের এ বিষয়ে আরও সর্তক থাকা দরকার।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

‘যারা আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর ভেঙেছে, তাদের তালিকা হাতে আছে’

আপডেট : ০১:৫১:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২১

মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভূমি ও গৃহহীনদের জন্য সরকারের তরফ থেকে দেওয়া উপহারের ঘর কিছু মানুষ ভেঙে তা গণমাধ্যমে প্রচার করেছে বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যারা এ ধরনের কর্মকাণ্ড চালিয়েছে, তাদের তালিকা সরকারের হাতে রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষে আশ্রায়ন-২ প্রকল্পের অধীনে নির্মাণ করে দেওয়া ঘর কিছু মানুষ হাতুড়ি-শাবল দিয়ে ভেঙেছে। সেগুলো মিডিয়ায় প্রচার করেছে। যারা ঘর ভেঙেছে তাদের নামের তালিকাসহ পুরো ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন আমাদের হাতে রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভার সূচনা বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। প্রায় এক বছর পর এদিন দলের কেন্দ্রীয় এই কমিটির বৈঠকে বসে আওয়ামী লীগ। দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে সভাপতিত্ব করেন।

সভার সূচনা বক্তব্যে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি সিদ্ধান্ত নিলাম, প্রতিটি মানুষকে আমরা ঘর করে দেবো। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়— আমাদের দেশের কিছু মানুষের চরিত্র অত্যন্ত জঘন্য। হঠাৎ দেখলাম, আমাদের তৈরি করে দেওয়া ঘর অনেক জায়গায় ঘর ভেঙে পড়ছে। এসব ছবি দেখার পর আমরা পুরো প্রকল্প পরিদর্শন করে তথ্য নিলাম।’

তিনি বলেন, আমরা প্রায় দেড় লাখের মতো ঘর তৈরি করে দিয়েছি। এর মধ্যে তিনশ ঘর ভেঙেছে। বিভিন্ন এলাকায় কিছু মানুষ নিজে থেকে গিয়ে হাতুড়ি-শাবল দিয়ে সেগুলো ভেঙে তারপর ছবি তুলে গণমাধ্যমে দিয়েছে। এনকোয়ারি করে তাদের নাম-পরিচয় সব বের করা হয়েছে। আমার কাছে কিন্তু পুরো রিপোর্টটা আছে।

এই প্রকল্প বাস্তবায়নে সবাই আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেছে বলে জানিয়েছেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমি দেখেছি— প্রত্যেকে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেছে। আমাদের ইউএনও-ডিসিসহ কর্মচারী যারা ছিল, তারা কিন্তু নিজেরাই এগিয়ে এসেছেন ঘরগুলো তৈরিতে সহযোগিতা করার জন্য। যারা ইট তৈরি করে, তারাও এগিয়ে এসেছে। অল্প পয়সায় তারা ইট দিয়ে দিয়েছে। এভাবে সবাই যার যার জায়গা থেকে এগিয়ে এসেছে। সবার সহযোগিতা, আন্তরিকতাটাই বেশি ছিল।

তা সত্ত্বেও কিছু কিছু মানুষ আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের এসব ঘর ভেঙে দিয়ে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেন শেখ হাসিনা। এর নিন্দা জানিয়ে গণমাধ্যমেরও সমালোচনা করেন তিনি। বলেন, গরিবের জন্য ঘর করে দিচ্ছি, সেই ঘরও যে এভাবে কেউ ভেঙে দিতে পারে, এটি ধারণার বাইরে। কিন্তু ছবিতে এটি স্পষ্ট উঠে এসেছে। সবচেয়ে কষ্টের কথা— দুষ্টু বুদ্ধির কিছু মানুষ, তারা গরিবদের ঘরে হাত দিয়েছে। এটা কীভাবে করে! আর মিডিয়াও এগুলো ধারণ করে প্রচার করেছে। কিন্তু এর পেছনের যে কারণ, কীভাবে এটি হলো— সেটি কিন্তু করেনি।

আশ্রয়ন-২ প্রকল্প নিয়ে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় সেটি তদন্তও করেছে সরকার। তদন্তে সামান্য কিছু জায়গায় দুর্নীতির তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, কিছু কিছু স্থানে কিছু অনিয়ম পাওয়া গেছে। এক জায়গায় যেমন ৬০০ ঘর আছে। সেখানে হয়তো তিন-চারটি ঘর প্রবল বৃষ্টির কারণে মাটি ধ্বসে নষ্ট হয়েছে। মাত্র ৯টি জায়গা আমরা পেয়েছি, যেখানে কিছুটা দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।

নেতাকর্মীসহ সংশ্লিষ্টদের আরও সর্তক থাকার নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা এ পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছি। তবে আমাদের নেতাকর্মীদের এ বিষয়ে আরও সর্তক থাকা দরকার।