ঢাকা ০৬:০২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অস্ত্র মামলায় স্বাস্থ্যের গাড়িচালকের ৩০ বছর কারাদণ্ড

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ১১:১৫:২২ পূর্বাহ্ন, সোমাবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • / 101
অস্ত্র আইনের মামলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বরখাস্ত হওয়া গাড়িচালক আব্দুল মালেকের দুই ধারায় ১৫ বছর করে ৩০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সোমবার সকালে ঢাকা মহানগরের ৪ নম্বর বিশেষ ট্রাইবুনালের বিচারক রবিউল আলম এই রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে অবৈধ অস্ত্র রাখার জন্য ১৫ বছর এবং গুলি রাখার জন্য আরও ১৫ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। দুটি সাজার মেয়াদ একসঙ্গে শেষ হবে বলে রায়ে উল্লেখ করেন বিচারক।

গত ৫ সেপ্টেম্বর ঢাকার এক নম্বর মহানগর বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক কে এম ইমরুল কায়েশের আদালতে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। রাষ্ট্রপক্ষে ১৩ জন সাক্ষীর সবাই আদালতে উপস্থিত হয়ে জবানবন্দি দিয়েছেন। এরপর গত ৬ সেপ্টেম্বর মামলার অবশিষ্ট অংশ বিচারের জন্য ৪ নম্বর বিশেষ ট্রাইবুনালে পাঠানো হয়।

৯ সেপ্টেম্বরে আত্মপক্ষ সমর্থনে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার প্রার্থনা করেছিলেন আসামি আব্দুল মালেক। চারদিন পর ১৩ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত রায়ের জন্য আজকের তারিখ ধার্য করেছিলেন। মামলায় আসামিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন আইনজীবী শাহিনুর ইসলাম।

অবৈধ অস্ত্র, জাল নোট ব্যবসা ও চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বর ভোরে রাজধানীর তুরাগ এলাকা থেকে গাড়িচালক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গাড়িচালক আবদুল মালেককে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। এ সময় তার কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, পাঁচ রাউন্ড গুলি, দেড় লাখ বাংলাদেশি জাল নোট, একটি ল্যাপটপ ও মোবাইলফোন উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনায় অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের দুই মামলা করে র‌্যাব।

মামলাগুলোয় কয়েক দফা রিমান্ড শেষে ওই বছর ৯ ডিসেম্বর তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর থেকে সে কারাগারেই আছেন।

রাজধানীর তুরাগে গাড়িচালক আবদুল মালেকের রয়েছে ২৪টি ফ্ল্যাটবিশিষ্ট সাত তলার দুটি বিলাসবহুল বাড়ি। একই এলাকায় ১২ কাঠার প্লট রয়েছে। এছাড়া হাতিরপুলে ১০ তলা ভবনের নির্মাণকাজ চলছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানায়, অধিদপ্তরের কর্মচারী হলেও মালেক ছিলেন প্রভাবশালী। তিনি অধিদপ্তরের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির নিয়োগ, বদলি নিয়ন্ত্রণ করতেন। তার কথামতো কর্মকর্তারা কাজ না করায় তাদের নানাভাবে হয়রানি বা শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। আব্দুল মালেক একজন তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী হলেও নিজে ব্যবহার করতেন পাজেরো গাড়ি। এছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের যেসব চালকরা আছেন তাদের তেল চুরির টাকার বেশিরভাগই তার পকেটে যেত। রাতারাতি বিপুল টাকার মালিক বনে যান। এসব টাকা দিয়ে তিনি ঢাকা শহরে একাধিক আলিশান বাড়ি, ফ্ল্যাট এমনকি ব্যাংকে বিপুল টাকা রেখেছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

অস্ত্র মামলায় স্বাস্থ্যের গাড়িচালকের ৩০ বছর কারাদণ্ড

আপডেট : ১১:১৫:২২ পূর্বাহ্ন, সোমাবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১
অস্ত্র আইনের মামলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বরখাস্ত হওয়া গাড়িচালক আব্দুল মালেকের দুই ধারায় ১৫ বছর করে ৩০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সোমবার সকালে ঢাকা মহানগরের ৪ নম্বর বিশেষ ট্রাইবুনালের বিচারক রবিউল আলম এই রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে অবৈধ অস্ত্র রাখার জন্য ১৫ বছর এবং গুলি রাখার জন্য আরও ১৫ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। দুটি সাজার মেয়াদ একসঙ্গে শেষ হবে বলে রায়ে উল্লেখ করেন বিচারক।

গত ৫ সেপ্টেম্বর ঢাকার এক নম্বর মহানগর বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক কে এম ইমরুল কায়েশের আদালতে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। রাষ্ট্রপক্ষে ১৩ জন সাক্ষীর সবাই আদালতে উপস্থিত হয়ে জবানবন্দি দিয়েছেন। এরপর গত ৬ সেপ্টেম্বর মামলার অবশিষ্ট অংশ বিচারের জন্য ৪ নম্বর বিশেষ ট্রাইবুনালে পাঠানো হয়।

৯ সেপ্টেম্বরে আত্মপক্ষ সমর্থনে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার প্রার্থনা করেছিলেন আসামি আব্দুল মালেক। চারদিন পর ১৩ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত রায়ের জন্য আজকের তারিখ ধার্য করেছিলেন। মামলায় আসামিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন আইনজীবী শাহিনুর ইসলাম।

অবৈধ অস্ত্র, জাল নোট ব্যবসা ও চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বর ভোরে রাজধানীর তুরাগ এলাকা থেকে গাড়িচালক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গাড়িচালক আবদুল মালেককে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। এ সময় তার কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, পাঁচ রাউন্ড গুলি, দেড় লাখ বাংলাদেশি জাল নোট, একটি ল্যাপটপ ও মোবাইলফোন উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনায় অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের দুই মামলা করে র‌্যাব।

মামলাগুলোয় কয়েক দফা রিমান্ড শেষে ওই বছর ৯ ডিসেম্বর তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর থেকে সে কারাগারেই আছেন।

রাজধানীর তুরাগে গাড়িচালক আবদুল মালেকের রয়েছে ২৪টি ফ্ল্যাটবিশিষ্ট সাত তলার দুটি বিলাসবহুল বাড়ি। একই এলাকায় ১২ কাঠার প্লট রয়েছে। এছাড়া হাতিরপুলে ১০ তলা ভবনের নির্মাণকাজ চলছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানায়, অধিদপ্তরের কর্মচারী হলেও মালেক ছিলেন প্রভাবশালী। তিনি অধিদপ্তরের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির নিয়োগ, বদলি নিয়ন্ত্রণ করতেন। তার কথামতো কর্মকর্তারা কাজ না করায় তাদের নানাভাবে হয়রানি বা শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। আব্দুল মালেক একজন তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী হলেও নিজে ব্যবহার করতেন পাজেরো গাড়ি। এছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের যেসব চালকরা আছেন তাদের তেল চুরির টাকার বেশিরভাগই তার পকেটে যেত। রাতারাতি বিপুল টাকার মালিক বনে যান। এসব টাকা দিয়ে তিনি ঢাকা শহরে একাধিক আলিশান বাড়ি, ফ্ল্যাট এমনকি ব্যাংকে বিপুল টাকা রেখেছেন।