রাজধানী ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজের আগুন প্রায় ৭ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে এসেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় রাত ৯টা থেকে ফ্লাইট চলাচলসহ বিমানবন্দরের সব কার্যক্রম আবারও শুরু করার খবর জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
আগুনের সূত্রপাত কীভাবে তাৎক্ষণিকভাবে সেটি নিশ্চিত করতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস। তবে বিমানবন্দরের ফাঁকা জায়গায় অতিরিক্ত বাতাসের কারণে আগুন বেশি ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানান সংস্থাটির মহাপরিচালক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার মুহাম্মদ জাহেদ কামাল।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন অবশ্য জানান, বিমানবন্দরের যেখানে আগুন লেগেছে তার পুরোটাই আমদানি কার্গো, রপ্তানি কার্গো পুরোপুরি নিরাপদ রয়েছে।
বিমানবন্দরের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
এদিকে দেশের বিভিন্ন স্থানে ধারাবাহিক আগুনের ঘটনায় নাশকতার প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেওয়ার বার্তা দিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার।
শনিবার সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে জানানো হয়, নিরাপত্তা সংস্থাগুলো প্রতিটি ঘটনা গভীরভাবে তদন্ত করছে এবং মানুষের জীবন ও সম্পদ সুরক্ষায় সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছে।
আগুনের এ ঘটনায় বিপাকে পড়েন আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের সাধারণ যাত্রীরা। বিমান চলাচল বন্ধ থাকায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিমানবন্দরেই অপেক্ষা করতে বাধ্য হন তারা।
নাশকতা নাকি দুর্ঘটনা?
মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে একাধিক অগ্নিকাণ্ড ঘটায় এগুলো নিছক দুর্ঘটনা নাকি নাশকতা এমন প্রশ্ন তৈরি হয় অনেকের মধ্যে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও নানা ধরনের আলোচনা ছড়াতে দেখা যাচ্ছে।
গত মঙ্গলবার ঢাকার মিরপুর এলাকার একটি পোশাক কারখানায় আগুন লাগার পর ১৬ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। পাশেই একটি রাসায়নিক গুদামে আগুন নিয়ন্ত্রণে যথেষ্ট বেগ পেতে হয় ফায়ার সার্ভিসকে। যদিও এই ঘটনা কারণ এখনো জানা যায়নি।
দুদিন পর বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (সিইপিজেড) অ্যাডামস ক্যাপস অ্যান্ড টেক্সটাইল কারখানার বড় ধরনের আগুন লাগে। কোনো প্রাণহানির ঘটনা না ঘটলেও সাত তলা ভবনটি পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ১৭ ঘণ্টার বেশি সময় পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
এরই মধ্যে শনিবার ঢাকা বিমানবন্দরে আগুনের ঘটনা ঘটলো।
রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস টিম থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, “দেশের বিভিন্ন স্থানে সম্প্রতি সংঘটিত একাধিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় জনমনে যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকার তা গভীরভাবে অবগত”।
সাম্প্রতিক এসব অগ্নিকাণ্ড ‘নাশকতা হিসেবে প্রমাণিত’ হলে অথবা ‘আতঙ্ক বা বিভাজন সৃষ্টির’ লক্ষ্যে ঘটানো হচ্ছে বলে প্রমাণ পেলে সেগুলো ‘মোকাবিলা’ করার কথাও বলা হয়।
নিরাপত্তা সংস্থাগুলো প্রতিটি ঘটনা ‘গভীরভাবে তদন্ত করছে’ জানিয়ে এতে বলা হয়, “নাশকতা বা অগ্নিসংযোগের কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া গেলে সরকার তাৎক্ষণিক ও দৃঢ় পদক্ষেপ নেবে। কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বা উসকানির মাধ্যমে জনজীবন ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে বিঘ্নিত করার সুযোগ দেওয়া হবে না”।
তবে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে এসব অগ্নিকাণ্ডের কোনো কারণ এখন পর্যন্ত জানানো হয়নি।