বাংলাদেশিদের একাউন্ট বাড়ছে সুইজারল্যান্ডে
- আপডেট : ০১:০৮:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুন ২০২১
- / 198
বর্তমান সরকার দেশকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে দিচ্ছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনীতিকে শেষ করে ফেলছে। সম্পূর্ণ লুটেরা রাজত্ব কায়েম করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ফখরুল বলেন, ১০ হাজার কোটি টাকার প্রজেক্ট হয়ে যায় ৪০/৫০ হাজার কোটি টাকা। পত্রিকায় দেখলাম, সুইজারল্যান্ডে বাংলাদেশিদের একাউন্ট বাড়ছে। কানাডা, মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম তৈরি হচ্ছে। সব জায়গায় তাদের প্লট। এটা তাদের লোকেরা নিচ্ছে। এক জায়গায় নয়, সব জায়গায়। এভাবেই আমাদের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দেয়া হচ্ছে। রাজনীতিকে ধ্বংস করা হচ্ছে।
শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসবে তিনি এ অভিযোগ করেন। ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান: ইতিহাসের ধ্রুবতারা’ শীর্ষক সংকলন গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসবের আয়োজন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন ‘সাদা দল’।
বইটিতে ১৪ জন শিক্ষকের ও জিয়াউর রহমানের নিজের লেখা তিনটি প্রবন্ধ স্থান পেয়েছে। রয়েছে জিয়া পরিবারের ছবি সম্বলিত অ্যালবাম। বইটি পাওয়া যাবে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ষষ্ঠ তলায় জিয়া স্মৃতি পাঠাগারে। বইটির মূল্য ৪০০ টাকা।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, একদলীয় শাসনতন্ত্র থেকে বহুদলীয় শাসনতন্ত্র এনেছিলেন জিয়াউর রহমান। একদলীয় শাসন কে কায়েম করেছিলেন, এ কথা বললেই নারাজ হয়ে যান আপনারা। ৭২ থেকে ৭৫ পর্যন্ত তারা কোনো জবাব দিতে চায় না। কেন বাকশাল, রক্ষিবাহিনী তৈরি করেছিলেন তাদের কোনো উত্তর নেই। কেনই বা তত্ত্বাবাধয়ক সরকার বাদ দিয়ে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিচ্ছেন তাদের কাছে এসবেরও জবাব নেই।
দেশে এখন ‘আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’ দুইভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে এমন মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, আমাদের দুর্ভাগ্য যে, দেশ এখন দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি, দুটিভাগ হয়ে গেছে। ফলে মানুষ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেও অনেকের কাছে তা গ্রহণযোগ্য হয় না।
সাদা দলের নেতাদের উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা আরো ঐক্যবদ্ধ হন। আরো ত্যাগ স্বীকারের জন্য তৈরি থাকতে হবে। একটা দুঃসময় ও কঠিন সময় যাচ্ছে। সব কিছু যে রাতারাতি পরিবর্তন হবে, এটা মনে করার কোন কারণ নেই।
বিএনপি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আপনারা অনেকেই দলের সমালোচনা করেন। বলেন, বিএনপি এটা করছে না, বিএনপি ওটা করতে পারছে না। কিন্তু বিএনপির শক্তিটা কোথায়? ওই শক্তি তো আপনাদের হাতে। আপনারাই সেটা তৈরি করেন।
ছাত্রদের মধ্যে রাজনীতির প্রতি প্রচণ্ড অনীহা তৈরি হয়েছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, চারিদিকে আত্মকেন্দ্রিক তৈরি হয়েছে। ভালো চাকরি চাই, ভালো রেজাল্ট করতে হবে, বাইরে চলে যাবো। আর বিসিএস পরীক্ষার সময় দেখি, পুলিশের চাকরি এক নাম্বারে থাকে! এটাই প্রমাণ করে যে, এখনকার যুব সমাজ কি চাচ্ছে।
তিনি বলেন, একটা জাতির যখন সঙ্কট তৈরি হয়, তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোনো সাড়া-শব্দ পাই না। একটা উদাহরণ দেই, টিপাইমুখ বাঁধ। ওই সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটা মিছিলও বের হয়নি। কিছু মনে করবেন না। একটা মিছিলও বের হয়নি।
ফখরুল বলেন, আজকে নতুন প্রজন্ম যারা- তারা কিন্তু জিয়াউর রহমানকে চেনে না। কারণ তারা ইতিহাস যানে না। আর তাদেরকে যেটা শেখানো হচ্ছে, সেটা সম্পূর্ণ একটা বিকৃত ইতিহাস।
অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে জিয়াউর রহমানকে খলনায়ক বানানো হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের সাবেক আহ্বায়ক ও বিএনপির শিক্ষা সম্পাদক অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাদা দলের বর্তমান আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমানের পরিচালনায় বইয়ের অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ঢাবির সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী, সাবেক অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিএনপির সহ প্রশিক্ষণ সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান, সাদা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান।