৭১’র গণহত্যা: পাক সেনাবাহিনীর বিচারের দাবি ভারতের

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ০৮:১৮:০৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২২
  • / 186
১৯৭১ সালে বাংলাদেশে বর্বরোচিত গণহত্যার দায়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিচার চায় প্রতিবেশী ভারত। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের চলমান বৈঠকে ভারতের পক্ষ থেকে এই দাবি করেন নিরাপত্তা পরিষদে ভারতীয় প্রতিনিধি টিএস ত্রিমূর্তি। সংবাদমাধ্যম দ্য ইকোনোমিক টাইমসের এক খবরে জানা গেছে এমনটাই।

‘সশস্ত্র সংঘাতকালে বেসামরিক মানুষের সুরক্ষা : বড় শহরসমূহে যুদ্ধ ও নগরাঞ্চলে বসবাসরত বেসামরিক মানুষের সুরক্ষা’ এই আলোচ্য বিষয় নিয়ে মঙ্গলবার শুরু হওয়া এবারের বৈঠকে পাক বাহিনীর গণহত্যাকে শাস্তিযোগ্য অপ্রাদ দাবি করে তাদের শাস্তি চায় ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।

নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে ভারতের পক্ষ থেকে টিএস ত্রিমূর্তি বলেন, যুদ্ধ ও সন্ত্রাসী হামলার কারণে বিশ্বের বিভিন্ন শহর কী পরিমাণ বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তা আমরা বিশ্ববাসী দেখেছি। জাতিসংঘ মহাসচিবের দপ্তর থেকেই প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২১ সালে করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও শহর ও নগরাঞ্চলে সংঘাতের কারণে বিশ্বজুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৫ কোটিরও বেশি মানুষ। গত কয়েক বছর ধরে যুদ্ধ পরিস্থিতি ও সন্ত্রাসী হামলার কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের আফগানিস্তান, সিরিয়া, লিবিয়া ও ইয়েমেনের শহরসমূহে বসবাসকারী মানুষ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এসকল যুদ্ধ আর সংঘাতের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে বিস্ফোরক অস্ত্র, যার ফলে ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে সংখ্যা।

এরপর তিনি ১৯৭১ সালের প্রেক্ষাপট টেনে এনে বলেন, এখনও অনেক দেশ আছে, যারা নিকট অতীতে ঘটে যাওয়া গণহত্যার ন্যায়বিচার পায়নি। বাংলাদেশ সেসব দেশের মধ্যে অন্যতম। ১৯৭১ সালে সাবেক পূর্বপাকিস্তান ও বর্তমান বাংলাদেশের নগরাঞ্চলে ভয়াবহ গণহত্যা চালিয়েছিল পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। ভারতের পক্ষ থেকে মনে করা হয়, এই গণহত্যার উপোর্যুপরি বিচার হওয়া উচিত।

৭১’র গণহত্যার শুরুর দিককার ইতিহাস তুলে ত্রিমূর্তি আরও যোগ করেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে ঢাকার সাধারণ মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল পাকিস্তান সেনাবাহিনী। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামের সেই অভিযানে ওই রাতে ঢাকায় হত্যা করা হয়েছিল অন্তত ৬ হাজার মানুষকে।

তিনি আরও বলেন, ২৫শে মার্চের পরে বাংলাদেশের মুক্তিকামী তরুণরা ভারতে গিয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশে ফিরে গেরিলা পদ্ধতিতে যুদ্ধ শুরু করেন। যুদ্ধের এক পর্যায়ে ভারতের সেনাবাহিনীও সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়। ৯ মাসব্যাপী এই যুদ্ধে নিহত হন অন্তত ৩০ লাখ মানুষ।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

৭১’র গণহত্যা: পাক সেনাবাহিনীর বিচারের দাবি ভারতের

আপডেট : ০৮:১৮:০৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২২
১৯৭১ সালে বাংলাদেশে বর্বরোচিত গণহত্যার দায়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিচার চায় প্রতিবেশী ভারত। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের চলমান বৈঠকে ভারতের পক্ষ থেকে এই দাবি করেন নিরাপত্তা পরিষদে ভারতীয় প্রতিনিধি টিএস ত্রিমূর্তি। সংবাদমাধ্যম দ্য ইকোনোমিক টাইমসের এক খবরে জানা গেছে এমনটাই।

‘সশস্ত্র সংঘাতকালে বেসামরিক মানুষের সুরক্ষা : বড় শহরসমূহে যুদ্ধ ও নগরাঞ্চলে বসবাসরত বেসামরিক মানুষের সুরক্ষা’ এই আলোচ্য বিষয় নিয়ে মঙ্গলবার শুরু হওয়া এবারের বৈঠকে পাক বাহিনীর গণহত্যাকে শাস্তিযোগ্য অপ্রাদ দাবি করে তাদের শাস্তি চায় ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।

নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে ভারতের পক্ষ থেকে টিএস ত্রিমূর্তি বলেন, যুদ্ধ ও সন্ত্রাসী হামলার কারণে বিশ্বের বিভিন্ন শহর কী পরিমাণ বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তা আমরা বিশ্ববাসী দেখেছি। জাতিসংঘ মহাসচিবের দপ্তর থেকেই প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২১ সালে করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও শহর ও নগরাঞ্চলে সংঘাতের কারণে বিশ্বজুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৫ কোটিরও বেশি মানুষ। গত কয়েক বছর ধরে যুদ্ধ পরিস্থিতি ও সন্ত্রাসী হামলার কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের আফগানিস্তান, সিরিয়া, লিবিয়া ও ইয়েমেনের শহরসমূহে বসবাসকারী মানুষ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এসকল যুদ্ধ আর সংঘাতের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে বিস্ফোরক অস্ত্র, যার ফলে ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে সংখ্যা।

এরপর তিনি ১৯৭১ সালের প্রেক্ষাপট টেনে এনে বলেন, এখনও অনেক দেশ আছে, যারা নিকট অতীতে ঘটে যাওয়া গণহত্যার ন্যায়বিচার পায়নি। বাংলাদেশ সেসব দেশের মধ্যে অন্যতম। ১৯৭১ সালে সাবেক পূর্বপাকিস্তান ও বর্তমান বাংলাদেশের নগরাঞ্চলে ভয়াবহ গণহত্যা চালিয়েছিল পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। ভারতের পক্ষ থেকে মনে করা হয়, এই গণহত্যার উপোর্যুপরি বিচার হওয়া উচিত।

৭১’র গণহত্যার শুরুর দিককার ইতিহাস তুলে ত্রিমূর্তি আরও যোগ করেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে ঢাকার সাধারণ মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল পাকিস্তান সেনাবাহিনী। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামের সেই অভিযানে ওই রাতে ঢাকায় হত্যা করা হয়েছিল অন্তত ৬ হাজার মানুষকে।

তিনি আরও বলেন, ২৫শে মার্চের পরে বাংলাদেশের মুক্তিকামী তরুণরা ভারতে গিয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশে ফিরে গেরিলা পদ্ধতিতে যুদ্ধ শুরু করেন। যুদ্ধের এক পর্যায়ে ভারতের সেনাবাহিনীও সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়। ৯ মাসব্যাপী এই যুদ্ধে নিহত হন অন্তত ৩০ লাখ মানুষ।