তিমির পেট থেকে বেঁচে ফিরলেন এই ব্যক্তি

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ০১:৩৮:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ জুন ২০২১
  • / 346

সংগৃহীত ছবি।

::যুগের কন্ঠ ডেস্ক::
যুক্তরাষ্ট্রে মাইকেল প্যাকার্ড নামে এক লবস্টার শিকারিকে গিলে ফেলেছিল বিশাল আকৃতির হ্যাম্পব্যাক তিমি। সবচেয়ে অবাক বিষয় হলো ৩০ থেকে ৪০ সেকেন্ড তিমির পেটের মধ্যে থাকার পর বেঁচে ফিরে এসেছেন ওই লবস্টার শিকারি। তার ৫৬ বছর।

বিবিসির প্রতিবেদনে জানা যায়, সেই সময় তিনি সাগরের নীচে লবস্টার বা বড় আকারের চিংড়ি মাছের খোঁজ করছিলেন। তখন বিশাল ওই তিমিটি তাকে গিলে ফেলে। এরপর প্রায় ৩০-৪০ সেকেন্ড তিনি তিমির পেটের মধ্যে থাকেন। তারপর তিমিটি এক পর্যায়ে তাকে মুখ থেকে লালার সঙ্গে বের করে দেয়। প্যাকার্ডের গোড়ালি একটু মচকে যাওয়া ছাড়া তার আর কোন ক্ষতি হয়নি।

মাইকেল প্যাকার্ড বলেন, অন্য চাকরি নেয়ার জন্য তার স্ত্রীর দীর্ঘদিনের অনুরোধের পরও ৪০ বছর ধরে চালিয়ে আসা ডুবুরির পেশা তিনি ছাড়তে চান না।

হ্যাম্পব্যাক তিমি ৫০ ফিট পর্যন্ত লম্বা হতে পারে এবং একেকটির ওজন হতে পারে প্রায় ৩৬ টন। ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ড লাইফ ফান্ডের তথ্য অনুযায়ী, এখন বিশ্বে এরকম তিমির সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজার।

প্যাকার্ড বলেন, তিনি এবং তার সহযোগী মিলে তাদের নৌকা নিয়ে শুক্রবার সকালে হেরিং কোভে যান। সেখানে পরিবেশ ছিল চমৎকার এবং পানিতে দৃষ্টিসীমা ছিল প্রায় ২০ ফিট।

স্কুবা গিয়ার নিয়ে নৌকা থেকে পানিতে নেমে ডুব দেয়ার পরেই বিশাল একটা ধাক্কা অনুভব কবেন এবং সবকিছু অন্ধকার হয়ে যায়। তিনি ধারণা করেছিলেন, তিনি হয়তো বিশাল আকৃতির সাদা তিমির হামলার শিকার হয়েছেন, যেগুলো ওই এলাকায় সাঁতরে বেড়ায়। আর তখন তিনি আশেপাশে অনুভব করছিলেন সেখানে কোন দাঁত নেই।

আর তখনই তিনি বুঝলেন, একটা তিমির মুখের ভিতরে চলে গেছেন তিনি। আর এটি তাকে গিলে ফেলার চেষ্টা করছে। তার মনে হচ্ছিল, এটাই শেষ, তিনি মারা যাচ্ছেন।

তিনি বলেন, সেই সময় আমার স্ত্রী আর তার দুই পুত্রের কথা ভাবছিলাম। এরপর হঠাৎ করে এটি পানির ওপরে ভেসে উঠে প্রবলভাবে মাথা নাড়তে লাগলো। আমাকে যেন বাতাসে ছুঁড়ে ফেলা হলো আর আমি আবার পানিতে পড়ে গেলাম। আমি মুক্ত হয়ে পানিতে ভেসে রইলাম। আমি সত্যি বিশ্বাস করতে পারছিলাম না…আমি যেন সেই গল্প বলার জন্যই এখানে রয়েছি, তিনি সাংবাদিকদের এভাবেই বেঁচে আসার ঘটনা বর্ণনা করেন।

তার সহযোগী, যিনি তখন পাগলের মতো পানিতে প্যাকার্ডের অক্সিজেনের বুদবুদ খুঁজে বেড়াচ্ছিলেন, তিনি দ্রুত তাকে ধরে নৌকায় তুলে নেন।

হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর তার এই অবিশ্বাস্য ঘটনার বিস্তারিত জানতে সাংবাদিকরা প্যাকার্ডের কাছে ছুটে যান।

হ্যাম্পব্যাক তিমি সাধারণত মুখ যতটা সম্ভব হা করে মাছ, ক্রিল বা অন্য খাবার খেয়ে থাকে। তবে সমুদ্র বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্যাকার্ডের ক্ষেত্রে যা হয়েছে, তা সম্ভবত একটি দুর্ঘটনা।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

তিমির পেট থেকে বেঁচে ফিরলেন এই ব্যক্তি

আপডেট : ০১:৩৮:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ জুন ২০২১
::যুগের কন্ঠ ডেস্ক::
যুক্তরাষ্ট্রে মাইকেল প্যাকার্ড নামে এক লবস্টার শিকারিকে গিলে ফেলেছিল বিশাল আকৃতির হ্যাম্পব্যাক তিমি। সবচেয়ে অবাক বিষয় হলো ৩০ থেকে ৪০ সেকেন্ড তিমির পেটের মধ্যে থাকার পর বেঁচে ফিরে এসেছেন ওই লবস্টার শিকারি। তার ৫৬ বছর।

বিবিসির প্রতিবেদনে জানা যায়, সেই সময় তিনি সাগরের নীচে লবস্টার বা বড় আকারের চিংড়ি মাছের খোঁজ করছিলেন। তখন বিশাল ওই তিমিটি তাকে গিলে ফেলে। এরপর প্রায় ৩০-৪০ সেকেন্ড তিনি তিমির পেটের মধ্যে থাকেন। তারপর তিমিটি এক পর্যায়ে তাকে মুখ থেকে লালার সঙ্গে বের করে দেয়। প্যাকার্ডের গোড়ালি একটু মচকে যাওয়া ছাড়া তার আর কোন ক্ষতি হয়নি।

মাইকেল প্যাকার্ড বলেন, অন্য চাকরি নেয়ার জন্য তার স্ত্রীর দীর্ঘদিনের অনুরোধের পরও ৪০ বছর ধরে চালিয়ে আসা ডুবুরির পেশা তিনি ছাড়তে চান না।

হ্যাম্পব্যাক তিমি ৫০ ফিট পর্যন্ত লম্বা হতে পারে এবং একেকটির ওজন হতে পারে প্রায় ৩৬ টন। ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ড লাইফ ফান্ডের তথ্য অনুযায়ী, এখন বিশ্বে এরকম তিমির সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজার।

প্যাকার্ড বলেন, তিনি এবং তার সহযোগী মিলে তাদের নৌকা নিয়ে শুক্রবার সকালে হেরিং কোভে যান। সেখানে পরিবেশ ছিল চমৎকার এবং পানিতে দৃষ্টিসীমা ছিল প্রায় ২০ ফিট।

স্কুবা গিয়ার নিয়ে নৌকা থেকে পানিতে নেমে ডুব দেয়ার পরেই বিশাল একটা ধাক্কা অনুভব কবেন এবং সবকিছু অন্ধকার হয়ে যায়। তিনি ধারণা করেছিলেন, তিনি হয়তো বিশাল আকৃতির সাদা তিমির হামলার শিকার হয়েছেন, যেগুলো ওই এলাকায় সাঁতরে বেড়ায়। আর তখন তিনি আশেপাশে অনুভব করছিলেন সেখানে কোন দাঁত নেই।

আর তখনই তিনি বুঝলেন, একটা তিমির মুখের ভিতরে চলে গেছেন তিনি। আর এটি তাকে গিলে ফেলার চেষ্টা করছে। তার মনে হচ্ছিল, এটাই শেষ, তিনি মারা যাচ্ছেন।

তিনি বলেন, সেই সময় আমার স্ত্রী আর তার দুই পুত্রের কথা ভাবছিলাম। এরপর হঠাৎ করে এটি পানির ওপরে ভেসে উঠে প্রবলভাবে মাথা নাড়তে লাগলো। আমাকে যেন বাতাসে ছুঁড়ে ফেলা হলো আর আমি আবার পানিতে পড়ে গেলাম। আমি মুক্ত হয়ে পানিতে ভেসে রইলাম। আমি সত্যি বিশ্বাস করতে পারছিলাম না…আমি যেন সেই গল্প বলার জন্যই এখানে রয়েছি, তিনি সাংবাদিকদের এভাবেই বেঁচে আসার ঘটনা বর্ণনা করেন।

তার সহযোগী, যিনি তখন পাগলের মতো পানিতে প্যাকার্ডের অক্সিজেনের বুদবুদ খুঁজে বেড়াচ্ছিলেন, তিনি দ্রুত তাকে ধরে নৌকায় তুলে নেন।

হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর তার এই অবিশ্বাস্য ঘটনার বিস্তারিত জানতে সাংবাদিকরা প্যাকার্ডের কাছে ছুটে যান।

হ্যাম্পব্যাক তিমি সাধারণত মুখ যতটা সম্ভব হা করে মাছ, ক্রিল বা অন্য খাবার খেয়ে থাকে। তবে সমুদ্র বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্যাকার্ডের ক্ষেত্রে যা হয়েছে, তা সম্ভবত একটি দুর্ঘটনা।