ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার চায় রোড সেফটি ফাউন্ডেশন

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ০১:০৩:৫৭ অপরাহ্ন, সোমাবার, ৮ নভেম্বর ২০২১
  • / 235

গণপরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার চেয়ে গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছেন রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নেতারা।

সোমবার (৮ নভেম্বর) এক যৌথ বিবৃতিতে সংগঠনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ আই মাহবুব উদ্দিন আহমেদ, ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, মোহাম্মদ শাজাহান সিদ্দিকী, আব্দুল হামিদ শরীফ এবং নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান বলেছেন, সরকার ডিজেল এবং কেরোসিনের মূল্য ২৩ শতাংশ বৃদ্ধি করলে সড়ক ও নৌ-পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা তেলের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদের নামে ধর্মঘট শুরু করলেও সেটা ছিল মূলত তাদের গণপরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে ধর্মঘট।

কারণ গতকাল তারা সরকারের সঙ্গে বৈঠকে জ্বালানি তেলের মূল্য কমানোর বিষয়ে আলোচনা করেননি, করেছেন ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে আলোচনা। সিএনজির মূল্য বৃদ্ধি না হলেও সিএনজিচালিত গণপরিবহনের মালিক-শ্রমিকরাও ধর্মঘট করেছেন। সরকার তাদের নিয়ন্ত্রণ করেনি বা করতে চায়নি। হঠাৎ এই ধর্মঘটের কারণে দেশের মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন।

বিবৃতিতে তারা বলেন, গণপরিবহন মালিক-শ্রমিকদের ভাড়া বৃদ্ধির দাবির প্রেক্ষাপটে সরকার সড়ক পরিবহনের ভাড়া ২৭ শতাংশ এবং নৌ-পরিবহনের ভাড়া ৩৫ শতাংশ বাড়িয়েছে, যা নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির জনগণের প্রতি সরকারের বৈরি আচরণ ছাড়া কিছুই নয়। এরইমধ্যে গণপরিবহনগুলো সরকার নির্ধারিত বর্ধিত ভাড়ার চেয়ে বেশি হারে প্রায় ৫০ শতাংশ হারে বর্ধিত ভাড়া আদায় শুরু করেছে। অথচ তদারকি বা মনিটরিংয়ের কেউ নেই।

নেতারা বলেন, রাজধানীর গণপরিবহনগুলোর একটি রিবাট অংশ সিএনজিচালিত। এসব গণপরিবহনও বর্ধিত ভাড়া আদায় করছে। অথচ সরকার নীরব দর্শকের ভূমিকায়। আমরা সবসময় দেখে আসছি, দেশে গণপরিবহনসহ সবক্ষেত্রে অনিয়মরোধে বা নিয়ন্ত্রণে সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা চটকদার বক্তব্য ও বিবৃতির মধ্যেই থাকতে পছন্দ করেন। আর নির্মমতার যাঁতাকলে পিষ্ট হয় জনসাধারণ। গতকালই সরকারের একজন মন্ত্রী বললেন, সিএনজিচালিত বাসের ভাড়া বাড়বে না। এখন কথা হলো, কোন বাস ডিজেলচালিত, কোন বাস সিএনজিচালিত-এটা যাত্রীসাধারণ বুঝবে কীভাবে? গণপরিবহনের গায়ে কি লেখা থাকবে? নাকি গাড়িতে ওঠার আগে যাত্রীদের নিজ দায়িত্বে গাড়ির নিচে তাকিয়ে সিলিন্ডার দেখে নিতে হবে? দায়িত্বশীলদের এমন কথাবার্তা খুবই কাণ্ডজ্ঞানহীন এবং বালখিল্যসুলভ।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নেতারা বলেন, বর্তমানে দেশে দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ দুর্বিষহ অবস্থায় দিনাতিপাত করছে। করোনার অভিঘাতে লাখ-লাখ মানুষ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরি হারিয়েছেন। আবার চাকরি ও ব্যবসা-বাণিজ্য থাকলেও বহু মানুষের আয়-রোজগার কমে গেছে। দেশে নতুন করে ৩ কোটি ২৪ লাখ মানুষ দরিদ্র হয়ে পড়েছে। এই চরম দুর্দিনে গণপরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধির ফলে দ্রব্যসামগ্রীর মূল্য আরেক দফা বৃদ্ধিসহ জীবনযাত্রার সর্বক্ষেত্রে ব্যয় বেড়ে যাবে, যা নতুন সংকট তৈরি করবে।

অনেক বাস কোম্পানি ছাত্রদের অর্ধেক ভাড়া বা হাফ পাস গ্রহণ করে না। দরিদ্র ও অভাগা অনেক যাত্রী ভাড়া দিতে না পারলে পরিবহন শ্রমিকরা তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন, মাঝপথে নামিয়ে দেন। এটা খুবই দুঃখজনক। রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নেতারা নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের আর্থিক দুরবস্থার বিষয়টি বিবেচনা করে জ্বালানি তেলে ভর্তুকি দিয়ে হলেও গণপরিবহনের বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহার করতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানায়।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার চায় রোড সেফটি ফাউন্ডেশন

আপডেট : ০১:০৩:৫৭ অপরাহ্ন, সোমাবার, ৮ নভেম্বর ২০২১

গণপরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার চেয়ে গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছেন রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নেতারা।

সোমবার (৮ নভেম্বর) এক যৌথ বিবৃতিতে সংগঠনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ আই মাহবুব উদ্দিন আহমেদ, ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, মোহাম্মদ শাজাহান সিদ্দিকী, আব্দুল হামিদ শরীফ এবং নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান বলেছেন, সরকার ডিজেল এবং কেরোসিনের মূল্য ২৩ শতাংশ বৃদ্ধি করলে সড়ক ও নৌ-পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা তেলের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদের নামে ধর্মঘট শুরু করলেও সেটা ছিল মূলত তাদের গণপরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে ধর্মঘট।

কারণ গতকাল তারা সরকারের সঙ্গে বৈঠকে জ্বালানি তেলের মূল্য কমানোর বিষয়ে আলোচনা করেননি, করেছেন ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে আলোচনা। সিএনজির মূল্য বৃদ্ধি না হলেও সিএনজিচালিত গণপরিবহনের মালিক-শ্রমিকরাও ধর্মঘট করেছেন। সরকার তাদের নিয়ন্ত্রণ করেনি বা করতে চায়নি। হঠাৎ এই ধর্মঘটের কারণে দেশের মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন।

বিবৃতিতে তারা বলেন, গণপরিবহন মালিক-শ্রমিকদের ভাড়া বৃদ্ধির দাবির প্রেক্ষাপটে সরকার সড়ক পরিবহনের ভাড়া ২৭ শতাংশ এবং নৌ-পরিবহনের ভাড়া ৩৫ শতাংশ বাড়িয়েছে, যা নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির জনগণের প্রতি সরকারের বৈরি আচরণ ছাড়া কিছুই নয়। এরইমধ্যে গণপরিবহনগুলো সরকার নির্ধারিত বর্ধিত ভাড়ার চেয়ে বেশি হারে প্রায় ৫০ শতাংশ হারে বর্ধিত ভাড়া আদায় শুরু করেছে। অথচ তদারকি বা মনিটরিংয়ের কেউ নেই।

নেতারা বলেন, রাজধানীর গণপরিবহনগুলোর একটি রিবাট অংশ সিএনজিচালিত। এসব গণপরিবহনও বর্ধিত ভাড়া আদায় করছে। অথচ সরকার নীরব দর্শকের ভূমিকায়। আমরা সবসময় দেখে আসছি, দেশে গণপরিবহনসহ সবক্ষেত্রে অনিয়মরোধে বা নিয়ন্ত্রণে সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা চটকদার বক্তব্য ও বিবৃতির মধ্যেই থাকতে পছন্দ করেন। আর নির্মমতার যাঁতাকলে পিষ্ট হয় জনসাধারণ। গতকালই সরকারের একজন মন্ত্রী বললেন, সিএনজিচালিত বাসের ভাড়া বাড়বে না। এখন কথা হলো, কোন বাস ডিজেলচালিত, কোন বাস সিএনজিচালিত-এটা যাত্রীসাধারণ বুঝবে কীভাবে? গণপরিবহনের গায়ে কি লেখা থাকবে? নাকি গাড়িতে ওঠার আগে যাত্রীদের নিজ দায়িত্বে গাড়ির নিচে তাকিয়ে সিলিন্ডার দেখে নিতে হবে? দায়িত্বশীলদের এমন কথাবার্তা খুবই কাণ্ডজ্ঞানহীন এবং বালখিল্যসুলভ।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নেতারা বলেন, বর্তমানে দেশে দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ দুর্বিষহ অবস্থায় দিনাতিপাত করছে। করোনার অভিঘাতে লাখ-লাখ মানুষ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরি হারিয়েছেন। আবার চাকরি ও ব্যবসা-বাণিজ্য থাকলেও বহু মানুষের আয়-রোজগার কমে গেছে। দেশে নতুন করে ৩ কোটি ২৪ লাখ মানুষ দরিদ্র হয়ে পড়েছে। এই চরম দুর্দিনে গণপরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধির ফলে দ্রব্যসামগ্রীর মূল্য আরেক দফা বৃদ্ধিসহ জীবনযাত্রার সর্বক্ষেত্রে ব্যয় বেড়ে যাবে, যা নতুন সংকট তৈরি করবে।

অনেক বাস কোম্পানি ছাত্রদের অর্ধেক ভাড়া বা হাফ পাস গ্রহণ করে না। দরিদ্র ও অভাগা অনেক যাত্রী ভাড়া দিতে না পারলে পরিবহন শ্রমিকরা তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন, মাঝপথে নামিয়ে দেন। এটা খুবই দুঃখজনক। রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নেতারা নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের আর্থিক দুরবস্থার বিষয়টি বিবেচনা করে জ্বালানি তেলে ভর্তুকি দিয়ে হলেও গণপরিবহনের বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহার করতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানায়।