মোটরসাইকেল ও ইজিবাইক আমদানি-নিবন্ধন বন্ধের দাবি

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট : ০৫:৩৪:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ মে ২০২২
  • / 263
দুর্ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতি কমাতে জরুরি ভিত্তিতে মোটরসাইকেল ও ইজিবাইক আমদানি ও নিবন্ধন বন্ধের সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। এবারে ঈদের সড়কে দুর্ঘটনার সংখ্যা প্রায় ১৫ শতাংশ এবং মৃত্যুর সংখ্যা নিহত ২২ শতাংশ বাড়ার তথ্য দিয়েছেন তারা। সমিতি বলছে, এর বড় কারণ দুই চাকার বেপরোয়া গতির বাহন মোটরসাইকেলের ব্যাপক ব্যবহার।

বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এবারের ঈদযাত্রার পথে দুর্ঘটনার এই পরিসংখ্যান তুলে ধরে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

গত ৩ মে রোজার ঈদ ঘিরে ২৬ এপ্রিল থেকে ১০ মে পর্যন্ত সময়ে সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে প্রকাশিত সংবাদ থেকে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। তাতে দেখা যাচ্ছে, ওই ১৬ দিনে সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ৪১৬ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ৮৪৪ জন।

তাদের হিসাবে ঈদের সড়কের মৃত্যুর এই সংখ্যা গত বছরের ঈদুল ফিতরের সময়ের তুলনায় ২২ দশমিক ৩৫ শতাংশ এবং আহতের সংখ্যা ২৬ দশমিক ৩০ শতাংশ বেশি।

ওই সময়ে ঘটা মোট ৩৭২টি দুর্ঘটনার মধ্যে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা হয়েছে ১৬৪টি, যা মোট সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৪ দশমিক ০৮ শতাংশ।

মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে ১৪৫ জনের, আহত হয়েছেন ১১০ জন। নিহতের এই সংখ্যা মোট মৃত্যুর ৩৪ দশমিক ৮৫ শতাংশ এবং আহতের ১৩ দশমিক ০৩ শতাংশ।

বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক হাদিউজ্জামান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মোটরসাইকেল কখনো গণপরিবহনের বিকল্প হতে পারে না। এবারের ঈদে যারা মোটারসাইকেল ব্যবহার করেছে, তারা রাইড শেয়ারিং নীতিমালা লঙ্ঘন করেছে।

প্রতি বছর ৫ লাখ মোটরসাইকেল বিপণন করে সরকারের ৫ হাজার কোটি টাকা আয় হলেও দুর্ঘটনায় ২০ থেকে ২৫ হাজার কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে।

কোভিড মহামারীর কারণে দুই বছরে মোট চারটি ঈদ কেটেছে কোভিড বিধির নিয়মকানুনে। এবারে সংক্রমণ কমে আসায় পরিবার-স্বজনদের সঙ্গে ঈদের লম্বা ছুটি কাটাতে গ্রামে গেছেন অনেকে। আর সেই যাত্রায় সড়ক, মহাসড়কে, ফেরি পারাপারে মোটরসাইকেলের সংখ্যা ছিল চোখে পড়ার মত।

ঈদের আগেই যাত্রী কল্যাণ সমিতি দুর্ঘটনারোধে মহসড়কে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ, রিকশা, ইজিবাইক ও অটোরিকশা চলাচল বন্ধের দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছিল। তাদের হিসাবে গত দুই বছরে দেশের পরিবহন খাতে ১০ লাখ নতুন মোটরসাইকেল যুক্ত হয়েছে এবং রাস্তায় নেমেছে প্রায় ২০ লাখ ইজিবাইক।

সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক বলেন, আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী ও সরকারের বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থার উল্লেখযোগ্য তৎপরতার কারণে এবার ঈদ যাত্রা খানিকটা স্বস্তিদায়ক হলেও ২৫ লাখ মোটরসাইকেল, ৪০ লাখ ইজিবাইক ঈদের রাস্তায় থাকার কারণে সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েছে।

“সড়ক দুর্ঘটনার এই চিত্রকে একটি প্রতীকী চিত্র বলা চলে। প্রকৃতপক্ষে দেশে বর্তমানে মোটরসাইকেল ও ইজিবাইক ক্যান্সারের মতো বেড়ে যাওয়ার কারণে পঙ্গু হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ১৫০ পঙ্গু রোগী ভর্তি হলেও ঈদের এইসময়ে ২০০ থেকে ২৫০ জন হারে প্রতিদিন রোগী ভর্তি হয়েছে। যার ৬০ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২৫ শতাংশ ইজিবাইক দুর্ঘটনায় শিকার হয়েছে বলে জানা গেছে।

“এছাড়া ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ২’শতাধিক সড়ক দুর্ঘটনায় আক্রান্ত রোগী ভর্তি হচ্ছে। দেশের বিভাগীয় হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ৮০ থেকে ১০০ সড়ক দুর্ঘটনায় আক্রান্ত রোগী ভর্তি হচ্ছে। জেলা সদর হাসপাতালেও আক্রান্ত রোগীর যেধরনের ভয়াবহ চিত্র দেখা যায় প্রকৃতপক্ষে এ ধরনের চিত্র সংবাদপত্রে উঠে আসে না বলেই আমরাও এই ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরতে পারি না।”

যাত্রী কল্যাণ সমিতি দুর্ঘটনার পাঁচটি কারণ শনাক্ত করে সেই তালিকায় শুরুতেই ‘মোটরসাইকেলের ব্যাপক ব্যবহারের কথা উল্লেখ করেছে।

বাকি চারটি করণ হল-

>> জাতীয় মহাসড়কে রোড সাইন বা রোড মার্কিং, সড়কবাতি না থাকায় হঠাৎ ঈদে যাতায়াতকারী ব্যাক্তিগত যানের চালকদের ঝুঁকি নিয়ে রাতে চলতে হয়েছে।

>> জাতীয়, আঞ্চলিক ও ফিডার রোডে টার্নিং চিহ্ন না থাকার ফলে নতুন চালকদের অনেকে এসব সড়কে দুর্ঘটনায় পড়েছেন।

>> মহাসড়কের নির্মাণ ত্রুটি, যানবাহনের ত্রুটি, ট্রাফিক আইন না মানার প্রবণতা।

>> উল্টোপথে যানবাহন চালানো, সড়কে চাঁদাবাজি, পণ্যবাহী যানে যাত্রী পরিবহন, অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, অতিরিক্ত যাত্রী বহন, বেপরোয়া যানবাহন চালানো।

সড়কে দুর্ঘটনার বিস্তারিত পরিসংখ্যান তুলে ধরে সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক বলেন, দুর্ঘটনায় হতাহতদের মধ্যে ৪৭২ জনের পরিচয় শনাক্ত হওয়া গেছে।

তাদের মধ্যে ২০৯ জন চালক, ২৪ জন পরিবহন শ্রমিক, ৮৮ জন পথচারী, ৬২ জন নারী, ৩৫ জন শিশু, ৩৩ জন শিক্ষার্থী ছাড়াও আরও ২ সাংবাদিক, ৮ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ২ শিক্ষক, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ৬ নেতাকর্মী, ২ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং ১ জন চিকিৎসকের পরিচয় মিলেছে।

এবার ঈদযাত্রায় সড়ক, রেল ও নৌপথ মিলিয়ে মো ৪০২টি দুর্ঘটনায় ৪৪৩জন নিহত ও ৮৬৮ জন আহতের পরিংখ্যানও তুলে ধরা হয় সংবাদ সম্মেলনে।

যাত্রী কল্যাণ সমিতি বলছে, এই ১৬ দিনে ঈদযাত্রায় রেলপথে ২৭টি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ২৫ জনের। আর নৌপথে ঘটে যাওয়া ৩ দুর্ঘটনায় দুজন নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছেন ২০ জন।

জরুরি ভিত্তিতে মোটরসাইকেল ও ইজিবাইক আমদানি ও নিবন্ধন বন্ধ করাসহ দুর্ঘটনার প্রতিরোধে কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয় সংবাদ সম্মেলনে।

সেখানে বলা হয়, আঞ্চলিক মহাসড়কে রাতের বেলায় অবাধে চলাচলের জন্য আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করতে হবে। দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ এবং, যানবাহনের ত্রুটি সারানোর উদ্যোগ নেওয়ার পাশাপাশি ধীর গতির যান ও দ্রুতগতির যানের জন্য আলাদা লেনের ব্যবস্থা করা, সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ করা এবং চালকদের বেতন ও কর্মঘণ্টা নিশ্চিত করতে হবে।

এ ছাড়া, সড়কে রোড সাইন, রোড মার্কিং স্থাপন করা, সড়ক পরিবহন আইন যথাযতভাবে বাস্তবায়ন করা, ট্রাফিক আইনের অপপ্রয়োগ রোধ করার ওপরও জোর দিয়েছে সমিতি।

পাশাপাশি গণপরিবহন ব্যবস্থার সম্প্রসারণ, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা এবং মানসম্মত সড়ক নির্মাণ ও মেরামত নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানোনো হয়েছে সংবাদ সম্মেলন থেকে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

মোটরসাইকেল ও ইজিবাইক আমদানি-নিবন্ধন বন্ধের দাবি

আপডেট : ০৫:৩৪:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ মে ২০২২
দুর্ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতি কমাতে জরুরি ভিত্তিতে মোটরসাইকেল ও ইজিবাইক আমদানি ও নিবন্ধন বন্ধের সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। এবারে ঈদের সড়কে দুর্ঘটনার সংখ্যা প্রায় ১৫ শতাংশ এবং মৃত্যুর সংখ্যা নিহত ২২ শতাংশ বাড়ার তথ্য দিয়েছেন তারা। সমিতি বলছে, এর বড় কারণ দুই চাকার বেপরোয়া গতির বাহন মোটরসাইকেলের ব্যাপক ব্যবহার।

বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এবারের ঈদযাত্রার পথে দুর্ঘটনার এই পরিসংখ্যান তুলে ধরে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

গত ৩ মে রোজার ঈদ ঘিরে ২৬ এপ্রিল থেকে ১০ মে পর্যন্ত সময়ে সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে প্রকাশিত সংবাদ থেকে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। তাতে দেখা যাচ্ছে, ওই ১৬ দিনে সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ৪১৬ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ৮৪৪ জন।

তাদের হিসাবে ঈদের সড়কের মৃত্যুর এই সংখ্যা গত বছরের ঈদুল ফিতরের সময়ের তুলনায় ২২ দশমিক ৩৫ শতাংশ এবং আহতের সংখ্যা ২৬ দশমিক ৩০ শতাংশ বেশি।

ওই সময়ে ঘটা মোট ৩৭২টি দুর্ঘটনার মধ্যে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা হয়েছে ১৬৪টি, যা মোট সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৪ দশমিক ০৮ শতাংশ।

মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে ১৪৫ জনের, আহত হয়েছেন ১১০ জন। নিহতের এই সংখ্যা মোট মৃত্যুর ৩৪ দশমিক ৮৫ শতাংশ এবং আহতের ১৩ দশমিক ০৩ শতাংশ।

বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক হাদিউজ্জামান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মোটরসাইকেল কখনো গণপরিবহনের বিকল্প হতে পারে না। এবারের ঈদে যারা মোটারসাইকেল ব্যবহার করেছে, তারা রাইড শেয়ারিং নীতিমালা লঙ্ঘন করেছে।

প্রতি বছর ৫ লাখ মোটরসাইকেল বিপণন করে সরকারের ৫ হাজার কোটি টাকা আয় হলেও দুর্ঘটনায় ২০ থেকে ২৫ হাজার কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে।

কোভিড মহামারীর কারণে দুই বছরে মোট চারটি ঈদ কেটেছে কোভিড বিধির নিয়মকানুনে। এবারে সংক্রমণ কমে আসায় পরিবার-স্বজনদের সঙ্গে ঈদের লম্বা ছুটি কাটাতে গ্রামে গেছেন অনেকে। আর সেই যাত্রায় সড়ক, মহাসড়কে, ফেরি পারাপারে মোটরসাইকেলের সংখ্যা ছিল চোখে পড়ার মত।

ঈদের আগেই যাত্রী কল্যাণ সমিতি দুর্ঘটনারোধে মহসড়কে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ, রিকশা, ইজিবাইক ও অটোরিকশা চলাচল বন্ধের দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছিল। তাদের হিসাবে গত দুই বছরে দেশের পরিবহন খাতে ১০ লাখ নতুন মোটরসাইকেল যুক্ত হয়েছে এবং রাস্তায় নেমেছে প্রায় ২০ লাখ ইজিবাইক।

সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক বলেন, আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী ও সরকারের বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থার উল্লেখযোগ্য তৎপরতার কারণে এবার ঈদ যাত্রা খানিকটা স্বস্তিদায়ক হলেও ২৫ লাখ মোটরসাইকেল, ৪০ লাখ ইজিবাইক ঈদের রাস্তায় থাকার কারণে সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েছে।

“সড়ক দুর্ঘটনার এই চিত্রকে একটি প্রতীকী চিত্র বলা চলে। প্রকৃতপক্ষে দেশে বর্তমানে মোটরসাইকেল ও ইজিবাইক ক্যান্সারের মতো বেড়ে যাওয়ার কারণে পঙ্গু হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ১৫০ পঙ্গু রোগী ভর্তি হলেও ঈদের এইসময়ে ২০০ থেকে ২৫০ জন হারে প্রতিদিন রোগী ভর্তি হয়েছে। যার ৬০ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২৫ শতাংশ ইজিবাইক দুর্ঘটনায় শিকার হয়েছে বলে জানা গেছে।

“এছাড়া ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ২’শতাধিক সড়ক দুর্ঘটনায় আক্রান্ত রোগী ভর্তি হচ্ছে। দেশের বিভাগীয় হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ৮০ থেকে ১০০ সড়ক দুর্ঘটনায় আক্রান্ত রোগী ভর্তি হচ্ছে। জেলা সদর হাসপাতালেও আক্রান্ত রোগীর যেধরনের ভয়াবহ চিত্র দেখা যায় প্রকৃতপক্ষে এ ধরনের চিত্র সংবাদপত্রে উঠে আসে না বলেই আমরাও এই ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরতে পারি না।”

যাত্রী কল্যাণ সমিতি দুর্ঘটনার পাঁচটি কারণ শনাক্ত করে সেই তালিকায় শুরুতেই ‘মোটরসাইকেলের ব্যাপক ব্যবহারের কথা উল্লেখ করেছে।

বাকি চারটি করণ হল-

>> জাতীয় মহাসড়কে রোড সাইন বা রোড মার্কিং, সড়কবাতি না থাকায় হঠাৎ ঈদে যাতায়াতকারী ব্যাক্তিগত যানের চালকদের ঝুঁকি নিয়ে রাতে চলতে হয়েছে।

>> জাতীয়, আঞ্চলিক ও ফিডার রোডে টার্নিং চিহ্ন না থাকার ফলে নতুন চালকদের অনেকে এসব সড়কে দুর্ঘটনায় পড়েছেন।

>> মহাসড়কের নির্মাণ ত্রুটি, যানবাহনের ত্রুটি, ট্রাফিক আইন না মানার প্রবণতা।

>> উল্টোপথে যানবাহন চালানো, সড়কে চাঁদাবাজি, পণ্যবাহী যানে যাত্রী পরিবহন, অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, অতিরিক্ত যাত্রী বহন, বেপরোয়া যানবাহন চালানো।

সড়কে দুর্ঘটনার বিস্তারিত পরিসংখ্যান তুলে ধরে সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক বলেন, দুর্ঘটনায় হতাহতদের মধ্যে ৪৭২ জনের পরিচয় শনাক্ত হওয়া গেছে।

তাদের মধ্যে ২০৯ জন চালক, ২৪ জন পরিবহন শ্রমিক, ৮৮ জন পথচারী, ৬২ জন নারী, ৩৫ জন শিশু, ৩৩ জন শিক্ষার্থী ছাড়াও আরও ২ সাংবাদিক, ৮ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ২ শিক্ষক, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ৬ নেতাকর্মী, ২ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং ১ জন চিকিৎসকের পরিচয় মিলেছে।

এবার ঈদযাত্রায় সড়ক, রেল ও নৌপথ মিলিয়ে মো ৪০২টি দুর্ঘটনায় ৪৪৩জন নিহত ও ৮৬৮ জন আহতের পরিংখ্যানও তুলে ধরা হয় সংবাদ সম্মেলনে।

যাত্রী কল্যাণ সমিতি বলছে, এই ১৬ দিনে ঈদযাত্রায় রেলপথে ২৭টি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ২৫ জনের। আর নৌপথে ঘটে যাওয়া ৩ দুর্ঘটনায় দুজন নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছেন ২০ জন।

জরুরি ভিত্তিতে মোটরসাইকেল ও ইজিবাইক আমদানি ও নিবন্ধন বন্ধ করাসহ দুর্ঘটনার প্রতিরোধে কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয় সংবাদ সম্মেলনে।

সেখানে বলা হয়, আঞ্চলিক মহাসড়কে রাতের বেলায় অবাধে চলাচলের জন্য আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করতে হবে। দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ এবং, যানবাহনের ত্রুটি সারানোর উদ্যোগ নেওয়ার পাশাপাশি ধীর গতির যান ও দ্রুতগতির যানের জন্য আলাদা লেনের ব্যবস্থা করা, সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ করা এবং চালকদের বেতন ও কর্মঘণ্টা নিশ্চিত করতে হবে।

এ ছাড়া, সড়কে রোড সাইন, রোড মার্কিং স্থাপন করা, সড়ক পরিবহন আইন যথাযতভাবে বাস্তবায়ন করা, ট্রাফিক আইনের অপপ্রয়োগ রোধ করার ওপরও জোর দিয়েছে সমিতি।

পাশাপাশি গণপরিবহন ব্যবস্থার সম্প্রসারণ, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা এবং মানসম্মত সড়ক নির্মাণ ও মেরামত নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানোনো হয়েছে সংবাদ সম্মেলন থেকে।