সেই পুরানো রূপে নারায়ণগঞ্জ!

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ০১:১৮:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • / 152

আবার সেই পুরানো রূপে ফিরেছে নারায়ণগঞ্জ। সড়কে যানজট, মার্কেট, ফুটপাত, যানবাহন সর্বত্রই ভীড়। কোথাও নেই স্বাস্থ্যবিধি। করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে লকডাউন তুলে নেয়ার পর যেখানে স্বাস্থ্যবিধিই ভরসা সেখানে মাস্ক বিহীন চলাচল করছে অগনিত মানুষ। লকডাউন চলাকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় সরকারের বিধি-নিষেধ বাস্তবায়িত হলেও স্বাস্থ্যবিধি এখন কাগজে-কলমেই, নেই বাস্তব প্রয়োগ।

সরেজমিনে নারায়ণগঞ্জ শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সড়ক ও গণপরিবহনসহ বিভিন্ন মার্কেটগুলোতে স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই।

বুধবার (২৫ আগষ্ট) শহরের চাষাড়া এলাকায় দেখা গেছে, পথচারীদের অধিকাংশের মুখে নেই মাস্ক। কারও থুতনিতে মাস্ক ঝুলানো, কেউবা হাতে রেখে দিয়েছেন, কেউবা গলায়, আবার কেউ কানে ঝুলিয়ে রেখেছেন। করোনার ভীতি, নেই কোন শঙ্কা। অথচ এসব দেখারও যেন কেউ নেই।

করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ছুটোছুটি করলেও বিষয়টি যেন মানুষের মধ্যে শঙ্কার সৃষ্টি করছে না। জীবন-জীবিকাকে গুরুত্ব দিলেও জীবন বাঁচানোর সুরক্ষায় মাস্ক ব্যবহারে উদাসীন তারা। শপিংমলে কিংবা মার্কেটে ৮০ ভাগ ক্রেতা-বিক্রেতার মাঝে দেখা যায়নি মাস্কের ব্যবহার। গণপরিবহনে যাত্রীসহ পরিবহনের চালক, হেলপাদেরও একই অবস্থা।

নগরীর ১নং গেট এলাকার যানবাহন গুলোতে যারা উঠছেন কিংবা নামছেন, তাদের অনেকের মুখে মাস্ক নেই। এ ছাড়া অধিকাংশ বাসের হেলপার ও চালকদের মুখে ছিল না মাস্ক। বাঁধন পরিবহনের একজন চালকের মুখে মাস্ক না থাকার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এমনিতে যানজটের মধ্যে গরমে থাকতে হয়। আর এমনি গরম, মাস্ক পড়লে আরো গরম লাগে, সে জন্য খুলে রাখছি।’

কালিবাজার ফ্রেন্ডস মার্কেট ও ডিআইটি মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতা-বিক্রেতা অনেকের মুখে মাস্ক নেই। কেনাকাটা করতে আসা আফসানা বেগম বলেন, ‘অনেকে মাস্ক না পরে ঘোরাফেরা করছেন। এটা ঠিক নয়। কারণ, ভাইরাস কিভাবে ছড়ায়, তা বলা যায় না। নিজেদেরই সচেতন থাকতে হবে।’অপর একজন রেদোয়ান আহমেদের মুখে ছিল না মাস্ক। কেন মাস্ক পরেননি জানতে তিনি বলেন, ‘বাসা থেকে বের হওয়ার সময় মাস্ক আনতে ভুলে গেছি।’

চাষাড়ার শপিংমল গুলো ঘুরে দেখা যায়, এসব শপিংমল ও মার্কেটে যারা এসেছেন তাদের বেশিরভাগের মুখে মাস্ক ছিল না। এছাড়া স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সমবায় মার্কেট, সায়াম প্লাজা, পারোনামা প্লাজা, হক প্লাজা, মার্ক টাওয়ার, জামান টাওয়ারে ছিলো না কর্তৃপক্ষের কোনও তৎপরতা। মার্কেটগুলোর সামনে এখন আর চোখে পড়ে না জীবানুনাশক টানেলের। দুই-একটিতে টানেল থাকলেও তা অকেজো বা ব্যবহার করা হচ্ছে না। এছাড়া নগরের অলিগলির চায়ের দোকানসহ সড়কে অন্যান্য খাবারের দোকান গুলোতে জমজমাট আড্ডা জমে। এসব স্থানের মানুষের মাঝে নেই স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই।

এব্যাপারে জেলা সিভিল সার্জন মোঃ ইমতিয়াজ বলেন, সরকারী প্রজ্ঞাপন অনুসারে সবাইকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে হবে। লকডাউন তুলে নেয়ার পর এটাই এখন করোনা থেকে বাঁচার একমাত্র উপায়। স্বাস্থ্য বিধি না মানা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এব্যাপারে জেলা প্রশাসন কাজ করছে। তবে নিজেদের আরও বেশী সচেতন হতে হবে।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের সর্বশেষ তথ্য অনুসারে গত ২৪ ঘন্টায় নারায়ণগঞ্জে করোনায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৮২ জন।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

সেই পুরানো রূপে নারায়ণগঞ্জ!

আপডেট : ০১:১৮:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২১

আবার সেই পুরানো রূপে ফিরেছে নারায়ণগঞ্জ। সড়কে যানজট, মার্কেট, ফুটপাত, যানবাহন সর্বত্রই ভীড়। কোথাও নেই স্বাস্থ্যবিধি। করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে লকডাউন তুলে নেয়ার পর যেখানে স্বাস্থ্যবিধিই ভরসা সেখানে মাস্ক বিহীন চলাচল করছে অগনিত মানুষ। লকডাউন চলাকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় সরকারের বিধি-নিষেধ বাস্তবায়িত হলেও স্বাস্থ্যবিধি এখন কাগজে-কলমেই, নেই বাস্তব প্রয়োগ।

সরেজমিনে নারায়ণগঞ্জ শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সড়ক ও গণপরিবহনসহ বিভিন্ন মার্কেটগুলোতে স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই।

বুধবার (২৫ আগষ্ট) শহরের চাষাড়া এলাকায় দেখা গেছে, পথচারীদের অধিকাংশের মুখে নেই মাস্ক। কারও থুতনিতে মাস্ক ঝুলানো, কেউবা হাতে রেখে দিয়েছেন, কেউবা গলায়, আবার কেউ কানে ঝুলিয়ে রেখেছেন। করোনার ভীতি, নেই কোন শঙ্কা। অথচ এসব দেখারও যেন কেউ নেই।

করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ছুটোছুটি করলেও বিষয়টি যেন মানুষের মধ্যে শঙ্কার সৃষ্টি করছে না। জীবন-জীবিকাকে গুরুত্ব দিলেও জীবন বাঁচানোর সুরক্ষায় মাস্ক ব্যবহারে উদাসীন তারা। শপিংমলে কিংবা মার্কেটে ৮০ ভাগ ক্রেতা-বিক্রেতার মাঝে দেখা যায়নি মাস্কের ব্যবহার। গণপরিবহনে যাত্রীসহ পরিবহনের চালক, হেলপাদেরও একই অবস্থা।

নগরীর ১নং গেট এলাকার যানবাহন গুলোতে যারা উঠছেন কিংবা নামছেন, তাদের অনেকের মুখে মাস্ক নেই। এ ছাড়া অধিকাংশ বাসের হেলপার ও চালকদের মুখে ছিল না মাস্ক। বাঁধন পরিবহনের একজন চালকের মুখে মাস্ক না থাকার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এমনিতে যানজটের মধ্যে গরমে থাকতে হয়। আর এমনি গরম, মাস্ক পড়লে আরো গরম লাগে, সে জন্য খুলে রাখছি।’

কালিবাজার ফ্রেন্ডস মার্কেট ও ডিআইটি মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতা-বিক্রেতা অনেকের মুখে মাস্ক নেই। কেনাকাটা করতে আসা আফসানা বেগম বলেন, ‘অনেকে মাস্ক না পরে ঘোরাফেরা করছেন। এটা ঠিক নয়। কারণ, ভাইরাস কিভাবে ছড়ায়, তা বলা যায় না। নিজেদেরই সচেতন থাকতে হবে।’অপর একজন রেদোয়ান আহমেদের মুখে ছিল না মাস্ক। কেন মাস্ক পরেননি জানতে তিনি বলেন, ‘বাসা থেকে বের হওয়ার সময় মাস্ক আনতে ভুলে গেছি।’

চাষাড়ার শপিংমল গুলো ঘুরে দেখা যায়, এসব শপিংমল ও মার্কেটে যারা এসেছেন তাদের বেশিরভাগের মুখে মাস্ক ছিল না। এছাড়া স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সমবায় মার্কেট, সায়াম প্লাজা, পারোনামা প্লাজা, হক প্লাজা, মার্ক টাওয়ার, জামান টাওয়ারে ছিলো না কর্তৃপক্ষের কোনও তৎপরতা। মার্কেটগুলোর সামনে এখন আর চোখে পড়ে না জীবানুনাশক টানেলের। দুই-একটিতে টানেল থাকলেও তা অকেজো বা ব্যবহার করা হচ্ছে না। এছাড়া নগরের অলিগলির চায়ের দোকানসহ সড়কে অন্যান্য খাবারের দোকান গুলোতে জমজমাট আড্ডা জমে। এসব স্থানের মানুষের মাঝে নেই স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই।

এব্যাপারে জেলা সিভিল সার্জন মোঃ ইমতিয়াজ বলেন, সরকারী প্রজ্ঞাপন অনুসারে সবাইকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে হবে। লকডাউন তুলে নেয়ার পর এটাই এখন করোনা থেকে বাঁচার একমাত্র উপায়। স্বাস্থ্য বিধি না মানা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এব্যাপারে জেলা প্রশাসন কাজ করছে। তবে নিজেদের আরও বেশী সচেতন হতে হবে।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের সর্বশেষ তথ্য অনুসারে গত ২৪ ঘন্টায় নারায়ণগঞ্জে করোনায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৮২ জন।