ঢাকা ০১:১০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পুরান ঢাকার রাসায়নিক গুদামের তালিকা চেয়েছে হাইকোর্ট

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ০২:০৭:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • / 130
পুরান ঢাকায় কয়টি ভবনে রাসায়নিক দ্রব্যের গুদাম রয়েছে তার তালিকা দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে শ্যামপুর ও টঙ্গীতে অস্থায়ী এবং মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে স্থায়ী ‘কেমিক্যাল পল্লী’ স্থাপনের অগ্রগতির প্রতিবেদনও দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আগামী ১৭ এপ্রিলের মধ্যে মধ্যে সংশ্লিষ্টদের এসব তথ্য দাখিল করতে বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার একটি রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন। শিল্পসচিব, পরিবেশ সচিব, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র, রাজউক চেয়ারম্যান, ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও বিস্ফোরক পরিদপ্তরের প্রধান বিস্ফোরক পরিদর্শকের প্রতি এই নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এর সঙ্গে পুরান ঢাকায় অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা, সরু গলি প্রশস্তকরণ বিষয়ে উদ্যোগের বিষয়ে জানতেও রুল জারি করেছেন আদালত। এছাড়া আবাসিক ভবনে কেমিক্যাল গোডাউন ভাড়া দেয়া বাড়ির মালিকদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়েও রুল জারি করা হয়েছে।

এর আগে পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিক দ্রব্যের গুদাম, কারখানা ও দোকান সরাতে এবং রাসায়নিক সংরক্ষণে পর্যাপ্ত ও কার্যকর নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ ঢাকার অন্যত্র পল্লি স্থাপনসহ কয়েকটি বিষয়ে নির্দেশনা চেয়ে গত বছরের ১১ নভেম্বরে পাঁচটি পরিবেশবাদী ও মানবাধিকার সংগঠন এবং চুড়িহাট্টার অগ্নিকাণ্ডে নিহত দুটি পরিবারের সদস্যরা ওই রিট করেন।

রিট আবেদনকারীরা হচ্ছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট, নিজেরা করি, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, আইন ও সালিশ কেন্দ্র এবং চুড়িহাট্টার অগ্নিকাণ্ডে নিহত দুই ব্যক্তির পরিবারের সদস্য মোছা. ফাতেমা আক্তার ও মো. নাসির উদ্দিন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস।

২০১০ সালের ৩ জুন পুরান ঢাকার নিমতলীতে অগ্নিকাণ্ডে ১২৪ জনের মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় সরকারের গঠিত তদন্ত কমিটি কয়েকটি সুপারিশ করেছিল। কমিটির সুপারিশ অনুসারে অনুমোদনহীন রাসায়নিকের গুদাম, কারখানার মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। পুরান ঢাকায় পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ ও হাইড্রেন্ট পয়েন্ট স্থাপন এবং রাস্তা প্রশস্ত করার বিষয়ে মাস্টারপ্ল্যানের সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, সে বিষয়েও রুল হয়েছে।

এ বিষয়ে আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, নিমতলীর ঘটনার পর ২০১৯ সালে পুরান ঢাকার চুড়িহাট্টার অগ্নিকাণ্ডে ৭১ জন নিহত ও অনেকে আহত হন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার লক্ষ্যে বেসরকারি ব্যাংকগুলো ৩০ কোটি টাকা প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে প্রদান করে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার এখনও ক্ষতিপূরণ পায়নি।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

পুরান ঢাকার রাসায়নিক গুদামের তালিকা চেয়েছে হাইকোর্ট

আপডেট : ০২:০৭:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২২
পুরান ঢাকায় কয়টি ভবনে রাসায়নিক দ্রব্যের গুদাম রয়েছে তার তালিকা দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে শ্যামপুর ও টঙ্গীতে অস্থায়ী এবং মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে স্থায়ী ‘কেমিক্যাল পল্লী’ স্থাপনের অগ্রগতির প্রতিবেদনও দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আগামী ১৭ এপ্রিলের মধ্যে মধ্যে সংশ্লিষ্টদের এসব তথ্য দাখিল করতে বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার একটি রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন। শিল্পসচিব, পরিবেশ সচিব, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র, রাজউক চেয়ারম্যান, ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও বিস্ফোরক পরিদপ্তরের প্রধান বিস্ফোরক পরিদর্শকের প্রতি এই নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এর সঙ্গে পুরান ঢাকায় অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা, সরু গলি প্রশস্তকরণ বিষয়ে উদ্যোগের বিষয়ে জানতেও রুল জারি করেছেন আদালত। এছাড়া আবাসিক ভবনে কেমিক্যাল গোডাউন ভাড়া দেয়া বাড়ির মালিকদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়েও রুল জারি করা হয়েছে।

এর আগে পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিক দ্রব্যের গুদাম, কারখানা ও দোকান সরাতে এবং রাসায়নিক সংরক্ষণে পর্যাপ্ত ও কার্যকর নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ ঢাকার অন্যত্র পল্লি স্থাপনসহ কয়েকটি বিষয়ে নির্দেশনা চেয়ে গত বছরের ১১ নভেম্বরে পাঁচটি পরিবেশবাদী ও মানবাধিকার সংগঠন এবং চুড়িহাট্টার অগ্নিকাণ্ডে নিহত দুটি পরিবারের সদস্যরা ওই রিট করেন।

রিট আবেদনকারীরা হচ্ছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট, নিজেরা করি, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, আইন ও সালিশ কেন্দ্র এবং চুড়িহাট্টার অগ্নিকাণ্ডে নিহত দুই ব্যক্তির পরিবারের সদস্য মোছা. ফাতেমা আক্তার ও মো. নাসির উদ্দিন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস।

২০১০ সালের ৩ জুন পুরান ঢাকার নিমতলীতে অগ্নিকাণ্ডে ১২৪ জনের মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় সরকারের গঠিত তদন্ত কমিটি কয়েকটি সুপারিশ করেছিল। কমিটির সুপারিশ অনুসারে অনুমোদনহীন রাসায়নিকের গুদাম, কারখানার মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। পুরান ঢাকায় পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ ও হাইড্রেন্ট পয়েন্ট স্থাপন এবং রাস্তা প্রশস্ত করার বিষয়ে মাস্টারপ্ল্যানের সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, সে বিষয়েও রুল হয়েছে।

এ বিষয়ে আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, নিমতলীর ঘটনার পর ২০১৯ সালে পুরান ঢাকার চুড়িহাট্টার অগ্নিকাণ্ডে ৭১ জন নিহত ও অনেকে আহত হন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার লক্ষ্যে বেসরকারি ব্যাংকগুলো ৩০ কোটি টাকা প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে প্রদান করে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার এখনও ক্ষতিপূরণ পায়নি।