ঢাকা ০৪:৫৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চোরাই ট্রাক নিয়ে তারা ডাকাতি করতো

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ১১:০৯:৪৩ পূর্বাহ্ন, সোমাবার, ২২ নভেম্বর ২০২১
  • / 125
বগুড়ার গাবতলীতে নৈশ প্রহরীদের হাত-পা বেঁধে তিন মার্কেটে ডাকাতির ঘটনায় ডাকাত দলের দলনেতা দেলোয়ার হোসেনসহ দলের ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

র‍্যাব জানায়, ডাকাত দল ও ডাকাতির মালামাল পরিবহনের জন্য তারা একটি ট্রাক চুরি করে। ট্রাকের নাম্বার প্লেট পরিবর্তন করে সেই ট্রাক দিয়েই বিভিন্ন সময়ে ডাকাতি করেছে চক্রটি।

গ্রেপ্তাররা হলেন, দলনেতা মো. দেলোয়ার হোসেন (৩৫), মো. আব্দুল হালিম মিয়া জুয়েল (২৮), আলী হোসেন (৫৬), মো. সুমন মুন্সি (২০) ও মো. হুমায়ুন কবির (৩৫)।

অভিযানের সময় ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি ম্যাগাজিনসহ পিস্তল, চার রাউন্ড গুলি, একটি বোল্ট কাটার, দুটি রাম দা, তিনটি শাবল, দুটি ছুরি, একটি কাঁচি, ১০টি লাঠি, একটি হাতুড়ি, একটি টর্চ লাইট ও একটি ট্রাক জব্দ করা হয়।

ঘটনার তদন্তে ও রোববার ঢাকার আশুলিয়া এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতির সময় এই চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর এসব তথ্য পেয়েছে র‍্যাব।

সোমবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজার মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানান র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

র‍্যাব মুখপাত্র মঈন বলেন, বগুড়ায় ডাকাতির ঘটনায় দোকানের মালিকদের পক্ষ থেকে ঘটনার পরদিন গাবতলী থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে ডাকাতি মামলা করা হয়। দুর্ধর্ষ ও সুপরিকল্পিত ডাকাতির ঘটনাটি এলাকায় স্থানীয় ব্যবসায়ী ও জনগণের মধ্যে ব্যাপক ভীতি ও ত্রাস সৃষ্টি করে। ঘটনাটি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রচার হওয়ায় আলোড়ন সৃষ্টি হয়।

তিনি বলেন, ঘটনাস্থলে প্রাথমিক তদন্ত, সিসিটিভি ফুটেজ ও নৈশপ্রহরীদের জিজ্ঞাসাবাদের সূত্র ধরেই সংঘবদ্ধ ডাকাতদলকে শনাক্ত করা হয়।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, চক্রটি বিভিন্ন পেশার আড়ালে ডাকাতি করে আসছিল। ডাকাতির মালামাল বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করে তারা আত্মগোপনে চলে যেত। এরা পেশাদার ডাকাত।

গ্রেপ্তার দেলোয়ার হোসেন সম্পর্কে র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, দেলোয়ার এই ডাকাত দলের সরদার। জিজ্ঞাসাবাদে দেলোয়ার স্বীকার করেছে, ৬ থেকে ৭ বছর ধরে সে ডাকাতি করছে। ডাকাতির আগে সে তার দলের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ও পরিকল্পনা মোতাবেক বিভিন্ন জায়গায় ডাকাতি করে। এর আগেও তারা মানিকগঞ্জ, কালামপুর, বগুড়া, টাঙ্গাইল, সিংগাইর, ঢাকা ও সিরাজগঞ্জসহ বিভিন্ন জায়গায় দলবদ্ধভাবে ডাকাতি করেছে। তার নামে টাঙ্গাইলের বিভিন্ন থানায় চারটি ডাকাতিসহ চুরি ও মাদকের মামলা রয়েছে।

গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে র‍্যাব কর্মকর্তা মঈন জানান, ডাকাত দল ও ডাকাতির মালামাল পরিবহনের জন্য গ্রেপ্তার হুমায়ুন কবির একটি ট্রাক সরবরাহ করে।

জিজ্ঞাসাবাদে কবির স্বীকার করেছে, ডাকাতির কাজে ব্যবহার করার উদ্দেশ্যেই সে এই ট্রাকটি চুরি করে। এরপর এই ট্রাক দিয়ে তারা ডাকাতি করেছে। তার নামে ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা থানায় ডাকাতির একটি মামলা রয়েছে।

এছাড়াও গ্রেপ্তার আলী হোসেন, আব্দুল হালিম ও সুমন মুন্সি দুর্গাহাটা বাজারে ডাকাতিতে অংশ নেয়। ডাকাতিকালে বিভিন্ন দোকানের তালা ভাঙ্গা, মালামাল বস্তায় লোড ও সর্বশেষ ট্রাক লোডের কাজে সহায়তা করে।

জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, ডাকাতদলের সরদার দেলোয়ারের নেতৃত্বে আগেও তারা একাধিক স্থানে ডাকাতি করেছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ডাকাতি ও চুরির একাধিক মামলা রয়েছে। আন্তঃজেলা ডাকাত দলের পলাতক অন্যান্য সদস্যদের গ্রেপ্তার ও লুণ্ঠনকৃত অবশিষ্ট মালামাল উদ্ধারে অভিযান চলমান রয়েছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গত কোরবানির ঈদে গরুর ট্রাকে ডাকাতির ঘটনায় তাদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। এসব ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে তারা ডাকাতির কাজ করে আসছিল।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

চোরাই ট্রাক নিয়ে তারা ডাকাতি করতো

আপডেট : ১১:০৯:৪৩ পূর্বাহ্ন, সোমাবার, ২২ নভেম্বর ২০২১
বগুড়ার গাবতলীতে নৈশ প্রহরীদের হাত-পা বেঁধে তিন মার্কেটে ডাকাতির ঘটনায় ডাকাত দলের দলনেতা দেলোয়ার হোসেনসহ দলের ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

র‍্যাব জানায়, ডাকাত দল ও ডাকাতির মালামাল পরিবহনের জন্য তারা একটি ট্রাক চুরি করে। ট্রাকের নাম্বার প্লেট পরিবর্তন করে সেই ট্রাক দিয়েই বিভিন্ন সময়ে ডাকাতি করেছে চক্রটি।

গ্রেপ্তাররা হলেন, দলনেতা মো. দেলোয়ার হোসেন (৩৫), মো. আব্দুল হালিম মিয়া জুয়েল (২৮), আলী হোসেন (৫৬), মো. সুমন মুন্সি (২০) ও মো. হুমায়ুন কবির (৩৫)।

অভিযানের সময় ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি ম্যাগাজিনসহ পিস্তল, চার রাউন্ড গুলি, একটি বোল্ট কাটার, দুটি রাম দা, তিনটি শাবল, দুটি ছুরি, একটি কাঁচি, ১০টি লাঠি, একটি হাতুড়ি, একটি টর্চ লাইট ও একটি ট্রাক জব্দ করা হয়।

ঘটনার তদন্তে ও রোববার ঢাকার আশুলিয়া এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতির সময় এই চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর এসব তথ্য পেয়েছে র‍্যাব।

সোমবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজার মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানান র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

র‍্যাব মুখপাত্র মঈন বলেন, বগুড়ায় ডাকাতির ঘটনায় দোকানের মালিকদের পক্ষ থেকে ঘটনার পরদিন গাবতলী থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে ডাকাতি মামলা করা হয়। দুর্ধর্ষ ও সুপরিকল্পিত ডাকাতির ঘটনাটি এলাকায় স্থানীয় ব্যবসায়ী ও জনগণের মধ্যে ব্যাপক ভীতি ও ত্রাস সৃষ্টি করে। ঘটনাটি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রচার হওয়ায় আলোড়ন সৃষ্টি হয়।

তিনি বলেন, ঘটনাস্থলে প্রাথমিক তদন্ত, সিসিটিভি ফুটেজ ও নৈশপ্রহরীদের জিজ্ঞাসাবাদের সূত্র ধরেই সংঘবদ্ধ ডাকাতদলকে শনাক্ত করা হয়।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, চক্রটি বিভিন্ন পেশার আড়ালে ডাকাতি করে আসছিল। ডাকাতির মালামাল বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করে তারা আত্মগোপনে চলে যেত। এরা পেশাদার ডাকাত।

গ্রেপ্তার দেলোয়ার হোসেন সম্পর্কে র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, দেলোয়ার এই ডাকাত দলের সরদার। জিজ্ঞাসাবাদে দেলোয়ার স্বীকার করেছে, ৬ থেকে ৭ বছর ধরে সে ডাকাতি করছে। ডাকাতির আগে সে তার দলের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ও পরিকল্পনা মোতাবেক বিভিন্ন জায়গায় ডাকাতি করে। এর আগেও তারা মানিকগঞ্জ, কালামপুর, বগুড়া, টাঙ্গাইল, সিংগাইর, ঢাকা ও সিরাজগঞ্জসহ বিভিন্ন জায়গায় দলবদ্ধভাবে ডাকাতি করেছে। তার নামে টাঙ্গাইলের বিভিন্ন থানায় চারটি ডাকাতিসহ চুরি ও মাদকের মামলা রয়েছে।

গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে র‍্যাব কর্মকর্তা মঈন জানান, ডাকাত দল ও ডাকাতির মালামাল পরিবহনের জন্য গ্রেপ্তার হুমায়ুন কবির একটি ট্রাক সরবরাহ করে।

জিজ্ঞাসাবাদে কবির স্বীকার করেছে, ডাকাতির কাজে ব্যবহার করার উদ্দেশ্যেই সে এই ট্রাকটি চুরি করে। এরপর এই ট্রাক দিয়ে তারা ডাকাতি করেছে। তার নামে ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা থানায় ডাকাতির একটি মামলা রয়েছে।

এছাড়াও গ্রেপ্তার আলী হোসেন, আব্দুল হালিম ও সুমন মুন্সি দুর্গাহাটা বাজারে ডাকাতিতে অংশ নেয়। ডাকাতিকালে বিভিন্ন দোকানের তালা ভাঙ্গা, মালামাল বস্তায় লোড ও সর্বশেষ ট্রাক লোডের কাজে সহায়তা করে।

জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, ডাকাতদলের সরদার দেলোয়ারের নেতৃত্বে আগেও তারা একাধিক স্থানে ডাকাতি করেছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ডাকাতি ও চুরির একাধিক মামলা রয়েছে। আন্তঃজেলা ডাকাত দলের পলাতক অন্যান্য সদস্যদের গ্রেপ্তার ও লুণ্ঠনকৃত অবশিষ্ট মালামাল উদ্ধারে অভিযান চলমান রয়েছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গত কোরবানির ঈদে গরুর ট্রাকে ডাকাতির ঘটনায় তাদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। এসব ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে তারা ডাকাতির কাজ করে আসছিল।