ঢাকা ০৬:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইউরোপের নামে পাঠাত ভারত, নিত ১৫ লাখ!

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ১২:৫৪:০২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২১
  • / 135
রাজধানীর মিরপুর থেকে সংঘবদ্ধ মানবপাচারকারী চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। র‍্যাব বলছে, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে অস্ট্রেলিয়া এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বেশি বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখায়। এরপর বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাচার করে। শুরুতে এদের থেকে ১২-১৫ লাখ পর্যন্ত নেয়। ভারতে আটকে তাদের পরিবারের কাছ থেকে পুনরায় মুক্তিপণ হিসেবে ১৫-২০ লাখ টাকা আদায় করে চক্রটি।

মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর কাওরান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক ও ডিআইজি মোজাম্মেল হক।

গ্রেপ্তাররা হলো- এই চক্রের বাংলাদেশের হোতা মল্লিক রেজাউল হক ওরফে সেলিম (৬২), তার সহযোগী মো. বুলবুল আহমেদ মল্লিক (৫৫) ও নিরঞ্জন পাল (৫১)। তাদের কাছ থেকে ভুয়া পাসপোর্ট, নকল ভিসা ও বিভিন্ন দলিলপত্র উদ্ধার করা হয়।

ডিআইজি মোজাম্মেল হক বলেন, গত বছরের নভেম্বর মাসে অস্ট্রেলিয়ায় পাঠানোর কথা বলে জাহাঙ্গীর নামে একজনকে ভারতে পাচার করে চক্রটি। পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় তাকে বেশ কিছুদিন আটকে রাখে চক্রটি।

তিনি জানান, আটক অবস্থায় জাহাঙ্গীরকে কলকাতার টর্চার সেলে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন ও মৃত্যুর ভয় দেখানো হয়। এসময় বাংলাদেশে থাকা তার পরিবারের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করে পাচারকারী চক্র। সেখান থেকে কৌশলে দেশে পালিয়ে আসেন জাহাঙ্গীর। এরপর তিনি মানবপাচার চক্রের বিরুদ্ধে র‌্যাব-৪-এ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

র‍্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, তার অভিযোগের পর র‌্যাব তদন্ত শুরু করে। রাজধানীর মিরপুর পল্লবী ও উত্তরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে মানবপাচার চক্রের মূলহোতাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

তিনি আরও জানান, দেশে তাদের আরও ৫-৭ জন সহযোগী রয়েছে। এছাড়া ভারতেও তাদের বেশ কয়েকজন সহযোগী রয়েছে। ইতোমধ্যে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কলকাতার রাজিব খান, মানিক এবং দিল্লির রবিন সিং নামে কয়েকজনের পরিচয় পাওয়া গেছে।

তিনি বলেন, গেল কয়েক বছর ধরে এই চক্রটি সক্রিয়ভাবে মানব পাচারের মত অপরাধ করে আসছে। এই চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বিদেশে গমন প্রত্যাশী নিরীহ মানুষকে টার্গেট করে। তাদের অস্ট্রেলিয়া এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশে উচ্চ বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখায়। মূলত তাদের বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাচার করা হয়।

র‍্যাব আরও জানায়, ভারত থেকে ইউরোপের ভিসা সহজ বলে তাদের প্রথমে ভারতে নেয়া হয়। তবে সেখান থেকে তাদের আর ইউরোপে পাঠানো হয় না। ভারতে আটকে রেখে তাদের নির্যাতন করা হয়। পরে বাংলাদেশে থাকা তাদের স্বজনদের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করে চক্রটি।

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বেশ কয়েকটি এলাকায় সক্রিয় রয়েছে চক্রটি।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ইউরোপের নামে পাঠাত ভারত, নিত ১৫ লাখ!

আপডেট : ১২:৫৪:০২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২১
রাজধানীর মিরপুর থেকে সংঘবদ্ধ মানবপাচারকারী চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। র‍্যাব বলছে, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে অস্ট্রেলিয়া এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বেশি বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখায়। এরপর বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাচার করে। শুরুতে এদের থেকে ১২-১৫ লাখ পর্যন্ত নেয়। ভারতে আটকে তাদের পরিবারের কাছ থেকে পুনরায় মুক্তিপণ হিসেবে ১৫-২০ লাখ টাকা আদায় করে চক্রটি।

মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর কাওরান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক ও ডিআইজি মোজাম্মেল হক।

গ্রেপ্তাররা হলো- এই চক্রের বাংলাদেশের হোতা মল্লিক রেজাউল হক ওরফে সেলিম (৬২), তার সহযোগী মো. বুলবুল আহমেদ মল্লিক (৫৫) ও নিরঞ্জন পাল (৫১)। তাদের কাছ থেকে ভুয়া পাসপোর্ট, নকল ভিসা ও বিভিন্ন দলিলপত্র উদ্ধার করা হয়।

ডিআইজি মোজাম্মেল হক বলেন, গত বছরের নভেম্বর মাসে অস্ট্রেলিয়ায় পাঠানোর কথা বলে জাহাঙ্গীর নামে একজনকে ভারতে পাচার করে চক্রটি। পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় তাকে বেশ কিছুদিন আটকে রাখে চক্রটি।

তিনি জানান, আটক অবস্থায় জাহাঙ্গীরকে কলকাতার টর্চার সেলে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন ও মৃত্যুর ভয় দেখানো হয়। এসময় বাংলাদেশে থাকা তার পরিবারের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করে পাচারকারী চক্র। সেখান থেকে কৌশলে দেশে পালিয়ে আসেন জাহাঙ্গীর। এরপর তিনি মানবপাচার চক্রের বিরুদ্ধে র‌্যাব-৪-এ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

র‍্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, তার অভিযোগের পর র‌্যাব তদন্ত শুরু করে। রাজধানীর মিরপুর পল্লবী ও উত্তরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে মানবপাচার চক্রের মূলহোতাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

তিনি আরও জানান, দেশে তাদের আরও ৫-৭ জন সহযোগী রয়েছে। এছাড়া ভারতেও তাদের বেশ কয়েকজন সহযোগী রয়েছে। ইতোমধ্যে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কলকাতার রাজিব খান, মানিক এবং দিল্লির রবিন সিং নামে কয়েকজনের পরিচয় পাওয়া গেছে।

তিনি বলেন, গেল কয়েক বছর ধরে এই চক্রটি সক্রিয়ভাবে মানব পাচারের মত অপরাধ করে আসছে। এই চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বিদেশে গমন প্রত্যাশী নিরীহ মানুষকে টার্গেট করে। তাদের অস্ট্রেলিয়া এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশে উচ্চ বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখায়। মূলত তাদের বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাচার করা হয়।

র‍্যাব আরও জানায়, ভারত থেকে ইউরোপের ভিসা সহজ বলে তাদের প্রথমে ভারতে নেয়া হয়। তবে সেখান থেকে তাদের আর ইউরোপে পাঠানো হয় না। ভারতে আটকে রেখে তাদের নির্যাতন করা হয়। পরে বাংলাদেশে থাকা তাদের স্বজনদের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করে চক্রটি।

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বেশ কয়েকটি এলাকায় সক্রিয় রয়েছে চক্রটি।