ঢাকা ০৬:২৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মাদকাসক্তির কারণে দাম্ভিকতা দেখাতেই শিক্ষা কর্মকর্তাকে থাপ্পড়

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ১০:৫৭:১৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২১
  • / 135
শিক্ষা কর্মকর্তাকে থাপ্পড় মেরে পদ হারানো জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভার মেয়র শাহনেওয়াজ শাহানশাহ প্রতিনিয়ত মাদক সেবন করতেন। হোটেল ডি-মেরিডিয়ানে অবস্থান করেও মাদক সেবন করছিলেন তিনি। মাদকাসক্ত হওয়ার কারণেই তিনি বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে নিজের দাম্ভিকতা দেখাতে শিক্ষা কর্মকর্তার গায়ে হাত তোলেন।

বৃহস্পতিবার সকালে শাহনেওয়াজকে গ্রেপ্তারের সময় হোটেলের রুম থেকে ইয়াবা, গাঁজা, হেরোইনসহ সাড়ে তিন লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর রাজধানীর উত্তরার হোটেল ডি-মেরিডিয়ানের সামনে স্পট ব্রিফিংয়ে র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

এসময় হোটেলে তার সঙ্গে আরও তিনজন অবস্থান করছিলেন বলে জানান তিনি।

হোটলে সূত্রে জানা যায়, গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় মেয়রসহ ৪ জন ৩০৮ নম্বর রুমে ওঠেন। গেস্টের তালিকায় দেখা যায়, আখতারুজ্জামান নামে এক ব্যক্তির নামে রুমটি ভাড়া নেয়া। রুমের অন্য সদস্যরা হলেন, গোলাম মোহাম্মদ রাজু, পৌর মেয়র শাহনেওয়াজ শাহানশাহ ও মনোয়ার হোসেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই উত্তরার ৬ নম্বর সেক্টরের হোটেল ডি-মেরিডিয়ান ঘিরে রাখে র‍্যাব কর্মকর্তারা। অভিযান শেষে দুপুর বারোটার দিকে হোটেল কক্ষ থেকে মাদকসহ গ্রেপ্তার করে শাহনেওয়াজ শাহানশাহকে নিয়ে যাওয়া হয় র‍্যাব-১ এর কার্যালয়ে।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, অভিযান পরিচালনা করে তার কাছ থেকে মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা দায়ের করা হবে। এছাড়া জামালপুরে তার বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত আমরা জানতে পেরেছি তিনি তার দাম্ভিকতার কারণে বিভিন্ন জায়গায় নিজেকে বড়ভাবে উপস্থাপন করতেন। তার বিরুদ্ধে মারধর এবং সরকারি কর্মকর্তা লাঞ্ছনার অভিযোগসহ পাঁচটি মামলা রয়েছে।

র‌্যাব মুখপাত্র বলেন, শাহনেওয়াজ একজন মাদকসেবী। বরখাস্ত হওয়া এই মেয়র প্রতিনিয়ত মাদক সেবন করতেন। হোটেলে এসেও তিনি মাদক নিচ্ছিলেন। বিশেষ করে হেরোইনে বেশি আসক্ত ছিলেন। গতরাতেও হেরোইন সংগ্রহ করে সেবন করেছিলেন। গ্রেপ্তারের সময় তাকে নেশাগ্রস্ত দেখা গেছে। মাদকাসক্ত হওয়ার কারণেই তিনি বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে নিজের দাম্ভিকতা দেখাতে শিক্ষা কর্মকর্তার গায়ে হাত তোলেন। অভিযানে তার কাছ থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। র‍্যাব এ বিষয়ে মাদক আইনে একটি মামলা দায়ের করবে।

তিনি আরও বলেন, দাম্ভিকতা এবং ক্ষমতার অপব্যবহারে অভ্যস্ত হয়ে ওঠায় এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আমাদের কাছে স্বীকার করেছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে আমরা পুলিশ অ্যাসল্ট মামলা পেয়েছি। বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে এসে আগে কে ফুল দিবে এ তর্কে তিনি শিক্ষা কর্মকর্তাকে থাপ্পর দিয়েছেন।

দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভার মেয়র শাহনেওয়াজ শাহানশাহকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ সব কারণে বিভিন্নভাবে আত্মগোপনে থেকে অবস্থান পরিবর্তন করছিলেন। নিজেকে নিরাপদ রাখার জন্য তিনি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন বলেও জানান র‌্যাবের এই কর্মকর্তা।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

মাদকাসক্তির কারণে দাম্ভিকতা দেখাতেই শিক্ষা কর্মকর্তাকে থাপ্পড়

আপডেট : ১০:৫৭:১৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২১
শিক্ষা কর্মকর্তাকে থাপ্পড় মেরে পদ হারানো জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভার মেয়র শাহনেওয়াজ শাহানশাহ প্রতিনিয়ত মাদক সেবন করতেন। হোটেল ডি-মেরিডিয়ানে অবস্থান করেও মাদক সেবন করছিলেন তিনি। মাদকাসক্ত হওয়ার কারণেই তিনি বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে নিজের দাম্ভিকতা দেখাতে শিক্ষা কর্মকর্তার গায়ে হাত তোলেন।

বৃহস্পতিবার সকালে শাহনেওয়াজকে গ্রেপ্তারের সময় হোটেলের রুম থেকে ইয়াবা, গাঁজা, হেরোইনসহ সাড়ে তিন লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর রাজধানীর উত্তরার হোটেল ডি-মেরিডিয়ানের সামনে স্পট ব্রিফিংয়ে র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

এসময় হোটেলে তার সঙ্গে আরও তিনজন অবস্থান করছিলেন বলে জানান তিনি।

হোটলে সূত্রে জানা যায়, গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় মেয়রসহ ৪ জন ৩০৮ নম্বর রুমে ওঠেন। গেস্টের তালিকায় দেখা যায়, আখতারুজ্জামান নামে এক ব্যক্তির নামে রুমটি ভাড়া নেয়া। রুমের অন্য সদস্যরা হলেন, গোলাম মোহাম্মদ রাজু, পৌর মেয়র শাহনেওয়াজ শাহানশাহ ও মনোয়ার হোসেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই উত্তরার ৬ নম্বর সেক্টরের হোটেল ডি-মেরিডিয়ান ঘিরে রাখে র‍্যাব কর্মকর্তারা। অভিযান শেষে দুপুর বারোটার দিকে হোটেল কক্ষ থেকে মাদকসহ গ্রেপ্তার করে শাহনেওয়াজ শাহানশাহকে নিয়ে যাওয়া হয় র‍্যাব-১ এর কার্যালয়ে।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, অভিযান পরিচালনা করে তার কাছ থেকে মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা দায়ের করা হবে। এছাড়া জামালপুরে তার বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত আমরা জানতে পেরেছি তিনি তার দাম্ভিকতার কারণে বিভিন্ন জায়গায় নিজেকে বড়ভাবে উপস্থাপন করতেন। তার বিরুদ্ধে মারধর এবং সরকারি কর্মকর্তা লাঞ্ছনার অভিযোগসহ পাঁচটি মামলা রয়েছে।

র‌্যাব মুখপাত্র বলেন, শাহনেওয়াজ একজন মাদকসেবী। বরখাস্ত হওয়া এই মেয়র প্রতিনিয়ত মাদক সেবন করতেন। হোটেলে এসেও তিনি মাদক নিচ্ছিলেন। বিশেষ করে হেরোইনে বেশি আসক্ত ছিলেন। গতরাতেও হেরোইন সংগ্রহ করে সেবন করেছিলেন। গ্রেপ্তারের সময় তাকে নেশাগ্রস্ত দেখা গেছে। মাদকাসক্ত হওয়ার কারণেই তিনি বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে নিজের দাম্ভিকতা দেখাতে শিক্ষা কর্মকর্তার গায়ে হাত তোলেন। অভিযানে তার কাছ থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। র‍্যাব এ বিষয়ে মাদক আইনে একটি মামলা দায়ের করবে।

তিনি আরও বলেন, দাম্ভিকতা এবং ক্ষমতার অপব্যবহারে অভ্যস্ত হয়ে ওঠায় এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আমাদের কাছে স্বীকার করেছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে আমরা পুলিশ অ্যাসল্ট মামলা পেয়েছি। বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে এসে আগে কে ফুল দিবে এ তর্কে তিনি শিক্ষা কর্মকর্তাকে থাপ্পর দিয়েছেন।

দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভার মেয়র শাহনেওয়াজ শাহানশাহকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ সব কারণে বিভিন্নভাবে আত্মগোপনে থেকে অবস্থান পরিবর্তন করছিলেন। নিজেকে নিরাপদ রাখার জন্য তিনি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন বলেও জানান র‌্যাবের এই কর্মকর্তা।