ঢাকা ১১:০৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৮ মাস ঢাকায় ভাড়া বাসায় ছিলেন কেএনএফ নেতা: র‍্যাব

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : ০৫:৩৭:৩৫ অপরাহ্ন, সোমাবার, ২৪ জুলাই ২০২৩
  • / 118
পাহাড়ি সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) প্রধান নাথান লনচেও বম গত বছর ৮ মাস রাজধানীর বাসাবো এলাকায় একটি বাসায় ছিলেন। জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার আল ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার আমির মো. আনিসুর রহমান মাহমুদ তা‌কে বাসাবোর ওই বাসাটি ঠিক করে দিয়েছি‌লেন।

রোববার রাতে মুন্সিগঞ্জের লৌহজং থেকে জামাতুল আনসার আল ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার আমির মো. আনিসুর রহমান মাহমুদ ও তার দুই দেহরক্ষী কাজী সরাজ উদ্দিন রিয়াজ এবং মাহফুজুর রহমান বিজয়কে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। প‌রে তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের এসব তথ্য জান‌তে পে‌রে‌ছে র‌্যাব।

সোমবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছে র‌্যা‌বের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, নাথান ঢাকায় কয়েক মাস ছিল। বাসাবোতে আনিসুর রহমান বাসাটি নাথান বমকে ভাড়া করে দেন। আমাদের অভিযান শুরুর পর ঢাকা ছেড়ে চলে যায়।

তিনি আরও বলেন, আনিসুর রহমানের সঙ্গে নাথান বমের যোগাযোগ ছিল। ক্লোজ গ্রুপের মাধ্যমে যোগাযোগ রক্ষা করছিল। নাথান বম পাশ্ববর্তী দেশের মিজোরামে অবস্থান করছেন বলে র‌্যাবকে জানিয়েছেন আনিসুর রহমান।

কমান্ডার আল মঈন ব‌লেন, জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার আল ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার আমির আনিসুর রহমান মাহমুদ কেএনএফ প্রধানকে বাসাটি ভাড়া করে দেন। যা ২০ হাজার টাকায় ভাড়া করা হয়েছিল। আর নাথান বমের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ ছিল আমিরের।

কমান্ডার খন্দকার মঈন বলেন, গ্রেপ্তার আনিসুর রহমান মাহমুদ জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার আমির ছিলেন। তিনি দাওরায়ে হাদিস সম্পন্ন করেছেন। এক সময় কুমিল্লা দক্ষিণের একটি সিএনজি রিফুয়েলিং পাম্পে ম্যানেজার হিসেবে চাকরি করতেন। মাহমুদ হুজির সদস্য ছিলেন। পরবর্তীতে কুমিল্লার একটি রেস্টুরেন্টে আনসার আল ইসলামের রক্সি ও ফেলানীর সঙ্গে পরিচয় হয়।

প‌রে তারা যাত্রাবাড়ীতে একটি বৈঠক করে নতুন একটি সংগঠন তৈরি ও বিস্তারের পরিকল্পনা করে ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র কার্যক্রম শুরু করেন। মাহমুদ কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সংগঠনের দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করেন। ২০১৬ সাল পরবর্তী বিভিন্ন সময় বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির বিভিন্ন মসজিদে গিয়ে সংগঠনের দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। এরপর মাহমুদ বান্দরবনে এক মাস সামরিক বিভিন্ন কৌশল, অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণ শেষে কুমিল্লার প্রতাপপুরে মাহমুদ তার বাড়িসহ জমি এক ব্যক্তির নিকট ৫০ লাখ টাকায় বিক্রি করে দেন এবং তিনি জমি বিক্রির কিছু টাকা সংগঠনে দেন।

বাকি টাকা দিয়ে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে সাড়ে তিন বিঘা জমি কিনে পোল্ট্রি ফার্ম, চাষাবাদ ও গবাদি পশুর খামার করেন। পাহাড়ে প্রশিক্ষণ নেয়ার আগে নাথান বমের বিতর্কিত সেনা কর্মকর্তা মেজর (বরখাস্ত) জিয়াসহ অনেকের সঙ্গে পরিচয়।

এরপরই বিভিন্ন সময় পাহাড়ে সশস্ত্র প্রশিক্ষণ নেন সমতল থেকে নিরুদ্দেশ হওয়া তরুণরা। এদের মধ্যে গতবছরের ৮ অক্টোবর পাহাড়ে অভিযান চালায় র‍্যাব। এসময় বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

৮ মাস ঢাকায় ভাড়া বাসায় ছিলেন কেএনএফ নেতা: র‍্যাব

আপডেট : ০৫:৩৭:৩৫ অপরাহ্ন, সোমাবার, ২৪ জুলাই ২০২৩
পাহাড়ি সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) প্রধান নাথান লনচেও বম গত বছর ৮ মাস রাজধানীর বাসাবো এলাকায় একটি বাসায় ছিলেন। জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার আল ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার আমির মো. আনিসুর রহমান মাহমুদ তা‌কে বাসাবোর ওই বাসাটি ঠিক করে দিয়েছি‌লেন।

রোববার রাতে মুন্সিগঞ্জের লৌহজং থেকে জামাতুল আনসার আল ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার আমির মো. আনিসুর রহমান মাহমুদ ও তার দুই দেহরক্ষী কাজী সরাজ উদ্দিন রিয়াজ এবং মাহফুজুর রহমান বিজয়কে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। প‌রে তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের এসব তথ্য জান‌তে পে‌রে‌ছে র‌্যাব।

সোমবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছে র‌্যা‌বের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, নাথান ঢাকায় কয়েক মাস ছিল। বাসাবোতে আনিসুর রহমান বাসাটি নাথান বমকে ভাড়া করে দেন। আমাদের অভিযান শুরুর পর ঢাকা ছেড়ে চলে যায়।

তিনি আরও বলেন, আনিসুর রহমানের সঙ্গে নাথান বমের যোগাযোগ ছিল। ক্লোজ গ্রুপের মাধ্যমে যোগাযোগ রক্ষা করছিল। নাথান বম পাশ্ববর্তী দেশের মিজোরামে অবস্থান করছেন বলে র‌্যাবকে জানিয়েছেন আনিসুর রহমান।

কমান্ডার আল মঈন ব‌লেন, জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার আল ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার আমির আনিসুর রহমান মাহমুদ কেএনএফ প্রধানকে বাসাটি ভাড়া করে দেন। যা ২০ হাজার টাকায় ভাড়া করা হয়েছিল। আর নাথান বমের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ ছিল আমিরের।

কমান্ডার খন্দকার মঈন বলেন, গ্রেপ্তার আনিসুর রহমান মাহমুদ জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার আমির ছিলেন। তিনি দাওরায়ে হাদিস সম্পন্ন করেছেন। এক সময় কুমিল্লা দক্ষিণের একটি সিএনজি রিফুয়েলিং পাম্পে ম্যানেজার হিসেবে চাকরি করতেন। মাহমুদ হুজির সদস্য ছিলেন। পরবর্তীতে কুমিল্লার একটি রেস্টুরেন্টে আনসার আল ইসলামের রক্সি ও ফেলানীর সঙ্গে পরিচয় হয়।

প‌রে তারা যাত্রাবাড়ীতে একটি বৈঠক করে নতুন একটি সংগঠন তৈরি ও বিস্তারের পরিকল্পনা করে ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র কার্যক্রম শুরু করেন। মাহমুদ কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সংগঠনের দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করেন। ২০১৬ সাল পরবর্তী বিভিন্ন সময় বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির বিভিন্ন মসজিদে গিয়ে সংগঠনের দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। এরপর মাহমুদ বান্দরবনে এক মাস সামরিক বিভিন্ন কৌশল, অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণ শেষে কুমিল্লার প্রতাপপুরে মাহমুদ তার বাড়িসহ জমি এক ব্যক্তির নিকট ৫০ লাখ টাকায় বিক্রি করে দেন এবং তিনি জমি বিক্রির কিছু টাকা সংগঠনে দেন।

বাকি টাকা দিয়ে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে সাড়ে তিন বিঘা জমি কিনে পোল্ট্রি ফার্ম, চাষাবাদ ও গবাদি পশুর খামার করেন। পাহাড়ে প্রশিক্ষণ নেয়ার আগে নাথান বমের বিতর্কিত সেনা কর্মকর্তা মেজর (বরখাস্ত) জিয়াসহ অনেকের সঙ্গে পরিচয়।

এরপরই বিভিন্ন সময় পাহাড়ে সশস্ত্র প্রশিক্ষণ নেন সমতল থেকে নিরুদ্দেশ হওয়া তরুণরা। এদের মধ্যে গতবছরের ৮ অক্টোবর পাহাড়ে অভিযান চালায় র‍্যাব। এসময় বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।