ঢাকা ০৭:৫২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পরিদর্শনের নামে রূপালী ব্যাংকের ২ কর্মকর্তার অর্থ আত্মসাৎ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : ১০:০৪:১২ অপরাহ্ন, সোমাবার, ২ অক্টোবর ২০২৩
  • / 294

রূপালী ব্যাংকের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে শাখা পরিদর্শনে গিয়ে ইচ্ছেমতো বিল-ভাতা করেছেন ব্যাংকটির দুজন কর্মকর্তা। এক জেলায় সফরের দিনেও অন্য জেলা ভ্রমণের যাতায়াত ভাতা দেখিয়েছেন। ২০১৯ ও ২০২০ সালে দাপ্তরিক কাজ শেষে বিলভাতা তুলে ভোগ করা শেষ করলেও বিষয়টি সামনে এসেছে সম্প্রতি। গত ১ সেপ্টেম্বর এই দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর অভিযোগ জমা পড়েছে। দুই কর্মকর্তা হলেন- প্রধান কার্যালয়ের নিরীক্ষা ও পরিদর্শক বিভাগ-২ কর্মরত মো. মাহমুদুল হাসান ও মেশকাতুর রহমান। অভিযোগ আমলে নিয়ে এই দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যাংকের ভিজিল্যান্স এন্ড ইন্টেলিজেন্স ডিভিশন ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে বলে ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে। অভিযোগ রয়েছে, তদন্ত থেকে নিজেদের নির্দোষ প্রমাণে সংশ্লিষ্টদের চাপ প্রয়োগেরও চেষ্টা করছেন এই দুই কর্মকর্তা। তবে ব্যাংকটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, যেহেতু তদন্ত চলছে তাই প্রমাণ হলে বিভাগীয় শাস্তি থেকে নিস্তার পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

এই দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে জমা দেওয়া অভিযোগের তথ্যাদি আমাদের কাছে সংরক্ষিত আছে। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে একাধিকবার চেষ্টা করলেও রূপালী ব্যাংকের ডিএমডি, জিএম সহ কর্মর্কতাদের সহ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীরের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তাদের কাছে খুদেবার্তা দিয়েও কোন জবাব পাওয়া যায়নি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ব্যাংকটির একজন ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমার জানা নেই। তবে অভিযোগ যখন জমা পড়েছে সেহেতু নিয়ম মাফিক তদন্ত হবে। অভিযোগ প্রমাণ হলে অবশ্যই দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যত অভিযোগ:
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ব্যাংকটির প্রিন্সিপাল অফিসার মো. মাহমুদুল হাসান ও মেশকাতুর রহমান ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে কক্সবাজারের কর্পোরেট শাখায় সিস্টেম অডিট করেন। পরে কাছাকাছি সময়ে রাঙ্গামাটিতেও তারা শাখা অডিট করেন। কিন্তু বিল জমা দিতে গিয়ে দেখিয়েছেন, ১৭ সেপ্টেম্বর তারা দুজন কক্সবাজারে অবস্থান করেছেন। আবার একই তারিখে (১৭ সেপ্টেম্বর) তারা রাঙামাটিরও ভ্রমণ বিল জমা দিয়ে সেই বিল তুলে নিয়েছেন।
তার আগের মাস আগস্টে চট্টগ্রামের চান্দগাঁও করপোরেট শাখা ও বিবিরহাট করপোরেট শাখার সিস্টেম অডিট সম্পন্ন করে দুই কর্মকর্তা বিলে দেখিয়েছেন, ২৫ আগস্ট তারা ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম গিয়েছেন। পরে ২ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টায় চট্টগ্রাম থেকে রওয়ানা দিয়ে দুপুরে ঢাকায় পৌঁছেছেন।
পরবর্তীতে এক্সেলিং সার্ভিস স্কিলস প্রশিক্ষণ বিলে ১ থেকে ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তারা ঢাকায় রূপালী ব্যাংক ট্রেনিং একাডেমিতে প্রশিক্ষণ নেওয়ার তথ্য লিখেছেন। প্রকৃতপক্ষে দিনগুলোতে তারা ঢাকায় একাডেমিতে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। যেখানকার হাজিরা শিটে তাদের স্বাক্ষরও আছে।
এই দুটি বিল পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ১ থেকে ২ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের ভ্রমণ বিলে তারা সেখানে অবস্থান দেখিয়ে বিল নিয়েছেন। আবার একই দিনে ঢাকায় প্রশিক্ষণের ভ্রমণ ভাতা দেখিয়ে ঢাকা থেকেও বিল তুলেছেন।
অন্য একটি বিলে দেখা যায়, ২০১৯ সালের ১৬ নভেম্বর ঠাকুরগাঁও করপোরেট শাখার সিস্টেম অডিট করেছেন। কিন্তু ভাতার বিলে একই তারিখে তারা ঢাকা থেকে ঠাকুরগাঁও যাওয়া এবং ২০ নভেম্বর সকাল ৬টায় ঠাকুরগাঁও থেকে রওয়ানা হয়ে দুপুর ২টায় কল্যাণপুর পৌঁছার কথা জানিয়েছেন।
আবার গাইবান্ধা করপোরেট শাখার ভ্রমণ ভাতার বিলে তারা দেখিয়েছেন ১৯ নভেম্বর রাত ১০টায় কল্যাণপুর থেকে গাইবান্ধার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছেন। ২২ নভেম্বর সকাল ৬টায় গাইবান্ধা থেকে রওয়ানা দিয়ে দুপুর ২টায় তারা কল্যাণপুর পৌঁছেছেন। অর্থাৎ একই সময় ও একই দিনে ঠাকুরগাঁও এবং গাইবান্ধা দুই জায়গার ভ্রমণ ভাতা তুলে নিয়েছেন এই কর্মকর্তারা।
এছাড়াও মাহমুদুল হাসান ২০২০ সালে রূপালী ব্যাংক ট্রেনিং একাডেমি, ঢাকায় অডিটের ওপর একটি প্রশিক্ষণ বিলে দেখিয়েছেন, ওই বছরের ১৯ থেকে ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত রূপালী ব্যাংক ট্রেনিং একাডেমি ঢাকায় প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। বিল জমা দিয়ে এই সাত দিনের প্রশিক্ষণ ভ্রমণ ভাতার বিলও নিয়েছেন। রূপালী ব্যাংক ট্রেনিং একাডেমির হাজিরা শিটে প্রমাণ রয়েছে।
প্রকৃতপক্ষে, ওই বছরের ২৩ থেকে ২৪ জানুয়ারি তারা ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছেন। যা নির্বাচন কমিশন আয়োজন করেছিল। ফলে এই দুই দিনের প্রশিক্ষণ ভাতা ব্যাংক থেকেও তারা নিয়েছেন। আবার ইসির প্রশিক্ষণ থেকেও বিল নিয়েছেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, একইসঙ্গে এভাবে একাধিক জায়গায় অবস্থানের মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিলভাতা নেওয়া, একই দিনে একাধিক সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে ভাতা নেওয়া জালিয়াতির শামিল।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত মাহমুদুল হাসান এবং মেশকাতুর রহমানের বক্তব্য তাদের মতো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তারা রিসিভ করেননি।
এমনকি মোবাইলে ম্যসেজ দিলেও তার কোন উত্তর দেননী। পরবর্তীতে প্রতিবেদক ব্যাংকের কার্যালয় গিয়েও তাদের সাথে সাক্ষাতের জন্য অপেক্ষা করেন কিন্তু তারা কেউই দেখা করেননি। এদিকে অভিযোগ তদন্তের দায়িত্বে থাকা ব্যাংকের ভিজিল্যান্স্ এন্ড ইন্টেলিজেন্স ডিভিশনের ডিজিএম বিষয়টি নিয়ে বার বার কল দিলে তিনিি ফোন রিসিভ করেননী পরে ম্যাসেজ দিলেও এর কোন উত্তর দেননী তার মানে মনে হয় এরাও ২ জনের সাথে জড়িত। লিখিতে অভিযোগ তাকেও মার্ক করা আছে এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘এমন অভিযোগ আছে কিনা আমার মনে নেই। দেখে বলতে হবে।

উক্ত কর্মকর্তাগণের বিরুদ্ধে তদন্তের সত্যতা প্রমাণ পাওয়া সত্ত্বেও তারা পরিদর্শন বিভাগে বহাল রয়েছে এবং অডিট কার্যক্রম পরিচালনা করছে । অভিযোগ প্রমাণিত হওয়া সত্বেও এই রকম সংবেদনশীল বিভাগে থেকে তারা এখনও নানা রকম অপকর্মে জড়িত রয়েছে বলে জানা যায়।

উক্ত কর্মকর্তাগণ কতিপয় নির্বাহী কর্মকর্তার যোগসাজশে তার শাস্তি যাতে লঘু দণ্ড (তিরস্কার) হয় তার জোর প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। এই ধরনের প্রতারণার ও জাল জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ এর অপরাধের জন্য সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকুরী থেকে বরখাস্তকরন সহ গুরুদন্ড দেওয়ার দৃষ্টান্ত রয়েছে কিন্তু উক্ত কর্মকর্তাদ্বয় বিভিন্ন প্রভাব খাটিয়ে তারা তিরস্কারের মত সাধারণ লঘুদণ্ড জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছে বলে জানা যায়।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

পরিদর্শনের নামে রূপালী ব্যাংকের ২ কর্মকর্তার অর্থ আত্মসাৎ

আপডেট : ১০:০৪:১২ অপরাহ্ন, সোমাবার, ২ অক্টোবর ২০২৩

রূপালী ব্যাংকের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে শাখা পরিদর্শনে গিয়ে ইচ্ছেমতো বিল-ভাতা করেছেন ব্যাংকটির দুজন কর্মকর্তা। এক জেলায় সফরের দিনেও অন্য জেলা ভ্রমণের যাতায়াত ভাতা দেখিয়েছেন। ২০১৯ ও ২০২০ সালে দাপ্তরিক কাজ শেষে বিলভাতা তুলে ভোগ করা শেষ করলেও বিষয়টি সামনে এসেছে সম্প্রতি। গত ১ সেপ্টেম্বর এই দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর অভিযোগ জমা পড়েছে। দুই কর্মকর্তা হলেন- প্রধান কার্যালয়ের নিরীক্ষা ও পরিদর্শক বিভাগ-২ কর্মরত মো. মাহমুদুল হাসান ও মেশকাতুর রহমান। অভিযোগ আমলে নিয়ে এই দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যাংকের ভিজিল্যান্স এন্ড ইন্টেলিজেন্স ডিভিশন ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে বলে ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে। অভিযোগ রয়েছে, তদন্ত থেকে নিজেদের নির্দোষ প্রমাণে সংশ্লিষ্টদের চাপ প্রয়োগেরও চেষ্টা করছেন এই দুই কর্মকর্তা। তবে ব্যাংকটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, যেহেতু তদন্ত চলছে তাই প্রমাণ হলে বিভাগীয় শাস্তি থেকে নিস্তার পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

এই দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে জমা দেওয়া অভিযোগের তথ্যাদি আমাদের কাছে সংরক্ষিত আছে। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে একাধিকবার চেষ্টা করলেও রূপালী ব্যাংকের ডিএমডি, জিএম সহ কর্মর্কতাদের সহ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীরের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তাদের কাছে খুদেবার্তা দিয়েও কোন জবাব পাওয়া যায়নি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ব্যাংকটির একজন ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমার জানা নেই। তবে অভিযোগ যখন জমা পড়েছে সেহেতু নিয়ম মাফিক তদন্ত হবে। অভিযোগ প্রমাণ হলে অবশ্যই দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যত অভিযোগ:
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ব্যাংকটির প্রিন্সিপাল অফিসার মো. মাহমুদুল হাসান ও মেশকাতুর রহমান ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে কক্সবাজারের কর্পোরেট শাখায় সিস্টেম অডিট করেন। পরে কাছাকাছি সময়ে রাঙ্গামাটিতেও তারা শাখা অডিট করেন। কিন্তু বিল জমা দিতে গিয়ে দেখিয়েছেন, ১৭ সেপ্টেম্বর তারা দুজন কক্সবাজারে অবস্থান করেছেন। আবার একই তারিখে (১৭ সেপ্টেম্বর) তারা রাঙামাটিরও ভ্রমণ বিল জমা দিয়ে সেই বিল তুলে নিয়েছেন।
তার আগের মাস আগস্টে চট্টগ্রামের চান্দগাঁও করপোরেট শাখা ও বিবিরহাট করপোরেট শাখার সিস্টেম অডিট সম্পন্ন করে দুই কর্মকর্তা বিলে দেখিয়েছেন, ২৫ আগস্ট তারা ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম গিয়েছেন। পরে ২ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টায় চট্টগ্রাম থেকে রওয়ানা দিয়ে দুপুরে ঢাকায় পৌঁছেছেন।
পরবর্তীতে এক্সেলিং সার্ভিস স্কিলস প্রশিক্ষণ বিলে ১ থেকে ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তারা ঢাকায় রূপালী ব্যাংক ট্রেনিং একাডেমিতে প্রশিক্ষণ নেওয়ার তথ্য লিখেছেন। প্রকৃতপক্ষে দিনগুলোতে তারা ঢাকায় একাডেমিতে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। যেখানকার হাজিরা শিটে তাদের স্বাক্ষরও আছে।
এই দুটি বিল পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ১ থেকে ২ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের ভ্রমণ বিলে তারা সেখানে অবস্থান দেখিয়ে বিল নিয়েছেন। আবার একই দিনে ঢাকায় প্রশিক্ষণের ভ্রমণ ভাতা দেখিয়ে ঢাকা থেকেও বিল তুলেছেন।
অন্য একটি বিলে দেখা যায়, ২০১৯ সালের ১৬ নভেম্বর ঠাকুরগাঁও করপোরেট শাখার সিস্টেম অডিট করেছেন। কিন্তু ভাতার বিলে একই তারিখে তারা ঢাকা থেকে ঠাকুরগাঁও যাওয়া এবং ২০ নভেম্বর সকাল ৬টায় ঠাকুরগাঁও থেকে রওয়ানা হয়ে দুপুর ২টায় কল্যাণপুর পৌঁছার কথা জানিয়েছেন।
আবার গাইবান্ধা করপোরেট শাখার ভ্রমণ ভাতার বিলে তারা দেখিয়েছেন ১৯ নভেম্বর রাত ১০টায় কল্যাণপুর থেকে গাইবান্ধার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছেন। ২২ নভেম্বর সকাল ৬টায় গাইবান্ধা থেকে রওয়ানা দিয়ে দুপুর ২টায় তারা কল্যাণপুর পৌঁছেছেন। অর্থাৎ একই সময় ও একই দিনে ঠাকুরগাঁও এবং গাইবান্ধা দুই জায়গার ভ্রমণ ভাতা তুলে নিয়েছেন এই কর্মকর্তারা।
এছাড়াও মাহমুদুল হাসান ২০২০ সালে রূপালী ব্যাংক ট্রেনিং একাডেমি, ঢাকায় অডিটের ওপর একটি প্রশিক্ষণ বিলে দেখিয়েছেন, ওই বছরের ১৯ থেকে ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত রূপালী ব্যাংক ট্রেনিং একাডেমি ঢাকায় প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। বিল জমা দিয়ে এই সাত দিনের প্রশিক্ষণ ভ্রমণ ভাতার বিলও নিয়েছেন। রূপালী ব্যাংক ট্রেনিং একাডেমির হাজিরা শিটে প্রমাণ রয়েছে।
প্রকৃতপক্ষে, ওই বছরের ২৩ থেকে ২৪ জানুয়ারি তারা ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছেন। যা নির্বাচন কমিশন আয়োজন করেছিল। ফলে এই দুই দিনের প্রশিক্ষণ ভাতা ব্যাংক থেকেও তারা নিয়েছেন। আবার ইসির প্রশিক্ষণ থেকেও বিল নিয়েছেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, একইসঙ্গে এভাবে একাধিক জায়গায় অবস্থানের মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিলভাতা নেওয়া, একই দিনে একাধিক সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে ভাতা নেওয়া জালিয়াতির শামিল।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত মাহমুদুল হাসান এবং মেশকাতুর রহমানের বক্তব্য তাদের মতো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তারা রিসিভ করেননি।
এমনকি মোবাইলে ম্যসেজ দিলেও তার কোন উত্তর দেননী। পরবর্তীতে প্রতিবেদক ব্যাংকের কার্যালয় গিয়েও তাদের সাথে সাক্ষাতের জন্য অপেক্ষা করেন কিন্তু তারা কেউই দেখা করেননি। এদিকে অভিযোগ তদন্তের দায়িত্বে থাকা ব্যাংকের ভিজিল্যান্স্ এন্ড ইন্টেলিজেন্স ডিভিশনের ডিজিএম বিষয়টি নিয়ে বার বার কল দিলে তিনিি ফোন রিসিভ করেননী পরে ম্যাসেজ দিলেও এর কোন উত্তর দেননী তার মানে মনে হয় এরাও ২ জনের সাথে জড়িত। লিখিতে অভিযোগ তাকেও মার্ক করা আছে এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘এমন অভিযোগ আছে কিনা আমার মনে নেই। দেখে বলতে হবে।

উক্ত কর্মকর্তাগণের বিরুদ্ধে তদন্তের সত্যতা প্রমাণ পাওয়া সত্ত্বেও তারা পরিদর্শন বিভাগে বহাল রয়েছে এবং অডিট কার্যক্রম পরিচালনা করছে । অভিযোগ প্রমাণিত হওয়া সত্বেও এই রকম সংবেদনশীল বিভাগে থেকে তারা এখনও নানা রকম অপকর্মে জড়িত রয়েছে বলে জানা যায়।

উক্ত কর্মকর্তাগণ কতিপয় নির্বাহী কর্মকর্তার যোগসাজশে তার শাস্তি যাতে লঘু দণ্ড (তিরস্কার) হয় তার জোর প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। এই ধরনের প্রতারণার ও জাল জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ এর অপরাধের জন্য সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকুরী থেকে বরখাস্তকরন সহ গুরুদন্ড দেওয়ার দৃষ্টান্ত রয়েছে কিন্তু উক্ত কর্মকর্তাদ্বয় বিভিন্ন প্রভাব খাটিয়ে তারা তিরস্কারের মত সাধারণ লঘুদণ্ড জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছে বলে জানা যায়।