ঢাকা ০৫:৪৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিশেষ পরীক্ষার দাবি ৭ কলেজ শিক্ষার্থীদের

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ১০:৫৯:২৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ অগাস্ট ২০২১
  • / 476
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজের ২০১৫-১৬ সেশনের চতুর্থ বর্ষের ফলাফল বিপর্যয়ের বিষয়গুলোর পুনঃমূল্যায়ন অথবা আগামী ১০ দিনের মধ্যে বিশেষ পরীক্ষা এবং ফলাফল প্রকাশের সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণার দাবিতে নীলক্ষেত মোড়ে অবস্থান নিয়েছে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।

রোববার দুপুরে এ অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন তারা। অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেয় প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী। আগামী ১০ দিনের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সমাধান দেয়া না হলে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত কয়েকমাসে সাত কলেজের আট থেকে নয়টি বিভাগের রেজাল্ট দেয়া হয়, তবে এসব রেজাল্টে রেকর্ড সংখ্যাক শিক্ষার্থীর ফলাফল বিপর্যয় ঘটে। এর মধ্যে ইংরেজী বিভাগে সকল কলেজেই গণহারে ফেল করে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।

শিক্ষার্থীরা বলেন, ইংরেজি বিভাগে ইডেন কলেজে ২১০ জনের মধ্যে ১৭৫ জন ফেল, তিতুমীর কলেজে ২৪১ জনের মধ্যে ১৯৩ জন ফেল, সরকারি বাংলা কলেজে ১১৬ জনের মধ্যে ৯২ জন ফেল। বাকি ৪ কলেজেও একই অবস্থা। সাত কলেজে সব শিক্ষার্থীরাই কি গাধা? যদি গাধা হয় তাহলে এরা কিভাবে বিসিএস ক্যাডার হচ্ছে? তাহলে কিভাবে তারা ভালো ভালো জব পাচ্ছে?

শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা ফলাফল বিপর্যয়ের পর টিচার ও সমন্বয়ক স্যারের সাথে আলোচনার প্রেক্ষিতে পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করি। কিন্তু দেড় মাস পার হয়ে যাওয়ার পরও আমরা রেজাল্ট পাইনি। আর খাতা পুনঃমূল্যায়ন তো দূরের কথা, খাতা রি-চেকেরও আভাসও পাইনি। এমতাবস্থায় আমরা শিক্ষকদের সাথে যোগাযোগ করলে একজন আরেকজনের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে। এমনকি এর মধ্যে মাস্টার্সে ভর্তি নোটিশও দিয়ে দেয়।

ইডেন কলেজের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার বলেন, আমরা চার বছরের জায়গায় ছয় বছর পড়ছি। কোনো ক্লাস ছাড়া মাত্র ২০ দিনের নোটিশে আমাদের পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। পরীক্ষার রেজাল্ট দেয়ার পর দেখা গেছে প্রতিটা ডিপার্টমেন্টে গণহারে ফেল। তিনশ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৫০ জন বা ২৫ জন পাশ করেছে।

তারা বলেন, ফেইল করার মতো পরীক্ষা আমরা দেয়নি, আমাদের নিজেদের কনফিডেন্স আছে। আমরা চার বছর পড়ালেখা করেই ফাইনাল ইয়ারের এসেছি। আমরা যদি কোনো পড়ালেখাই না করতাম, তাহলে ফার্স্ট ইয়ারেই আমাদের আরো খারাপ হতো বা আমরা এগুতে পারতাম না। আমাদের দাবি হচ্ছে, হয় আমাদের পরীক্ষা খাতা পুনঃমূল্যায়ন করতে হবে, নয়ত দশ দিনের মধ্যে নোটিশ দিয়ে আমাদের আবার পরীক্ষা নিতে হবে।

সরকারি বাংলা কলেজের শিক্ষার্থী ওসমান গনী বলেন, আমাদের ২০১৯ সালের পরীক্ষা নেয়া হয়েছে ২০২১ সালে। চার বছরের কোর্সে ছয় বছর লেগে গেছে। তারপর ফলাফলে দেখা গেছে গড়ে সবাইকে একটা সাবজেক্টে ফেইল করানো হয়েছে। ক্লাস না হলেও আমরা ফুল সিলেবাসে পরীক্ষা দিয়েছি। আমাদের গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করতে ছয় বছর লেগে গেছে। আমরা গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করে এই সাত কলেজ থেকে মুক্তি চাই। আমরা খাতার পুনঃমূল্যায়ন চাই।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

বিশেষ পরীক্ষার দাবি ৭ কলেজ শিক্ষার্থীদের

আপডেট : ১০:৫৯:২৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ অগাস্ট ২০২১
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজের ২০১৫-১৬ সেশনের চতুর্থ বর্ষের ফলাফল বিপর্যয়ের বিষয়গুলোর পুনঃমূল্যায়ন অথবা আগামী ১০ দিনের মধ্যে বিশেষ পরীক্ষা এবং ফলাফল প্রকাশের সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণার দাবিতে নীলক্ষেত মোড়ে অবস্থান নিয়েছে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।

রোববার দুপুরে এ অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন তারা। অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেয় প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী। আগামী ১০ দিনের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সমাধান দেয়া না হলে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত কয়েকমাসে সাত কলেজের আট থেকে নয়টি বিভাগের রেজাল্ট দেয়া হয়, তবে এসব রেজাল্টে রেকর্ড সংখ্যাক শিক্ষার্থীর ফলাফল বিপর্যয় ঘটে। এর মধ্যে ইংরেজী বিভাগে সকল কলেজেই গণহারে ফেল করে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।

শিক্ষার্থীরা বলেন, ইংরেজি বিভাগে ইডেন কলেজে ২১০ জনের মধ্যে ১৭৫ জন ফেল, তিতুমীর কলেজে ২৪১ জনের মধ্যে ১৯৩ জন ফেল, সরকারি বাংলা কলেজে ১১৬ জনের মধ্যে ৯২ জন ফেল। বাকি ৪ কলেজেও একই অবস্থা। সাত কলেজে সব শিক্ষার্থীরাই কি গাধা? যদি গাধা হয় তাহলে এরা কিভাবে বিসিএস ক্যাডার হচ্ছে? তাহলে কিভাবে তারা ভালো ভালো জব পাচ্ছে?

শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা ফলাফল বিপর্যয়ের পর টিচার ও সমন্বয়ক স্যারের সাথে আলোচনার প্রেক্ষিতে পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করি। কিন্তু দেড় মাস পার হয়ে যাওয়ার পরও আমরা রেজাল্ট পাইনি। আর খাতা পুনঃমূল্যায়ন তো দূরের কথা, খাতা রি-চেকেরও আভাসও পাইনি। এমতাবস্থায় আমরা শিক্ষকদের সাথে যোগাযোগ করলে একজন আরেকজনের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে। এমনকি এর মধ্যে মাস্টার্সে ভর্তি নোটিশও দিয়ে দেয়।

ইডেন কলেজের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার বলেন, আমরা চার বছরের জায়গায় ছয় বছর পড়ছি। কোনো ক্লাস ছাড়া মাত্র ২০ দিনের নোটিশে আমাদের পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। পরীক্ষার রেজাল্ট দেয়ার পর দেখা গেছে প্রতিটা ডিপার্টমেন্টে গণহারে ফেল। তিনশ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৫০ জন বা ২৫ জন পাশ করেছে।

তারা বলেন, ফেইল করার মতো পরীক্ষা আমরা দেয়নি, আমাদের নিজেদের কনফিডেন্স আছে। আমরা চার বছর পড়ালেখা করেই ফাইনাল ইয়ারের এসেছি। আমরা যদি কোনো পড়ালেখাই না করতাম, তাহলে ফার্স্ট ইয়ারেই আমাদের আরো খারাপ হতো বা আমরা এগুতে পারতাম না। আমাদের দাবি হচ্ছে, হয় আমাদের পরীক্ষা খাতা পুনঃমূল্যায়ন করতে হবে, নয়ত দশ দিনের মধ্যে নোটিশ দিয়ে আমাদের আবার পরীক্ষা নিতে হবে।

সরকারি বাংলা কলেজের শিক্ষার্থী ওসমান গনী বলেন, আমাদের ২০১৯ সালের পরীক্ষা নেয়া হয়েছে ২০২১ সালে। চার বছরের কোর্সে ছয় বছর লেগে গেছে। তারপর ফলাফলে দেখা গেছে গড়ে সবাইকে একটা সাবজেক্টে ফেইল করানো হয়েছে। ক্লাস না হলেও আমরা ফুল সিলেবাসে পরীক্ষা দিয়েছি। আমাদের গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করতে ছয় বছর লেগে গেছে। আমরা গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করে এই সাত কলেজ থেকে মুক্তি চাই। আমরা খাতার পুনঃমূল্যায়ন চাই।