ঢাকা ০১:৫৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খাবারেও ক্যানসারের ঝুঁকি!

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ১২:০০:৫৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ নভেম্বর ২০২১
  • / 149
বেঁচে থাকলে খাবার খেতে হবে। আবার স্বাস্থ্যের সঙ্গে খাবারের সম্পর্ক সরাসরি। শরীরে পুষ্টির জোগান আসে খাবার থেকেই। কিন্তু সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে হলে খাবারের ব্যাপারেও থাকতে হবে সচেতন। যা ইচ্ছা তাই খাওয়ার সুযোগ নেই। উপাদেয় হলেও কিছু খাবার আছে যা ক্যানসারে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি বাড়ায়। এসব খাবার সম্পর্কে জানা থাকলে সতর্কতা অবলম্বন করাও সহজ হবে।

দুগ্ধজাত পণ্য: গবেষণায় দেখা গেছে যে দুধ, চিজ এবং দইয়ের মতো কিছু দুগ্ধজাত পণ্যের সেবন, প্রস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। ২০১৪ সালের একটি পর্যালোচনা অনুসারে, দুগ্ধজাত পণ্যের সেবন ইনসুলিনের মাত্রা বাড়ায়। এটি প্রস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি বৃদ্ধির সাথে জড়িত।

প্রক্রিয়াজাত মাংস: মাংস, পোলট্রি, মাছ এবং ডিম এ সবই স্বাস্থ্যকর। তবে যদি ঠিকভাবে রান্না করা হয় এবং পরিমিত পরিমাণে খাওয়া হয়। তবে যেকোনো অ্যানিমেল-বেসড প্রোডাক্ট যদি স্মোকড এবং লবণ দ্বারা সংরক্ষিত থাকে, তাহলে সেগুলো আমাদের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে অত্যন্ত ক্ষতিকর। এগুলো খেলে ওজন বাড়া থেকে ক্যানসার পর্যন্ত হতে পারে। প্রক্রিয়াজাত মাংসে, কার্সিনোজেন নামক যৌগ থাকতে পারে এবং কোলোরেক্টাল ও পেটের ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। হট ডগ, সালামি এবং সসেজের মতো প্রক্রিয়াজাত মাংস ব্যবহারের পরিবর্তে, বাড়িতেই মাংস রান্না করা ভালো।

ফ্রায়েড ফুডস: ফ্রায়েড জাতীয় খাদ্যের অতিরিক্ত সেবন, শরীরে ক্যানসারের কোষের বৃদ্ধি করতে পারে। আলু কিংবা মাংসের মতো খাদ্য যখন উচ্চ তাপমাত্রায় ভাজা হয়, তখন অ্যাক্রিলামাইড নামে একটি যৌগ তৈরি হয়। গবেষণায় দেখা গেছে যে, এই যৌগটিতে কার্সিনোজেনিক বৈশিষ্ট্য বর্তমান। এমনকি এটি ডিএনএ-কেও ক্ষতিগ্রস্ত করতে সক্ষম। এছাড়া ভাজা খাবারের সেবন শরীরের অক্সিডেটিভ স্ট্রেস এবং প্রদাহকে বাড়িয়ে তোলে, যা ক্যানসার কোষের বৃদ্ধির সাথে জড়িত।

পরিশোধিত পণ্য: পরিশোধিত ময়দা, চিনি, তেল, প্রভৃতি শরীরে ক্যানসার কোষ বিকাশের ঝুঁকি বৃদ্ধি করতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে যে, প্রক্রিয়াজাত চিনি এবং কার্বোহাইড্রেট, শরীরে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস এবং প্রদাহের ঝুঁকিও বাড়ায়। যার ফলে বিভিন্ন ধরনের ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। যাদের ডায়েটে পরিশোধিত পণ্য বেশি থাকে, তাদের ডিম্বাশয়, এন্ডোমেট্রিয়াল (জরায়ু) কিংবা স্তনে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। তাই, খাদ্যতালিকায় যথাসম্ভব কম পরিশোধিত পণ্য রাখার চেষ্টা করুন। যেমন-চিনির পরিবর্তে গুড় বা মধু ব্যবহার করুন, পরিশোধিত শস্যের পরিবর্তে গোটা শস্য ব্যবহার করুন এবং পরিশোধিত তেলের পরিবর্তে সর্ষের তেল এবং ক্ল্যারিফায়েড বাটার ব্যবহার করুন।

অ্যালকোহল ও কার্বোনেটেড পানীয়: অ্যালকোহল এবং কার্বোনেটেড পানীয়তে, ক্যালোরির পরিমাণ বেশি থাকার পাশাপাশি, প্রচুর পরিমাণে রিফাইন্ড সুগারও থাকে। এই পানীয়গুলি যদি অতিরিক্ত মাত্রায় গ্রহণ করা হয়, তাহলে শরীরে ফ্রি রেডিক্যালের মাত্রা বৃদ্ধি পায়, যার ফলে প্রদাহ সৃষ্টি হতে পারে। তাছাড়া অতিরিক্ত মাত্রায় অ্যালকোহলের সেবন, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে দিতে পারে। যার ফলে ক্যানসারের কোষ সনাক্ত করা কঠিন হয়ে যায়।

ক্যান এবং প্যাকেটজাত খাবার: ক্যান এবং প্যাকেটজাত খাবারের চাহিদা ভারতে ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইনস্ট্যান্ট পোহা, নুডলস, ইডলি, উপমা, পাস্তা, ফ্রায়েড ফুডস, পোলাও-এর মতো বিভিন্ন ধরণের প্যাকেটজাত খাবারে আজ বাজার ভরে গেছে। তবে আপনি কী জানেন, এগুলো ক্যানসারের হওয়ার ঝুঁকিও অনেকটা বৃদ্ধি করে?

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

খাবারেও ক্যানসারের ঝুঁকি!

আপডেট : ১২:০০:৫৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ নভেম্বর ২০২১
বেঁচে থাকলে খাবার খেতে হবে। আবার স্বাস্থ্যের সঙ্গে খাবারের সম্পর্ক সরাসরি। শরীরে পুষ্টির জোগান আসে খাবার থেকেই। কিন্তু সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে হলে খাবারের ব্যাপারেও থাকতে হবে সচেতন। যা ইচ্ছা তাই খাওয়ার সুযোগ নেই। উপাদেয় হলেও কিছু খাবার আছে যা ক্যানসারে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি বাড়ায়। এসব খাবার সম্পর্কে জানা থাকলে সতর্কতা অবলম্বন করাও সহজ হবে।

দুগ্ধজাত পণ্য: গবেষণায় দেখা গেছে যে দুধ, চিজ এবং দইয়ের মতো কিছু দুগ্ধজাত পণ্যের সেবন, প্রস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। ২০১৪ সালের একটি পর্যালোচনা অনুসারে, দুগ্ধজাত পণ্যের সেবন ইনসুলিনের মাত্রা বাড়ায়। এটি প্রস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি বৃদ্ধির সাথে জড়িত।

প্রক্রিয়াজাত মাংস: মাংস, পোলট্রি, মাছ এবং ডিম এ সবই স্বাস্থ্যকর। তবে যদি ঠিকভাবে রান্না করা হয় এবং পরিমিত পরিমাণে খাওয়া হয়। তবে যেকোনো অ্যানিমেল-বেসড প্রোডাক্ট যদি স্মোকড এবং লবণ দ্বারা সংরক্ষিত থাকে, তাহলে সেগুলো আমাদের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে অত্যন্ত ক্ষতিকর। এগুলো খেলে ওজন বাড়া থেকে ক্যানসার পর্যন্ত হতে পারে। প্রক্রিয়াজাত মাংসে, কার্সিনোজেন নামক যৌগ থাকতে পারে এবং কোলোরেক্টাল ও পেটের ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। হট ডগ, সালামি এবং সসেজের মতো প্রক্রিয়াজাত মাংস ব্যবহারের পরিবর্তে, বাড়িতেই মাংস রান্না করা ভালো।

ফ্রায়েড ফুডস: ফ্রায়েড জাতীয় খাদ্যের অতিরিক্ত সেবন, শরীরে ক্যানসারের কোষের বৃদ্ধি করতে পারে। আলু কিংবা মাংসের মতো খাদ্য যখন উচ্চ তাপমাত্রায় ভাজা হয়, তখন অ্যাক্রিলামাইড নামে একটি যৌগ তৈরি হয়। গবেষণায় দেখা গেছে যে, এই যৌগটিতে কার্সিনোজেনিক বৈশিষ্ট্য বর্তমান। এমনকি এটি ডিএনএ-কেও ক্ষতিগ্রস্ত করতে সক্ষম। এছাড়া ভাজা খাবারের সেবন শরীরের অক্সিডেটিভ স্ট্রেস এবং প্রদাহকে বাড়িয়ে তোলে, যা ক্যানসার কোষের বৃদ্ধির সাথে জড়িত।

পরিশোধিত পণ্য: পরিশোধিত ময়দা, চিনি, তেল, প্রভৃতি শরীরে ক্যানসার কোষ বিকাশের ঝুঁকি বৃদ্ধি করতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে যে, প্রক্রিয়াজাত চিনি এবং কার্বোহাইড্রেট, শরীরে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস এবং প্রদাহের ঝুঁকিও বাড়ায়। যার ফলে বিভিন্ন ধরনের ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। যাদের ডায়েটে পরিশোধিত পণ্য বেশি থাকে, তাদের ডিম্বাশয়, এন্ডোমেট্রিয়াল (জরায়ু) কিংবা স্তনে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। তাই, খাদ্যতালিকায় যথাসম্ভব কম পরিশোধিত পণ্য রাখার চেষ্টা করুন। যেমন-চিনির পরিবর্তে গুড় বা মধু ব্যবহার করুন, পরিশোধিত শস্যের পরিবর্তে গোটা শস্য ব্যবহার করুন এবং পরিশোধিত তেলের পরিবর্তে সর্ষের তেল এবং ক্ল্যারিফায়েড বাটার ব্যবহার করুন।

অ্যালকোহল ও কার্বোনেটেড পানীয়: অ্যালকোহল এবং কার্বোনেটেড পানীয়তে, ক্যালোরির পরিমাণ বেশি থাকার পাশাপাশি, প্রচুর পরিমাণে রিফাইন্ড সুগারও থাকে। এই পানীয়গুলি যদি অতিরিক্ত মাত্রায় গ্রহণ করা হয়, তাহলে শরীরে ফ্রি রেডিক্যালের মাত্রা বৃদ্ধি পায়, যার ফলে প্রদাহ সৃষ্টি হতে পারে। তাছাড়া অতিরিক্ত মাত্রায় অ্যালকোহলের সেবন, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে দিতে পারে। যার ফলে ক্যানসারের কোষ সনাক্ত করা কঠিন হয়ে যায়।

ক্যান এবং প্যাকেটজাত খাবার: ক্যান এবং প্যাকেটজাত খাবারের চাহিদা ভারতে ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইনস্ট্যান্ট পোহা, নুডলস, ইডলি, উপমা, পাস্তা, ফ্রায়েড ফুডস, পোলাও-এর মতো বিভিন্ন ধরণের প্যাকেটজাত খাবারে আজ বাজার ভরে গেছে। তবে আপনি কী জানেন, এগুলো ক্যানসারের হওয়ার ঝুঁকিও অনেকটা বৃদ্ধি করে?