ঢাকা ০৬:৫০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এখনও বন্ধ ব্যাংক, সড়কে আফগানদের বিক্ষোভ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ১১:০০:৪৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ অগাস্ট ২০২১
  • / 102

আফগানিস্তানে একটি ব্যাংকের এটিএম বুথের সামনে আফগানদের বিশৃঙ্খলা। ছবি: সংগৃহীত

তালেবান ক্ষমতা দখলের পর আফগানিস্তানের অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন আফগানরা। প্রায় দুই সপ্তাহ পার হয়ে গেছে কিন্তু এখনো চালু হয়নি আফগানিস্তানের ব্যাংকগুলো। তার ওপর তালেবানি শাসন কায়েম হওয়ায় আর্থিক সহায়তা বন্ধ করে দিয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা। এর প্রভাব পড়েছে তাদের জীবনযাপনের ওপর। এমন অবস্থায় গতকাল শনিবার শত শত মানুষ প্রতিবাদ জানাতে কাবুলের রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করে। খবর সিএনএনের

খবরে বলা হয়েছে, ব্যাংক বন্ধ। টাকা তুলতে না পারায় ফুরিয়ে আসছে হাতে থাকা শেষ সম্বল। তালেবান শাসনে বিপর্যস্ত এই সময়ে আর্থিক সংকট দিন দিন প্রকট হয়ে উঠছে আফগানদের।

ব্যাংকে জমানো টাকা তুলতে না পারায় তাদের দৈনন্দিন জীবনে দেখা দিচ্ছে টানাপোড়েন। এটিএম বুথেও মিলছে না দেশটির মুদ্রা আফগানি। অনেক কর্মী কাজে ফিরতে না পারায় দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকেও চলছে অচলাবস্থা। নগদ অর্থের জন্য বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর আবেদনও রক্ষা করতে পারছে না দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

গত ১৫ আগস্ট রাজধানীতে প্রবেশের পর তালেবানদের প্রথম সিদ্ধান্তের মধ্যে একটি ছিলো ব্যাংক বন্ধ রাখা। আফগান মুদ্রার পতন এবং বিপুল পরিমাণ অর্থ উত্তোলন রোধ করতে ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান এবং এক্সচেঞ্জ পয়েন্ট বন্ধ করার নির্দেশ দেয় তালেবানরা।

নিরাপত্তার জন্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে আফগানিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন বর্তমান কর্মচারী সিএনএনকে বলেন, কারও কাছে টাকা নেই, অনেক পরিবারের কাছে তাদের দৈনন্দিন ব্যয় মেটানোর জন্য কোনো অর্থই নেই। অনেকের বেতন-ভাতাও বন্ধ করা হয়েছে।

তবে গতকাল শনিবার রাজধানীর কিছু ব্যাংক পুনরায় খোলার নির্দেশ দিয়েছে তালেবানরা। তবে আফগান সংবাদমাধ্যম জামা প্রেসের তথ্য অনুযায়ী, এখনো ব্যাংক খোলা হয়নি। তাই অনেক মানুষই রাস্তায় নেমেছে। বেসরকারি ব্যাংকের মালিকেরা সেন্ট্রাল ব্যাংক অব আফগানিস্তান (ডিএবি) থেকে আদেশ না পাওয়া পর্যন্ত কাজ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তারা মনে করছেন, সেন্ট্রাল ব্যাংকের নির্দেশ না থাকলে পরে আর্থিক নীতি থেকে বিচ্যুতি হতে পারেন তারা।

এদিকে ডিএবি আজ রোববার ব্যাংকগুলোর উদ্দেশে চিঠি দিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, তারা ব্যাংক খুলতে পারে, তবে সপ্তাহে ২০০ ডলারের বেশি কেউ উত্তোলন করতে পারবে না। এটি করার মূল কারণ, মানুষ যাতে দৈনন্দিন কেনাকাটা বা প্রয়োজন মেটাতে পারে। তবে যেন একবারে অধিক অর্থ উত্তোলন করতে না পারে।

বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, দেশটির সরকারি খাতের ৪০ শতাংশই আসে বিদেশি সহায়তা থেকে। কিন্তু তালেবান ক্ষমতা দখলের পর এর বেশির ভাগই রয়েছে বন্ধ। দেশটিতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-আইএমএফের ৪৫ কোটি ডলারের তহবিল পৌঁছানোর কথা থাকলেও তাও আপাতত স্থগিত। বিশ্ব ব্যাংকও বন্ধ রেখেছে আর্থিক সহায়তা।

এ অবস্থায় বৈধ সরকার না থাকায় মার্কিন ফেডারেল ব্যাংকে জমা থাকা অর্থও আপাতত ছাড় হচ্ছে না। এভাবে চলতে থাকলে চরম অর্থনেতিক বিপর্যয়ে পড়বে আফগানিস্তানের মানুষ।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

এখনও বন্ধ ব্যাংক, সড়কে আফগানদের বিক্ষোভ

আপডেট : ১১:০০:৪৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ অগাস্ট ২০২১
তালেবান ক্ষমতা দখলের পর আফগানিস্তানের অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন আফগানরা। প্রায় দুই সপ্তাহ পার হয়ে গেছে কিন্তু এখনো চালু হয়নি আফগানিস্তানের ব্যাংকগুলো। তার ওপর তালেবানি শাসন কায়েম হওয়ায় আর্থিক সহায়তা বন্ধ করে দিয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা। এর প্রভাব পড়েছে তাদের জীবনযাপনের ওপর। এমন অবস্থায় গতকাল শনিবার শত শত মানুষ প্রতিবাদ জানাতে কাবুলের রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করে। খবর সিএনএনের

খবরে বলা হয়েছে, ব্যাংক বন্ধ। টাকা তুলতে না পারায় ফুরিয়ে আসছে হাতে থাকা শেষ সম্বল। তালেবান শাসনে বিপর্যস্ত এই সময়ে আর্থিক সংকট দিন দিন প্রকট হয়ে উঠছে আফগানদের।

ব্যাংকে জমানো টাকা তুলতে না পারায় তাদের দৈনন্দিন জীবনে দেখা দিচ্ছে টানাপোড়েন। এটিএম বুথেও মিলছে না দেশটির মুদ্রা আফগানি। অনেক কর্মী কাজে ফিরতে না পারায় দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকেও চলছে অচলাবস্থা। নগদ অর্থের জন্য বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর আবেদনও রক্ষা করতে পারছে না দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

গত ১৫ আগস্ট রাজধানীতে প্রবেশের পর তালেবানদের প্রথম সিদ্ধান্তের মধ্যে একটি ছিলো ব্যাংক বন্ধ রাখা। আফগান মুদ্রার পতন এবং বিপুল পরিমাণ অর্থ উত্তোলন রোধ করতে ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান এবং এক্সচেঞ্জ পয়েন্ট বন্ধ করার নির্দেশ দেয় তালেবানরা।

নিরাপত্তার জন্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে আফগানিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন বর্তমান কর্মচারী সিএনএনকে বলেন, কারও কাছে টাকা নেই, অনেক পরিবারের কাছে তাদের দৈনন্দিন ব্যয় মেটানোর জন্য কোনো অর্থই নেই। অনেকের বেতন-ভাতাও বন্ধ করা হয়েছে।

তবে গতকাল শনিবার রাজধানীর কিছু ব্যাংক পুনরায় খোলার নির্দেশ দিয়েছে তালেবানরা। তবে আফগান সংবাদমাধ্যম জামা প্রেসের তথ্য অনুযায়ী, এখনো ব্যাংক খোলা হয়নি। তাই অনেক মানুষই রাস্তায় নেমেছে। বেসরকারি ব্যাংকের মালিকেরা সেন্ট্রাল ব্যাংক অব আফগানিস্তান (ডিএবি) থেকে আদেশ না পাওয়া পর্যন্ত কাজ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তারা মনে করছেন, সেন্ট্রাল ব্যাংকের নির্দেশ না থাকলে পরে আর্থিক নীতি থেকে বিচ্যুতি হতে পারেন তারা।

এদিকে ডিএবি আজ রোববার ব্যাংকগুলোর উদ্দেশে চিঠি দিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, তারা ব্যাংক খুলতে পারে, তবে সপ্তাহে ২০০ ডলারের বেশি কেউ উত্তোলন করতে পারবে না। এটি করার মূল কারণ, মানুষ যাতে দৈনন্দিন কেনাকাটা বা প্রয়োজন মেটাতে পারে। তবে যেন একবারে অধিক অর্থ উত্তোলন করতে না পারে।

বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, দেশটির সরকারি খাতের ৪০ শতাংশই আসে বিদেশি সহায়তা থেকে। কিন্তু তালেবান ক্ষমতা দখলের পর এর বেশির ভাগই রয়েছে বন্ধ। দেশটিতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-আইএমএফের ৪৫ কোটি ডলারের তহবিল পৌঁছানোর কথা থাকলেও তাও আপাতত স্থগিত। বিশ্ব ব্যাংকও বন্ধ রেখেছে আর্থিক সহায়তা।

এ অবস্থায় বৈধ সরকার না থাকায় মার্কিন ফেডারেল ব্যাংকে জমা থাকা অর্থও আপাতত ছাড় হচ্ছে না। এভাবে চলতে থাকলে চরম অর্থনেতিক বিপর্যয়ে পড়বে আফগানিস্তানের মানুষ।