ঢাকা ১১:৩৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মানিকগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগ কমিটি নিয়ে নানা প্রশ্ন

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ০২:১৫:৩০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • / 96
মানিকগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটি নিয়ে চলছে সমালোচনার ঝড়, রয়েছে নানা প্রশ্ন। অনুমোদন পাওয়া কমিটির বিভিন্ন সদস্যের বিরুদ্ধে রয়েছে বয়স জালিয়াতি, ব্যবসায়ী, বিবাহিত, ধর্ষণ, মাদকদ্রব্য, ছিনতাইসহ বহু অভিযোগ।

চলতি বছরের ২৬ জুলাই বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত মানিকগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে এম. এ সিফাদ কোরাইশী সুমনকে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি করা হয়।

অভিযোগ রয়েছে, সভাপতি এম. এ সিফাত কোরাইশী সুমনের পড়াশোনা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত। বর্তমানে পেশায় তিনি একজন ব্যবসায়ী। এ সংক্রান্ত একটি হলফনামাও রয়েছে। এর আগে এম. এ সিফাত কোরাইশী সুমনের নামে বয়স জালিয়াতির প্রমাণসহ গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। যার তথ্য প্রমাণও রয়েছে। এম. এ সিফাত কোরাইশী সুমন এবং তার জমজ ভাই ইরাদ কোরাইশীর মানিকগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন খাতায় জন্ম-তারিখ উল্লেখ রয়েছে ৫ মে ১৯৯১ সাল। পরবর্তীতে তার জাতীয় পরিচয়পত্রেও একই জন্ম-তারিখ উল্লেখ করা হয়। তবে এম এ সিফাত কোরাইশী ছাত্রলীগের পদ পেতে বেছে নিয়েছেন ভিন্ন পথ। তথ্য অনুযায়ী, নিজেকে অষ্টম শ্রেণি পাশ দেখিয়ে নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করেন, যেখানে জন্ম-তারিখ উল্লেখ করেছেন ১৩ জুলাই ১৯৯২।

এসব অভিযোগের বিষয়ে কোরাইশী সুমনকে বার বার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

এছাড়াও মানিকগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটির সহ-সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিবের বিরুদ্ধে সাটুরিয়া থানায় ২০১৯ সালের ১৮ নভেম্বরে রয়েছে সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণ মামলা।

মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, অভিযুক্ত হাবিবুর রহমান হাবিব (২৫) ঢাকার ধামরাই উপজেলার পশ্চিম নান্দেশ্বরী গ্রামের বাসিন্দা। ২০১৯ সালের ১৯ নভেম্বর একটি জাতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে তৎকালীন সাটুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার মন্তব্যসহ ঘটনার উল্লেখ রয়েছে। মামলাটি বর্তমানে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর অধীনে রয়েছে।

এছাড়াও জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হামজা খানের নামে রয়েছে বিস্তর অভিযোগ আইসিটি অপহরণ মামলা ছাড়াও ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে মাদকদ্রব্যসহ গ্রেপ্তার হয়ে তিন মাস জেলে ছিলেন। তিনি এ সময় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।

এছাড়াও নবগঠিত কমিটির ১নং সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শামীউর রহমান বিবাহিত। বিয়ের রেজিস্ট্রেশনের কপি রয়েছে। হরিরামপুর থানায় তার বিরুদ্ধে মাদক, ছিনতাইসহ একাধিক মামলা রয়েছে। এ বিষয়ে শামীউর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনিও বিষয়টি এড়িয়ে যান।

নবগঠিত কমিটির অপর সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হাসান মিম মাদক ব্যবসায়ী। নিজে মাদক গ্রহণ করছেন এমন ভিডিও ফুটেজ রয়েছে। যদিও তিনি এ বিষয়ে দাবি করেন, ভিডিও ফুটেজের ব্যক্তি তিনি নন। তবে একাধিক সূত্র থেকে তার মাদক ব্যবসা ও মাদক গ্রহণের সাক্ষ্য রয়েছে। এছাড়াও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাদিম হোসেনের মাদক ব্যবসা নিয়ে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

এদিকে একই কমিটির সহ-সভাপতি শরিফুল আলম শরিফ এবং আসাদুজ্জামান অমিত বিবাহিত হয়েও কমিটিতে স্থান পেয়েছেন। সহ-সভাপতি আসিফ আহমেদ পিয়াসের বিবাহের কাগজপত্র এবং ছবি রয়েছে।

এ বিষয়ে ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাদের মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

মানিকগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগ কমিটি নিয়ে নানা প্রশ্ন

আপডেট : ০২:১৫:৩০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১
মানিকগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটি নিয়ে চলছে সমালোচনার ঝড়, রয়েছে নানা প্রশ্ন। অনুমোদন পাওয়া কমিটির বিভিন্ন সদস্যের বিরুদ্ধে রয়েছে বয়স জালিয়াতি, ব্যবসায়ী, বিবাহিত, ধর্ষণ, মাদকদ্রব্য, ছিনতাইসহ বহু অভিযোগ।

চলতি বছরের ২৬ জুলাই বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত মানিকগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে এম. এ সিফাদ কোরাইশী সুমনকে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি করা হয়।

অভিযোগ রয়েছে, সভাপতি এম. এ সিফাত কোরাইশী সুমনের পড়াশোনা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত। বর্তমানে পেশায় তিনি একজন ব্যবসায়ী। এ সংক্রান্ত একটি হলফনামাও রয়েছে। এর আগে এম. এ সিফাত কোরাইশী সুমনের নামে বয়স জালিয়াতির প্রমাণসহ গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। যার তথ্য প্রমাণও রয়েছে। এম. এ সিফাত কোরাইশী সুমন এবং তার জমজ ভাই ইরাদ কোরাইশীর মানিকগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন খাতায় জন্ম-তারিখ উল্লেখ রয়েছে ৫ মে ১৯৯১ সাল। পরবর্তীতে তার জাতীয় পরিচয়পত্রেও একই জন্ম-তারিখ উল্লেখ করা হয়। তবে এম এ সিফাত কোরাইশী ছাত্রলীগের পদ পেতে বেছে নিয়েছেন ভিন্ন পথ। তথ্য অনুযায়ী, নিজেকে অষ্টম শ্রেণি পাশ দেখিয়ে নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করেন, যেখানে জন্ম-তারিখ উল্লেখ করেছেন ১৩ জুলাই ১৯৯২।

এসব অভিযোগের বিষয়ে কোরাইশী সুমনকে বার বার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

এছাড়াও মানিকগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটির সহ-সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিবের বিরুদ্ধে সাটুরিয়া থানায় ২০১৯ সালের ১৮ নভেম্বরে রয়েছে সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণ মামলা।

মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, অভিযুক্ত হাবিবুর রহমান হাবিব (২৫) ঢাকার ধামরাই উপজেলার পশ্চিম নান্দেশ্বরী গ্রামের বাসিন্দা। ২০১৯ সালের ১৯ নভেম্বর একটি জাতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে তৎকালীন সাটুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার মন্তব্যসহ ঘটনার উল্লেখ রয়েছে। মামলাটি বর্তমানে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর অধীনে রয়েছে।

এছাড়াও জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হামজা খানের নামে রয়েছে বিস্তর অভিযোগ আইসিটি অপহরণ মামলা ছাড়াও ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে মাদকদ্রব্যসহ গ্রেপ্তার হয়ে তিন মাস জেলে ছিলেন। তিনি এ সময় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।

এছাড়াও নবগঠিত কমিটির ১নং সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শামীউর রহমান বিবাহিত। বিয়ের রেজিস্ট্রেশনের কপি রয়েছে। হরিরামপুর থানায় তার বিরুদ্ধে মাদক, ছিনতাইসহ একাধিক মামলা রয়েছে। এ বিষয়ে শামীউর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনিও বিষয়টি এড়িয়ে যান।

নবগঠিত কমিটির অপর সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হাসান মিম মাদক ব্যবসায়ী। নিজে মাদক গ্রহণ করছেন এমন ভিডিও ফুটেজ রয়েছে। যদিও তিনি এ বিষয়ে দাবি করেন, ভিডিও ফুটেজের ব্যক্তি তিনি নন। তবে একাধিক সূত্র থেকে তার মাদক ব্যবসা ও মাদক গ্রহণের সাক্ষ্য রয়েছে। এছাড়াও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাদিম হোসেনের মাদক ব্যবসা নিয়ে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

এদিকে একই কমিটির সহ-সভাপতি শরিফুল আলম শরিফ এবং আসাদুজ্জামান অমিত বিবাহিত হয়েও কমিটিতে স্থান পেয়েছেন। সহ-সভাপতি আসিফ আহমেদ পিয়াসের বিবাহের কাগজপত্র এবং ছবি রয়েছে।

এ বিষয়ে ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাদের মন্তব্য পাওয়া যায়নি।