ঢাকা ০৪:৪৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাস-লঞ্চমালিকদের ‘ফাঁদে’ পা দিয়েছে সরকার

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ১১:০৫:৩২ পূর্বাহ্ন, সোমাবার, ৮ নভেম্বর ২০২১
  • / 86
বাস, লঞ্চ ও ট্রাকমালিকদের ফাঁদে পা দিয়ে সরকার একতরফাভাবে যানবাহনের ভাড়া বাড়িয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

একইসঙ্গে বর্ধিত গণপরিবহন ভাড়া প্রত্যাখ্যান করে একটি ন্যায্য এবং গ্রহণযোগ্য ভাড়া নির্ধারণের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

সোমবার সকালে সেগুনবাগিচা শিশু কল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে বর্ধিত ভাড়ার প্রতিবাদে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ দাবি জানান।

তিনি বলেন, জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির পর সব পক্ষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে সহনীয় মাত্রায় ভাড়া বৃদ্ধি করা হবে বলে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হলেও এই ভাড়া বৃদ্ধির ক্ষেত্রে তা প্রতিফলন হয়নি।

‘বাস ও লঞ্চ মালিকদের পাতানো ফাঁদে পা দিয়ে সরকার তাদের চাহিদা অনুযায়ী একচেটিয়া ভাড়া বাড়িয়ে দিতে যাত্রী প্রতিনিধি বাদ দিয়ে বাস ও লঞ্চের ভাড়া বৃদ্ধি করেছে।’

বিআরটিএ ও বিআইডাব্লিউটিএ-এর অনেকেই মালিকদের পকেটে ঢুকে পড়েছে বলে অভিযোগ সংগঠনটির মহাসচিব বলেন, যাত্রীর স্বার্থ বিকিয়ে দিয়ে গলাকাটা ভাড়া নির্ধারণের ফলে দেশের নিম্ন ও মধ্য আয়ের জনসাধারণকে আবারও একদফা গভীর সংকটে ঠেলে দেয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহানগরীতে যেভাবে বাস ভাড়া বাড়ানো হয়েছে তা জুলুম বলা চলে, এখানে সিএনজির মূল্য বৃদ্ধির পর একদফা ভাড়া বাড়ানো হয়েছিল আবার তেলের মূল্য বৃদ্ধির পর আবার ভাড়া বাড়ানো হলো। এতে যাত্রী সাধারণ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলো। তাই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহানগরীর বর্ধিত বাস ভাড়া কার্যকরের আগে এখানে কি পরিমাণ বাস গ্যাসে চলে আর তেলে চলে তার সুরাহা হওয়া দরকার।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ভাড়া নির্ধারণের ব্যয় বিশ্লেষণে পুরনো বাসকে নতুন হিসেবে দেখানো হয়েছে, চালক-হেলপারদের বেতন, বোনাস দেওয়ার মিথ্যা তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। ২০ বছরের পুরোনো বাসেও ব্যাংক লোন দেখানো হয়েছে। এভাবে নানা খাতে অযৌক্তিক ও অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি দেখিয়ে একলাফে ১.৪২ পয়সার ভাড়া ১.৮০ পয়সা করা হয়েছে। তিনি বলেন সঠিক ব্যয় বিশ্লেষণ করলে বড়জোর ১.৬০ পয়সা নির্ধারণ করা যেত।

‘এরকম অন্যায্য ও অগ্রহণযোগ্য ভাড়া বাতিল করে ১৫০০ থেকে ২০০০ যাত্রীধারণ সক্ষমতার বড় লঞ্চের ভাড়া কিলোমিটার প্রতি ১ টাকা ৮০ পয়সা এবং ছোট ছোট নৌকা, ডিঙ্গি নৌকা ও লঞ্চ, ট্রলার যাদের যাত্রীধারণ সক্ষমতা ১৫০ থেকে ৫০০ জন, পরিচালন ব্যয় কম এসব নৌ-যানের ভাড়া ১টাকা ২০ পয়সা করার দাবি জানাচ্ছি।’

এই বর্ধিত ভাড়া বাতিল করে যাত্রী প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি ন্যায্য ও গ্রহণযোগ্য, বাস্তবসম্মত ভাড়া নির্ধারণের জন্য তারা সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের উপদেষ্টামণ্ডলী সদস্য শরিফুজ্জামান শরিফ, সহ-সভাপতি তাওহীদুল হক লিটন, যুগ্ম মহাসচিব এম. মনিরুল হক, প্রচার সম্পাদক আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

বাস-লঞ্চমালিকদের ‘ফাঁদে’ পা দিয়েছে সরকার

আপডেট : ১১:০৫:৩২ পূর্বাহ্ন, সোমাবার, ৮ নভেম্বর ২০২১
বাস, লঞ্চ ও ট্রাকমালিকদের ফাঁদে পা দিয়ে সরকার একতরফাভাবে যানবাহনের ভাড়া বাড়িয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

একইসঙ্গে বর্ধিত গণপরিবহন ভাড়া প্রত্যাখ্যান করে একটি ন্যায্য এবং গ্রহণযোগ্য ভাড়া নির্ধারণের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

সোমবার সকালে সেগুনবাগিচা শিশু কল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে বর্ধিত ভাড়ার প্রতিবাদে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ দাবি জানান।

তিনি বলেন, জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির পর সব পক্ষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে সহনীয় মাত্রায় ভাড়া বৃদ্ধি করা হবে বলে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হলেও এই ভাড়া বৃদ্ধির ক্ষেত্রে তা প্রতিফলন হয়নি।

‘বাস ও লঞ্চ মালিকদের পাতানো ফাঁদে পা দিয়ে সরকার তাদের চাহিদা অনুযায়ী একচেটিয়া ভাড়া বাড়িয়ে দিতে যাত্রী প্রতিনিধি বাদ দিয়ে বাস ও লঞ্চের ভাড়া বৃদ্ধি করেছে।’

বিআরটিএ ও বিআইডাব্লিউটিএ-এর অনেকেই মালিকদের পকেটে ঢুকে পড়েছে বলে অভিযোগ সংগঠনটির মহাসচিব বলেন, যাত্রীর স্বার্থ বিকিয়ে দিয়ে গলাকাটা ভাড়া নির্ধারণের ফলে দেশের নিম্ন ও মধ্য আয়ের জনসাধারণকে আবারও একদফা গভীর সংকটে ঠেলে দেয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহানগরীতে যেভাবে বাস ভাড়া বাড়ানো হয়েছে তা জুলুম বলা চলে, এখানে সিএনজির মূল্য বৃদ্ধির পর একদফা ভাড়া বাড়ানো হয়েছিল আবার তেলের মূল্য বৃদ্ধির পর আবার ভাড়া বাড়ানো হলো। এতে যাত্রী সাধারণ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলো। তাই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহানগরীর বর্ধিত বাস ভাড়া কার্যকরের আগে এখানে কি পরিমাণ বাস গ্যাসে চলে আর তেলে চলে তার সুরাহা হওয়া দরকার।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ভাড়া নির্ধারণের ব্যয় বিশ্লেষণে পুরনো বাসকে নতুন হিসেবে দেখানো হয়েছে, চালক-হেলপারদের বেতন, বোনাস দেওয়ার মিথ্যা তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। ২০ বছরের পুরোনো বাসেও ব্যাংক লোন দেখানো হয়েছে। এভাবে নানা খাতে অযৌক্তিক ও অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি দেখিয়ে একলাফে ১.৪২ পয়সার ভাড়া ১.৮০ পয়সা করা হয়েছে। তিনি বলেন সঠিক ব্যয় বিশ্লেষণ করলে বড়জোর ১.৬০ পয়সা নির্ধারণ করা যেত।

‘এরকম অন্যায্য ও অগ্রহণযোগ্য ভাড়া বাতিল করে ১৫০০ থেকে ২০০০ যাত্রীধারণ সক্ষমতার বড় লঞ্চের ভাড়া কিলোমিটার প্রতি ১ টাকা ৮০ পয়সা এবং ছোট ছোট নৌকা, ডিঙ্গি নৌকা ও লঞ্চ, ট্রলার যাদের যাত্রীধারণ সক্ষমতা ১৫০ থেকে ৫০০ জন, পরিচালন ব্যয় কম এসব নৌ-যানের ভাড়া ১টাকা ২০ পয়সা করার দাবি জানাচ্ছি।’

এই বর্ধিত ভাড়া বাতিল করে যাত্রী প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি ন্যায্য ও গ্রহণযোগ্য, বাস্তবসম্মত ভাড়া নির্ধারণের জন্য তারা সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের উপদেষ্টামণ্ডলী সদস্য শরিফুজ্জামান শরিফ, সহ-সভাপতি তাওহীদুল হক লিটন, যুগ্ম মহাসচিব এম. মনিরুল হক, প্রচার সম্পাদক আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।