ঢাকা ০১:১০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজধানীতে ডায়রিয়ার প্রকোপ নিয়ে উদ্বেগ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ০৮:৪৭:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২২
  • / 108
সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীতে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। বিষয়টি নিয়ে বিশেষজ্ঞ মহলে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

অন্যদিকে ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশকে ৭৫ লাখ ডোজ কলেরার টিকা দেবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। আগামী মে মাসে এই টিকা দেশে আসবে।

মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। এর আগে বেলা ১১টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ে তার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বৈঠকে কলেরার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলাপ-আলোচনা হয়েছে। কলেরা বাড়ার বিষয়টি আমিও ব্যক্তিগতভাবে ১০-১২ দিন ধরে পর্যবেক্ষণ করছি। আইসিডিডিআরবি, আইইডিসিআর, ডিজি হেলথ এবং ওয়াসার সবার সঙ্গে আমি ব্যক্তিগতভাবে কথা বলেছি। ঢাকায় গত ২০-২৫ বছরের মধ্যে সম্ভবত এমন ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা যায়নি।

কলেরা বাড়ার কয়েকটি কারণ আমরা বের করেছি। বিষয়গুলো নিয়ে কেবিনেটেও আলোচনা হয়েছে। আমরা দেখেছি, ওয়াসা যে পানি দেয়, তার কোনো সোর্সেই ব্যাকটেরিয়া নেই। পানিটা যে গাড়ি নিয়ে আসছে তার অনেক জায়গায় লিক আছে।

তিনি বলেন, অনেক জায়গায় এখন হাইরাইজ হয়ে যাচ্ছে। উদাহরণ হিসেবে যদি ধানমন্ডির কথা বলি, এখন এখানে বড় বড় এপার্টমেন্ট হয়ে গেছে। স্বাভাবিকভাবেই পানির চাহিদা বেড়েছে। যেখানে নতুন করে লাইন লে ডাউন না করা হয়েছে সেখানে অসুবিধা হচ্ছে। এখন মানুষ ওই জায়গায় নিজেরা কেটে পাম্প বসিয়ে পানি টেনে নিয়ে আসছে। যেখানে বসাচ্ছে সেখানে তো লিক থেকে যাচ্ছে। সেখান দিয়ে ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করছে। এটা অন্যতম একটা কারণ।

সচিব বলেন, বিশেষজ্ঞরা আমাদের বলেছেন, কয়েকটি জায়গায় পানি টেস্ট করে দেখা গেছে সেখানে ক্লোরিনের শর্টেজ আছে। এটাও এই পরিস্থিতির একটি বড় কারণ। বিষয়টিকে ওয়াসাকে জানানোর পর তারা ক্লোরিন গ্রো করেছে। আরেকটি বিষয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মানুষ ট্যাংকগুলো পরিষ্কার করে না। এই রিসার্ভারগুলো ৩/৬ মাস পর পর পরিষ্কার না করলে ব্যাকটেরিয়া ডেভেলপ করবে। এটিও একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ। সবাইকে একটু মোটিভেট করতে হবে। ওয়াসাকে বলা হয়েছে, আমরা পিআইডিকেও বলে দিচ্ছি, তারা এখন থেকেই ম্যাসিভ প্রোমোশন ক্যাম্পেইন করবে।

খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ডব্লিউএইচও আমাদের ৭ দশমিক ৫ মিলিয়ন (৭৫ লাখ) কলেরা টিকা দেবে। এই টিকার দুই ডোজ নিলে ৩ বছর পর্যন্ত কলেরা বা ডায়রিয়া থেকে নিরাপদ থাকা যাবে।

আগামী মে মাসের ১০ থেকে ১৫ তারিখের মধ্যে দেশে এসব টিকা চলে আসবে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

মন্ত্রিসভা বৈঠকে নির্ধারিত আলোচনার বাইরে কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার থেকে জানানো হয়েছে- বাংলাদেশের যারা দেশগুলো যাচ্ছেন, তাদের অনেকের মধ্যে ডায়রিয়ার জীবাণু পাওয়া যাচ্ছে। এ বিষয়ে আমাদের টেকনিক্যাল টিম বলছে, যারা বিদেশে যান তারা এয়ারপোর্টের আশপাশের ছোটখাটো হোটেলগুলোতে দুই-তিন দিন থাকেন। আমরা গত ১০-১২ দিন ধরে নির্দেশনা দিয়ে দিয়েছি, এখন তারা অপারেশন চালাচ্ছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

রাজধানীতে ডায়রিয়ার প্রকোপ নিয়ে উদ্বেগ

আপডেট : ০৮:৪৭:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২২
সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীতে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। বিষয়টি নিয়ে বিশেষজ্ঞ মহলে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

অন্যদিকে ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশকে ৭৫ লাখ ডোজ কলেরার টিকা দেবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। আগামী মে মাসে এই টিকা দেশে আসবে।

মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। এর আগে বেলা ১১টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ে তার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বৈঠকে কলেরার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলাপ-আলোচনা হয়েছে। কলেরা বাড়ার বিষয়টি আমিও ব্যক্তিগতভাবে ১০-১২ দিন ধরে পর্যবেক্ষণ করছি। আইসিডিডিআরবি, আইইডিসিআর, ডিজি হেলথ এবং ওয়াসার সবার সঙ্গে আমি ব্যক্তিগতভাবে কথা বলেছি। ঢাকায় গত ২০-২৫ বছরের মধ্যে সম্ভবত এমন ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা যায়নি।

কলেরা বাড়ার কয়েকটি কারণ আমরা বের করেছি। বিষয়গুলো নিয়ে কেবিনেটেও আলোচনা হয়েছে। আমরা দেখেছি, ওয়াসা যে পানি দেয়, তার কোনো সোর্সেই ব্যাকটেরিয়া নেই। পানিটা যে গাড়ি নিয়ে আসছে তার অনেক জায়গায় লিক আছে।

তিনি বলেন, অনেক জায়গায় এখন হাইরাইজ হয়ে যাচ্ছে। উদাহরণ হিসেবে যদি ধানমন্ডির কথা বলি, এখন এখানে বড় বড় এপার্টমেন্ট হয়ে গেছে। স্বাভাবিকভাবেই পানির চাহিদা বেড়েছে। যেখানে নতুন করে লাইন লে ডাউন না করা হয়েছে সেখানে অসুবিধা হচ্ছে। এখন মানুষ ওই জায়গায় নিজেরা কেটে পাম্প বসিয়ে পানি টেনে নিয়ে আসছে। যেখানে বসাচ্ছে সেখানে তো লিক থেকে যাচ্ছে। সেখান দিয়ে ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করছে। এটা অন্যতম একটা কারণ।

সচিব বলেন, বিশেষজ্ঞরা আমাদের বলেছেন, কয়েকটি জায়গায় পানি টেস্ট করে দেখা গেছে সেখানে ক্লোরিনের শর্টেজ আছে। এটাও এই পরিস্থিতির একটি বড় কারণ। বিষয়টিকে ওয়াসাকে জানানোর পর তারা ক্লোরিন গ্রো করেছে। আরেকটি বিষয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মানুষ ট্যাংকগুলো পরিষ্কার করে না। এই রিসার্ভারগুলো ৩/৬ মাস পর পর পরিষ্কার না করলে ব্যাকটেরিয়া ডেভেলপ করবে। এটিও একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ। সবাইকে একটু মোটিভেট করতে হবে। ওয়াসাকে বলা হয়েছে, আমরা পিআইডিকেও বলে দিচ্ছি, তারা এখন থেকেই ম্যাসিভ প্রোমোশন ক্যাম্পেইন করবে।

খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ডব্লিউএইচও আমাদের ৭ দশমিক ৫ মিলিয়ন (৭৫ লাখ) কলেরা টিকা দেবে। এই টিকার দুই ডোজ নিলে ৩ বছর পর্যন্ত কলেরা বা ডায়রিয়া থেকে নিরাপদ থাকা যাবে।

আগামী মে মাসের ১০ থেকে ১৫ তারিখের মধ্যে দেশে এসব টিকা চলে আসবে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

মন্ত্রিসভা বৈঠকে নির্ধারিত আলোচনার বাইরে কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার থেকে জানানো হয়েছে- বাংলাদেশের যারা দেশগুলো যাচ্ছেন, তাদের অনেকের মধ্যে ডায়রিয়ার জীবাণু পাওয়া যাচ্ছে। এ বিষয়ে আমাদের টেকনিক্যাল টিম বলছে, যারা বিদেশে যান তারা এয়ারপোর্টের আশপাশের ছোটখাটো হোটেলগুলোতে দুই-তিন দিন থাকেন। আমরা গত ১০-১২ দিন ধরে নির্দেশনা দিয়ে দিয়েছি, এখন তারা অপারেশন চালাচ্ছেন।