তিনদিন ধরে খোলা আকাশের নিচে শিক্ষকরা
- আপডেট : ১২:১৭:৫৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ অক্টোবর ২০২১
- / 175
এর আগে গত সোমবার সকালে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক মানববন্ধন শেষে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রা করেন তারা। তবে পদযাত্রা শাহবাগে এসে পুলিশের বাধায় বিফল হলে তারা শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান নেন।
অবস্থান কর্মসূচিতে এসে এ পর্যন্ত ছয়জন শিক্ষক অসুস্থ হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইসরাত জাহান। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ইশরাত জাহান টাঙ্গাইল হাইকেয়ার (বধির স্কুল) পরিচালনা করেছেন ৩০ বছর ধরে। তিনি বলেন, আমরা শিক্ষকদের বেতন-ভাতা দিতে পারি না। তারা বছরের পর বছর না খেয়ে না পরে মানবতার সেবায় কাজ করে যাচ্ছে। তাদের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর এমপিও প্রয়োজন।
ঢাকা হাইকেয়ার (বধির স্কুল) এর শিক্ষক পার্থ ঘোষ বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে এই পেশায় আছি। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এখন পর্যন্ত এসব বিদ্যালয়ের বিষয়ে কোনো আশানুরূপ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি। নিরুপায় হয়ে আমরা আজ রাজপথে বসেছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা এখানে অবস্থান করবেন বলে জানান তিনি।
ভাতুরী আরামপুর প্রতিবন্ধী স্কুলের শিক্ষক মনজুর আলম। ঠাকুরগাঁও থেকে এসেছেন তিনি। তিনি বলেন, আমরা বেতন-ভাতা ছাড়াই দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকতা করছি। এভাবে চলতে থাকলে একসময় গিয়ে স্কুলগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরাও শিক্ষা থেকে পিছেয়ে পড়বে।
মানববন্ধনে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের পক্ষে ১১টি দাবি পেশ করেন বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। তাদের দাবিগুলো হলো-
১. প্রতিবন্ধিতা সম্পর্কিত সমন্বিত বিশেষ শিক্ষা নীতিমালা অনুযায়ী বিদ্যালয়গুলোর স্বীকৃতি ও এমপিও প্রদান।
২. স্বীকৃতির তারিখ হতে শতভাগ বেতন ভাতা ও সব ধরনের সুবিধাদান নিশ্চিতকরণ।
৩. সব বিদ্যালয়ের প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের শতভাগ উপবৃত্তি প্রদান।
৪. সব বিদ্যালয়ে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষা কারিকুলাম অনুযায়ী বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ নিশ্চিতকরণ।
৫. প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের উপযোগী স্বাস্থ্যসম্মত খাবার পরিবেশন করা।
৬. সব বিদ্যালয়ে চাহিদানুযায়ী শিক্ষা উপকরণ শতভাগ নিশ্চিত করা।
৭. প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়গুলোতে নিয়মিত মনিটরিং নিশ্চিত করা।
৮. শিক্ষক-কর্মচারীদের মানোন্নয়নমূলক ট্রেনিংসহ সংশ্লিষ্ট সব সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা।
৯. শতভাগ বিদ্যালয়ে আধুনিক মানসম্পন্ন প্রতিবন্ধীবান্ধব ভবন নির্মাণ নিশ্চিত করা।
১০. প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়গুলোতে আধুনিক থেরাপি সরঞ্জাম সরবরাহসহ থেরাপি সেন্টার চালু করা।
১১. শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন শেষে যোগ্যতা অনুযায়ী কর্মসংস্থানসহ আত্ম-নির্ভরশীল জীবন-যাপনের নিশ্চয়তা প্রদান করা।