ঢাকা ০৯:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নুহাশ পল্লীতে হুমায়ূন আহমেদে’র ৭৩তম জন্মদিন পালন

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ১০:৪৭:৫৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২১
  • / 79
হুমায়ূন আহমেদকে বাংলাদেশের সম্পদ উল্লেখ করে প্রয়াত এ কথা সাহিত্যিকের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন বলেছেন, ‘যারা হুমায়ূনকে ভালোবাসেন, তাদের অনেকেই হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে কাজ করতে চান। তবে একটা অনুরোধ, তাকে নিয়ে যা ইচ্ছে তা কেউ করবেন না। গত ১০ বছরে হুমায়ূন আহমেদের সৃষ্টিকর্ম নিয়ে যেনতেনভাবে কাজ করার চেষ্টা হয়েছে। হুমায়ুন আহমেদকে নিয়ে ঠাঁস করে একটা সিনেমা বানিয়ে ফেলা, একটা বই লিখে ফেলার বিষয়গুলো আমার খুব খারাপ লেগেছে।’

শনিবার শাওন গাজীপুরের নুহাশপল্লীতে স্বামীর ৭৩তম জন্মদিন উপলক্ষে তার কবরস্থানে পুষ্পস্তবক অর্পন, কবর জিয়ারত, কেক কাটা ও দোয়া অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে এসব কথা বলেন। এসময় তার সঙ্গে শিশু পুত্র নিশাত ও নিনিদসহ নুহাশপল্লীর স্টাফরা উপস্থিত ছিলেন।

সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কবর জিয়ারত, দোয়া ও পুষ্পস্তক অর্পণ করে দুই ছেলেকে নিয়ে কেক কাটেন শাওন। এছাড়াও সকাল থেকেই ভক্তরা দুর-দূরান্ত থেকে গিয়ে প্রিয় লেখকের কবরে শ্রদ্ধা জানান, ‘নুহাশ পল্লী ঘুরে দেখেন।’

শাওন সাংবাদিকদের আরও বলেন, ‘হুমায়ুন আহমেদকে নিয়ে অনেকে ভালোভাবে গবেষণা করছেন, পিএইচডি করছেন। বিভিন্ন ইউনিভার্সিটিতে হুমায়ুন আহমেদকে নিয়ে পিএইচডি হচ্ছে, অনেকেই তাকে নিয়ে চর্চা করছেন। সেই চর্চাটা বাড়ুক, ছাত্ররা হুমায়ূন আহমেদ সম্পর্কে জানুক। তাকে নিয়ে ভুল কোনও চর্চা না হউক, এটা আমার একটা বড় প্রত্যাশা। কারণ হুমায়ূন আহমেদ বাংলাদেশের সম্পদ, সে সম্পদ নিয়ে ভাল মতো চর্চা হউক।’

শাওন আরো বলেন, যারা হুমায়ুন আহমেদকে ভালবাসেন, যারা হুমায়ুন আহমেদের পাঠক, হুমায়ুন আহমেদের নাটকের-সিনেমার দর্শক, হুমায়ুন আহমেদের গানগুলো যারা ভালবাসেন, তারা হুমায়ুন আহমেদকে আজীবন ভালবাসেন এবং ভালবেসে যাবেন। তারাই পরবর্তী প্রজন্মের কাছে হুমায়ূন আহমেদকে তুলে দেবেন, হুমায়ূন আহমেদের লেখা, সৃষ্টিকর্ম তুলে দেবেন। এটাই আমার এবং আমাদের পরিবারের আজীবনের প্রাপ্তি হবে।’

নুহাশ পল্লীর ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম বুলবুল জানান, ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন হুমায়ূন আহমেদ। তার প্রথম নাম ছিল শামসুর রহমান পরে তার নাম পাল্টে হুমায়ুন আহমেদ রাখা হয়। তার ডাক নাম ছিল কাজল। ২০১২ সালের ১৯ জুলাই তিনি আমেরিকার একটি হাসপাতালে ক্যান্সারের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। পরে তাকে গাজীপুরের নুহাশ পল্লীর লিচুগাছ তলায় দাফন করা হয়।

নুহাশ পল্লীর ভাস্কর আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘আগের দিন শুক্রবার দিবাগত রাত ৪টার দিকে শাওন তার দুই পুত্রকে নিয়ে নুহাশপল্লীতে যান। রাত ১২টা ১মিনিটে নুহাশপল্লীর স্টাফরা ১০০১টা মোমবাতি প্রজ্জলন এবং কেক কাটেন।

ভাস্কর আসাদ হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন উপলক্ষে নুহাশপল্লীর বৃষ্টি বিলাশ কটেজে ৭৩টি ভাস্কর্যের এক প্রদর্শনীর আয়োজন করেন। যা ছিল সবই গাছের শিকড় দিয়ে তৈরি।

পড়ালেখা শেষে তিনি ঢাকাবিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়ণ বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। নব্বই দশকের মাঝামাঝি তিনি চাকুরি থেকে অবসর নিয়ে লেখালেখিতে পুরোপুরি মনোনিবেশ করেন। তিনি জীবদ্দশায় লিখেছেন দুই শতাধিক উপন্যাস। তিনি ছোটগল্পকার, গীতিকার, নাট্যকার ও চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবেও ছিলেন জনপ্রিয়তার শীর্ষে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

নুহাশ পল্লীতে হুমায়ূন আহমেদে’র ৭৩তম জন্মদিন পালন

আপডেট : ১০:৪৭:৫৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২১
হুমায়ূন আহমেদকে বাংলাদেশের সম্পদ উল্লেখ করে প্রয়াত এ কথা সাহিত্যিকের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন বলেছেন, ‘যারা হুমায়ূনকে ভালোবাসেন, তাদের অনেকেই হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে কাজ করতে চান। তবে একটা অনুরোধ, তাকে নিয়ে যা ইচ্ছে তা কেউ করবেন না। গত ১০ বছরে হুমায়ূন আহমেদের সৃষ্টিকর্ম নিয়ে যেনতেনভাবে কাজ করার চেষ্টা হয়েছে। হুমায়ুন আহমেদকে নিয়ে ঠাঁস করে একটা সিনেমা বানিয়ে ফেলা, একটা বই লিখে ফেলার বিষয়গুলো আমার খুব খারাপ লেগেছে।’

শনিবার শাওন গাজীপুরের নুহাশপল্লীতে স্বামীর ৭৩তম জন্মদিন উপলক্ষে তার কবরস্থানে পুষ্পস্তবক অর্পন, কবর জিয়ারত, কেক কাটা ও দোয়া অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে এসব কথা বলেন। এসময় তার সঙ্গে শিশু পুত্র নিশাত ও নিনিদসহ নুহাশপল্লীর স্টাফরা উপস্থিত ছিলেন।

সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কবর জিয়ারত, দোয়া ও পুষ্পস্তক অর্পণ করে দুই ছেলেকে নিয়ে কেক কাটেন শাওন। এছাড়াও সকাল থেকেই ভক্তরা দুর-দূরান্ত থেকে গিয়ে প্রিয় লেখকের কবরে শ্রদ্ধা জানান, ‘নুহাশ পল্লী ঘুরে দেখেন।’

শাওন সাংবাদিকদের আরও বলেন, ‘হুমায়ুন আহমেদকে নিয়ে অনেকে ভালোভাবে গবেষণা করছেন, পিএইচডি করছেন। বিভিন্ন ইউনিভার্সিটিতে হুমায়ুন আহমেদকে নিয়ে পিএইচডি হচ্ছে, অনেকেই তাকে নিয়ে চর্চা করছেন। সেই চর্চাটা বাড়ুক, ছাত্ররা হুমায়ূন আহমেদ সম্পর্কে জানুক। তাকে নিয়ে ভুল কোনও চর্চা না হউক, এটা আমার একটা বড় প্রত্যাশা। কারণ হুমায়ূন আহমেদ বাংলাদেশের সম্পদ, সে সম্পদ নিয়ে ভাল মতো চর্চা হউক।’

শাওন আরো বলেন, যারা হুমায়ুন আহমেদকে ভালবাসেন, যারা হুমায়ুন আহমেদের পাঠক, হুমায়ুন আহমেদের নাটকের-সিনেমার দর্শক, হুমায়ুন আহমেদের গানগুলো যারা ভালবাসেন, তারা হুমায়ুন আহমেদকে আজীবন ভালবাসেন এবং ভালবেসে যাবেন। তারাই পরবর্তী প্রজন্মের কাছে হুমায়ূন আহমেদকে তুলে দেবেন, হুমায়ূন আহমেদের লেখা, সৃষ্টিকর্ম তুলে দেবেন। এটাই আমার এবং আমাদের পরিবারের আজীবনের প্রাপ্তি হবে।’

নুহাশ পল্লীর ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম বুলবুল জানান, ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন হুমায়ূন আহমেদ। তার প্রথম নাম ছিল শামসুর রহমান পরে তার নাম পাল্টে হুমায়ুন আহমেদ রাখা হয়। তার ডাক নাম ছিল কাজল। ২০১২ সালের ১৯ জুলাই তিনি আমেরিকার একটি হাসপাতালে ক্যান্সারের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। পরে তাকে গাজীপুরের নুহাশ পল্লীর লিচুগাছ তলায় দাফন করা হয়।

নুহাশ পল্লীর ভাস্কর আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘আগের দিন শুক্রবার দিবাগত রাত ৪টার দিকে শাওন তার দুই পুত্রকে নিয়ে নুহাশপল্লীতে যান। রাত ১২টা ১মিনিটে নুহাশপল্লীর স্টাফরা ১০০১টা মোমবাতি প্রজ্জলন এবং কেক কাটেন।

ভাস্কর আসাদ হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন উপলক্ষে নুহাশপল্লীর বৃষ্টি বিলাশ কটেজে ৭৩টি ভাস্কর্যের এক প্রদর্শনীর আয়োজন করেন। যা ছিল সবই গাছের শিকড় দিয়ে তৈরি।

পড়ালেখা শেষে তিনি ঢাকাবিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়ণ বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। নব্বই দশকের মাঝামাঝি তিনি চাকুরি থেকে অবসর নিয়ে লেখালেখিতে পুরোপুরি মনোনিবেশ করেন। তিনি জীবদ্দশায় লিখেছেন দুই শতাধিক উপন্যাস। তিনি ছোটগল্পকার, গীতিকার, নাট্যকার ও চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবেও ছিলেন জনপ্রিয়তার শীর্ষে।