ঢাকা ০৯:১২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তোর বেঈমানির জন্য আত্মহত্যা করলাম

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ০২:২২:৫২ অপরাহ্ন, সোমাবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২১
  • / 112
কুমিল্লায় এমরান হোসেন মুন্না (২৯) নামে এক যুবলীগ নেতা আত্মহত্যার ঘটনায় দায়ের করা প্ররোচনার মামলায় তার স্ত্রীকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।

রোববার বিকেলে কুমিল্লার চিফ জুডিশিয়াল মাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন ওই যুবলীগ নেতার স্ত্রী সৈয়দা সাজিয়া শারমিন উষা (২৮)। আদালতের বিচারক সোহেল রানা তার জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কুমিল্লা আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. সালাউদ্দিন বলেন, আদালত জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিলে সৈয়দা সাজিয়া শারমিন উষাকে রোববার সন্ধ্যায় কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রেরণ করা হয়।

চলতি বছরের ২২ সেপ্টেম্বর আত্মহত্যার আগে ওই যুবলীগ নেতা হোয়াটসঅ্যাপে তার স্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে একটি মেসেজ লিখেন। ওই সময় সেই লেখাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে মুন্না একটি অংশে তার স্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে লিখেন, ‘আর পাঁচটা মানুষের মতো আমার জীবন না, আমি আজ চলে যাইতেছি। মনে রাখিস তোর বেঈমানি এবং পরকীয়ার জন্য আত্মহত্যা করলাম আমি…’।

এমরান হোসেন মুন্না কুমিল্লা নগরীর বারপাড়া এলাকার মতিউর রহমানের ছেলে। তিনি কুমিল্লা মহানগর যুবলীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন। ২২ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় বারপাড়া এলাকার বাসায় আত্মহত্যা করেন তিনি। এ ঘটনায় পরদিন রাতে মুন্নার স্ত্রী উষার বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে কোতয়ালি মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন নিহতের বাবা মতিউর রহমান।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৮ বছরের প্রেমের সম্পর্কের পর পরিবারের অমতেই বিয়ে করেন মুন্না ও ঊষা। কিন্তু এক বছর না পার হতেই তাদের দাম্পত্য জীবনে নেমে আসে অশান্তি। ঊষা ঢাকায় পড়াশোনা করেন। সেখানে আরেকটি সম্পর্কে জড়ান তিনি। নানাভাবে চেষ্টা করেও স্ত্রীকে পরকীয়া সম্পর্ক থেকে ফেরাতে না পেরে অভিমানে আত্মহত্যা করে মুন্না।

মামলা সূত্রে জানা যায়, বারপাড়া এলাকার মতিউর রহমানের ছেলে এমরান হোসেন মুন্না। জেলার লাকসাম উপজেলার রাজাপুর এলাকার খিলা বাজার গ্রামের সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলমের মেয়ে সৈয়দা সাজিয়া শারমিন ঊষা।

এক সময় কুমিল্লা কর্মাশিয়াল ইন্সটিটিউট (বর্তমানে সরকারি সিটি কলেজ ) এ শিক্ষার্থী ছিল তারা। কলেজ জীবনে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন দুজন। প্রেমের সম্পর্ক থেকে ২০১৮ সালের ২৫ জানুয়ারি তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের বছর খানেক পর থেকেই তাদের পারিবারিক জীবনে টানাপোড়ন শুরু হয়।

ঊষা ঢাকায় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সুবাদে বেশিরভাগ সময় ঢাকায় থাকতো। মুন্না প্রথমে কুমিল্লায় একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করলেও পরে চাকরি ছেড়ে কুমিল্লায় ঠিকাদারি ব্যবসা শুরু করে। দিনদিন তাদের মধ্যে সম্পর্কে ফাটল ধরে।

নিহত মুন্নার পরিবারের অভিযোগ, ঊষা ঢাকায় সোহেল নামের এক ছেলের সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। এজন্য মুন্নাকে বিভিন্নভাবে মানসিক নির্যাতন করতো সে। চাহিদা মতো টাকা দিতে না পারার অজুহাতে মরে যাওয়ার কথা বলে কটাক্ষ করতো। এতে মানসিকভাবে মুন্না ভেঙে পড়েন। গত ২২ সেপ্টেম্বর সে আত্মহত্যার প্রস্তুতি নিয়ে স্ত্রীকে ছবি পাঠায় এবং হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

তোর বেঈমানির জন্য আত্মহত্যা করলাম

আপডেট : ০২:২২:৫২ অপরাহ্ন, সোমাবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২১
কুমিল্লায় এমরান হোসেন মুন্না (২৯) নামে এক যুবলীগ নেতা আত্মহত্যার ঘটনায় দায়ের করা প্ররোচনার মামলায় তার স্ত্রীকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।

রোববার বিকেলে কুমিল্লার চিফ জুডিশিয়াল মাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন ওই যুবলীগ নেতার স্ত্রী সৈয়দা সাজিয়া শারমিন উষা (২৮)। আদালতের বিচারক সোহেল রানা তার জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কুমিল্লা আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. সালাউদ্দিন বলেন, আদালত জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিলে সৈয়দা সাজিয়া শারমিন উষাকে রোববার সন্ধ্যায় কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রেরণ করা হয়।

চলতি বছরের ২২ সেপ্টেম্বর আত্মহত্যার আগে ওই যুবলীগ নেতা হোয়াটসঅ্যাপে তার স্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে একটি মেসেজ লিখেন। ওই সময় সেই লেখাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে মুন্না একটি অংশে তার স্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে লিখেন, ‘আর পাঁচটা মানুষের মতো আমার জীবন না, আমি আজ চলে যাইতেছি। মনে রাখিস তোর বেঈমানি এবং পরকীয়ার জন্য আত্মহত্যা করলাম আমি…’।

এমরান হোসেন মুন্না কুমিল্লা নগরীর বারপাড়া এলাকার মতিউর রহমানের ছেলে। তিনি কুমিল্লা মহানগর যুবলীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন। ২২ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় বারপাড়া এলাকার বাসায় আত্মহত্যা করেন তিনি। এ ঘটনায় পরদিন রাতে মুন্নার স্ত্রী উষার বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে কোতয়ালি মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন নিহতের বাবা মতিউর রহমান।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৮ বছরের প্রেমের সম্পর্কের পর পরিবারের অমতেই বিয়ে করেন মুন্না ও ঊষা। কিন্তু এক বছর না পার হতেই তাদের দাম্পত্য জীবনে নেমে আসে অশান্তি। ঊষা ঢাকায় পড়াশোনা করেন। সেখানে আরেকটি সম্পর্কে জড়ান তিনি। নানাভাবে চেষ্টা করেও স্ত্রীকে পরকীয়া সম্পর্ক থেকে ফেরাতে না পেরে অভিমানে আত্মহত্যা করে মুন্না।

মামলা সূত্রে জানা যায়, বারপাড়া এলাকার মতিউর রহমানের ছেলে এমরান হোসেন মুন্না। জেলার লাকসাম উপজেলার রাজাপুর এলাকার খিলা বাজার গ্রামের সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলমের মেয়ে সৈয়দা সাজিয়া শারমিন ঊষা।

এক সময় কুমিল্লা কর্মাশিয়াল ইন্সটিটিউট (বর্তমানে সরকারি সিটি কলেজ ) এ শিক্ষার্থী ছিল তারা। কলেজ জীবনে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন দুজন। প্রেমের সম্পর্ক থেকে ২০১৮ সালের ২৫ জানুয়ারি তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের বছর খানেক পর থেকেই তাদের পারিবারিক জীবনে টানাপোড়ন শুরু হয়।

ঊষা ঢাকায় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সুবাদে বেশিরভাগ সময় ঢাকায় থাকতো। মুন্না প্রথমে কুমিল্লায় একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করলেও পরে চাকরি ছেড়ে কুমিল্লায় ঠিকাদারি ব্যবসা শুরু করে। দিনদিন তাদের মধ্যে সম্পর্কে ফাটল ধরে।

নিহত মুন্নার পরিবারের অভিযোগ, ঊষা ঢাকায় সোহেল নামের এক ছেলের সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। এজন্য মুন্নাকে বিভিন্নভাবে মানসিক নির্যাতন করতো সে। চাহিদা মতো টাকা দিতে না পারার অজুহাতে মরে যাওয়ার কথা বলে কটাক্ষ করতো। এতে মানসিকভাবে মুন্না ভেঙে পড়েন। গত ২২ সেপ্টেম্বর সে আত্মহত্যার প্রস্তুতি নিয়ে স্ত্রীকে ছবি পাঠায় এবং হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করে।