নারায়ণগঞ্জে ফতুল্লায় অবৈধ গ্যাস সংযোগ অপসারণ করতে অভিযান চালিয়েছে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ। গত বৃহস্পতিবার (২ জুন) দুপুরে ফতুল্লার ভুঁইগড় এলাকায় রূপায়ন টাউনে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কে এম ইসমামের নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় অভিযানে রূপায়ন টাউনের ৭৮৪টি অবৈধ আবাসিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ। এসময় রূপায়নের বাসিন্দারা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠলে র‌্যাব ও পুলিশের সহায়তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, রূপায়ন টাউনে মোট আবাসিক গ্যাস সংযোগ রয়েছে ৭৮৪টি। এর মধ্যে তিতাসের হিসাব অনুযায়ী বৈধ সংযোগ রয়েছে ২৫২টি আর অবৈধ সংযোগের সংখ্যা ৫৩২ টি।
তবে বৈধ আড়াই শতাধিক সংযোগের বিপরীতে ৫৩ লাখ টাকার বিল বকেয়া রয়েছে বলে জানা গেছে। রূপায়ন টাউনের ইউটিলিটি সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ঢাকা প্রপার্টিজের সার্ভস ম্যানেজার শাহীন সারোয়ার বলেন, আমাদের শুধু সার্ভিস দেওয়ার দ্বায়িত্ব।

বৈধ-অবৈধ কিংবা কাগজ পত্রের বিষয়টি রূপায়ন কর্তৃপক্ষ দেখেন। এখানে কি পরিমাণ বৈধ বা অবৈধ লাইন রয়েছে তা জানা নেই।

রূপায়ন টাউনের প্রকৌশলী ও ইনচার্জ (২য় ধাপ) মোয়াল্লেম হোসেন যুগের কন্ঠকে বলেন, বছর দুই আগে তিতাসের সাথে আমাদের একটি চুক্তিপত্র হয়েছে।

যেই পরিমাণ গ্যাস সংযোগ পরবর্তী পর্যায়ে বাড়ানো হয়েছে তা তিতাস কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করেই করা হয়েছে। আর তাছাড়া হাইকোর্ট থেকে এই বিষয়ে একটি রিট করা হয়েছে, হাইকোর্টের স্টে অর্ডার রয়েছে বলে আমি জানি।
রূপায়নের লিগ্যাল এইডের কর্মকর্তারা সংশ্লিষ্ট নথিপত্র নিয়ে আসছেন। আমরা তাদের কাছে সময় চেয়েছি, কিন্তু তারা লাইন কেঁটে দিয়েছে।

তিতাস গ্যাসের নারায়ণগঞ্জের উপ-মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী সাইদুল হাসান যুগের কন্ঠকে বলেন, অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে তিতাস নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি। রূপায়ন টাউনে ৭৮৪টি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। আমাদের সাথে রূপায়নের চুক্তি হয়েছে ২৫২টি আবাসিক সংযোগের। তারা পরবর্তীতে তা বাড়িয়ে ৭৮৪ টি সংযোগ দিয়েছেন। তাছাড়া তাদের বৈধ সংযোগের বিপরীতে অর্ধকোটি টাকার বেশি বকেয়া রয়েছে। তাই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।

এখানকার কয়েকজন বাসিন্দা বিল পরিশোধের কাগজ দেখিয়েছেন, তাদের সংযোগ কেন বিচ্ছিন্ন করা হল জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা বিল দিয়েছে রূপায়নকে, আমাদের কাছে সেই বিল জমা হয়নি। এ বিষয়ে তারা তাদের কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলুক।
অভিযান শেষে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কে এম ইসমাম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে অভিযান চলমান রয়েছে।
অবৈধ গ্যাস সংযোগের ফলে রাষ্ট্র বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে। আজ এখানে অবৈধ সংযোগের বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় তিতাস গ্যাস আইন অনুযায়ী প্রায় সাত শতাধিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে অভিযান চলমান থাকবে।