ঢাকা ০৭:৪০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফরিদপুরে আশ্রয়ণ প্রকল্পের নামে শতবর্ষী পুকুর ভরাট

ফরিদপুর প্রতিনিধি
  • আপডেট : ০৮:১৫:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ জুন ২০২৩
  • / 105
ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত আশ্রয়ণ প্রকল্পের নামে দুইটি প্রাচীন বটগাছ কেটে ফেলা হয়েছে এবং প্রায় একশো বছরের শতবর্ষী একটি পুকুর ভরাট করা হয়েছে। তবে উচ্চ আদালতে এব্যাপারে রিট পিটিশন দাখিল করার পর পরবর্তী আদেশ না দেয়া পর্যন্ত সেখানে কোন ধরনের কার্যক্রম পরিচালনার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। হাইকোর্টের বিচারপতি জেবিএম হাসান এবং রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এ সংক্রান্ত ওই রিট পিটিশনের শুনানি শেষে এ আদেশ দেয়া হয়।

জানা গেছে, সদরপুর উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আকোটের চর ইউনিয়নের কৃষ্ণমঙ্গলের ডাঙ্গীর বটতলার দুটি বটগাছ কেটে শতবর্ষী পুকুরটি ভরাট করা হয়। প্রাচীন দুইটি বড়বড় শতবর্ষী বট গাছ কেটে প্রথমে ট্রাকে ভরে বালি ফেলে এবং পরে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালি তুলে পুকুরটি ভরাট করা হয়েছে। পরে এব্যাপারে ‘ল অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশনের’ পক্ষে ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব এবং ব্যারিস্টার মো. কাউছার হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দাখিল করেন। করেন।

সোমবার (২৯ মে) হাইকোর্টের যৌথ বেঞ্চে রিটের শুনানি শেষে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে আশ্রয়ণ প্রকল্প নির্মাণের যাবতীয় কার্যক্রম বন্ধ রাখার আদেশে দেয়া হয়। এরআগে ১৬ মে ওই পুকুর ভরাটের কাজ বন্ধ করার জন্য ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক এবং সদরপুরের উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ইমেইলযোগে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছিলো “ল এন্ড লাইফ ফাউন্ডেশন”।

এব্যাপারে সদরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান মাহমুদ রাসেল এর আগে সাংবাদিকদের জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে ভূমিহীন-গৃহহীন-ছিন্নমূল মানুষকে অন্তর্ভূক্তিমূলক উন্নয়নের আওতায় এনেছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে এখানে তাদের জন্য সরকারি খাস জমিতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের নির্মাণের কাজ চলছে।

তিনি আরো বলেন, পুকুরটিতে পূর্বে পানি থাকলেও বর্তমানে পুকুরটি অনেকাংশেই ভরাট হয়ে গেছে। এছাড়া খাস জমিও অপ্রতুল। ফলে ওই স্থানটিতেই আশ্রয়ণ প্রকল্প তৈরির উপযুক্ত জায়গা হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন-২০০০ অনুযায়ী, কোনো পুকুর, জলাশয়, নদী, খাল ইত্যাদি ভরাট করা বেআইনি। আইনের ৫ ধারা অনুযায়ী, প্রাকৃতিক জলাধার হিসেবে চিহ্নিত জায়গার শ্রেণি পরিবর্তন বা অন্য কোনোভাবে ব্যবহার, ভাড়া, ইজারা বা হস্তান্তর বেআইনি। কোনো ব্যক্তি এ বিধান লঙ্ঘন করলে আইনের ৮ ও ১২ ধারা অনুযায়ী পাঁচ বছরের কারাদন্ড বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা অর্থ অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন। একইসঙ্গে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন (২০১০ সালে সংশোধিত) অনুযায়ী, যেকোনো ধরনের জলাশয় ভরাট করা নিষিদ্ধ।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ফরিদপুরে আশ্রয়ণ প্রকল্পের নামে শতবর্ষী পুকুর ভরাট

আপডেট : ০৮:১৫:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ জুন ২০২৩
ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত আশ্রয়ণ প্রকল্পের নামে দুইটি প্রাচীন বটগাছ কেটে ফেলা হয়েছে এবং প্রায় একশো বছরের শতবর্ষী একটি পুকুর ভরাট করা হয়েছে। তবে উচ্চ আদালতে এব্যাপারে রিট পিটিশন দাখিল করার পর পরবর্তী আদেশ না দেয়া পর্যন্ত সেখানে কোন ধরনের কার্যক্রম পরিচালনার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। হাইকোর্টের বিচারপতি জেবিএম হাসান এবং রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এ সংক্রান্ত ওই রিট পিটিশনের শুনানি শেষে এ আদেশ দেয়া হয়।

জানা গেছে, সদরপুর উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আকোটের চর ইউনিয়নের কৃষ্ণমঙ্গলের ডাঙ্গীর বটতলার দুটি বটগাছ কেটে শতবর্ষী পুকুরটি ভরাট করা হয়। প্রাচীন দুইটি বড়বড় শতবর্ষী বট গাছ কেটে প্রথমে ট্রাকে ভরে বালি ফেলে এবং পরে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালি তুলে পুকুরটি ভরাট করা হয়েছে। পরে এব্যাপারে ‘ল অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশনের’ পক্ষে ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব এবং ব্যারিস্টার মো. কাউছার হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দাখিল করেন। করেন।

সোমবার (২৯ মে) হাইকোর্টের যৌথ বেঞ্চে রিটের শুনানি শেষে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে আশ্রয়ণ প্রকল্প নির্মাণের যাবতীয় কার্যক্রম বন্ধ রাখার আদেশে দেয়া হয়। এরআগে ১৬ মে ওই পুকুর ভরাটের কাজ বন্ধ করার জন্য ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক এবং সদরপুরের উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ইমেইলযোগে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছিলো “ল এন্ড লাইফ ফাউন্ডেশন”।

এব্যাপারে সদরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান মাহমুদ রাসেল এর আগে সাংবাদিকদের জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে ভূমিহীন-গৃহহীন-ছিন্নমূল মানুষকে অন্তর্ভূক্তিমূলক উন্নয়নের আওতায় এনেছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে এখানে তাদের জন্য সরকারি খাস জমিতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের নির্মাণের কাজ চলছে।

তিনি আরো বলেন, পুকুরটিতে পূর্বে পানি থাকলেও বর্তমানে পুকুরটি অনেকাংশেই ভরাট হয়ে গেছে। এছাড়া খাস জমিও অপ্রতুল। ফলে ওই স্থানটিতেই আশ্রয়ণ প্রকল্প তৈরির উপযুক্ত জায়গা হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন-২০০০ অনুযায়ী, কোনো পুকুর, জলাশয়, নদী, খাল ইত্যাদি ভরাট করা বেআইনি। আইনের ৫ ধারা অনুযায়ী, প্রাকৃতিক জলাধার হিসেবে চিহ্নিত জায়গার শ্রেণি পরিবর্তন বা অন্য কোনোভাবে ব্যবহার, ভাড়া, ইজারা বা হস্তান্তর বেআইনি। কোনো ব্যক্তি এ বিধান লঙ্ঘন করলে আইনের ৮ ও ১২ ধারা অনুযায়ী পাঁচ বছরের কারাদন্ড বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা অর্থ অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন। একইসঙ্গে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন (২০১০ সালে সংশোধিত) অনুযায়ী, যেকোনো ধরনের জলাশয় ভরাট করা নিষিদ্ধ।