ঢাকা ১১:৫১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দারুল উলুম রশিদিয়া মাদ্রাসা এতিমখানা ও লিল্লাহ বোডিং

আলোকিত মানুষ গড়ার এক অনন্য নাম রুহুল আমিন পাটওয়ারী

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : ০৭:০৩:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ জুলাই ২০২৩
  • / 265

আলোকিত মানুষ বলতে তাদেরই আমরা বুঝি, যাদের জ্ঞানের আলোয় আলোকিত আমাদের সমাজ। যে মানুষদের মহৎ চিন্তার বাস্তবায়নে সমাজের উন্নয়ন হচ্ছে, মানুষের চিন্তাধারায় পরিবর্তন আসছে, সর্বোপরি উন্নয়ন হচ্ছে। আমরা জানি আলোকিত মানুষ তৈরির জন্য সুশিক্ষার খুব বেশি প্রয়োজন। কিন্তু সুশিক্ষার আজ বড্ড অভাব।

আজকের এই ঘুণেধরা, ক্ষয়ে যাওয়া সমাজটাকে পরিবর্তন করে মানুষের জন্য বসবাসযোগ্য করে গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজন আলোকিত মানুষ। এমনই একজন আলোকিত মানুষ চাঁদপুর জেলাধিন ফরিদগঞ্জ উপজেলার চররাঘব রায় গ্রামের হাজী মো. রুহুল আমিন পাটওয়ারী।

তিনি তার কর্ম জীবনে বিভিন্ন অঙ্গনে শক্তিমান নেতৃত্ব দিয়ে জাতিকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়েছেন বটে। তার নিরঅহংকার জ্ঞান, প্রজ্ঞা, সততা এবং কর্ম সত্যিকার অরথে রুপ দিতে সমাজের পিছিয়ে পরা এতিম ও ছিন্নমূল শিশু কিশোরদের সুন্দর আগামীর ভবিষ্যৎ বির্নিমানে নিজ অর্থায়নে ফরিদগঞ্জ উপজেলার চররাঘব রায় গ্রামের পাটওয়ারী বাড়িতে ২০০২ সালে ২৯ কাঠা জমিতে গড়ে তুলেছেন ‘দারুল উলুম রশিদিয়া মাদ্রাসা এতিমখানা ও লিল্লাহ বোডিং’।

পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ হচ্ছে সময়, এবং জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে-মানুষের জন্য কিছু করা। তারই উজ্জল দৃষ্টান্ত হাজী মো. রুহুল আমিন পাটওয়ারী। এতিম ছিন্নমূল শিশুদের আলোকিত মানুষ গড়ার প্রত্যয়ে তিল তিল করে গড়ে তোলা ‘দারুল উলুম রশিদিয়া মাদ্রাসা এতিমখানা ও লিল্লাহ বোডিং’ এর প্রায় সারে ২৯ কাঠা সম্পত্তি এবং সেই সম্পত্তির উপরে ভবন নির্মান করে দেন তিনি। তা ২০১৭ সালে ওয়াকফ্ করে দেন প্রতিষ্ঠানের নামে। যার বর্তমান বাজার মূল্য রয়েছে প্রায় ৫ কোটি টাকার উপরে।

ভবিষ্যত প্রজন্ম ও এতিম ছিন্নমূল শিশুদের অমানিশার ঘোর অন্ধকারের কঢ়াল গ্রাস থেকে রক্ষায় প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩ তলা বিশিষ্টি ভবন দ্বীতল মসজিদ নির্মাণ করেছেন, নিরহংকার এই ব্যবসায়ী হাজী মো. রুহুল আমিন পাটওয়ারী। যা আজকে চাঁদপুর জেলায় আলোচিত এবং আলোকিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে সুপরিচিত রশিদিয়া দারুল উলুম মাদ্রাসা এতিমখানা ও লিল্লাহ বোডিং।

২০০২ সালে প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকে মাদ্রাসা থেকে প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী দেশের বিভিন্ন স্থানে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করছেন বলে জানা যায়। প্রতিষ্ঠানটি ২০১০ সালে ২১ জন ছাত্র নিয়ে হিফজ বিভাগ চালু করে। বর্তমানে ২ শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে এ প্রতিষ্ঠানে। এর মধ্যে ৫০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে এতিম ছিন্নমূল। অধ্যয়নরত অর্ধশত এতিম শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা এবং থাকা- খাওয়ার ব্যবস্থা করে যাচ্ছেন, মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা হাজী মো. রুহুর আমিন পাটওয়ারী।

চারটি বিভাগের মধ্যে নুরানী বিভাগে ৭০ জন, নাজেরা বিভাগে ১৯, হিফজ বিভাগে ৩২, এবং কিতাব বিভাগে ২৯ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত অবস্থায় রয়েছে। এসব শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার দায়িত্বে রয়েছেন মুহতামিম মুফতি এনামুল হাসানসহ ৯ জন শিক্ষক। আবাসিক হলে ১২০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। অনবাসিকে ৩০ জন। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার মানবৃদ্ধির লক্ষে ডে-কেয়ার সিস্টেম চালু রেখেছেন। অধ্যবধি মাদ্রাসাটি থেকে প্রায় ১শ’ এতিম ও সাধারণ শিক্ষার্থী হাফেজ হয়ে দেশের বিভিন্ন মসজিদ-মাদ্রাসায় দায়িত্ব পালন করছেন বলে জানা গেছে।

তার চলন-বলন, মতাদর্শ-কার্যকলাপ, চিন্তাভাবনা, ধ্যানধারণায় আকাশছোঁয়া উচ্চতার ব্যক্তিত্ব। তিনি পাশ দিয়ে হেঁটে গেলেও বোঝা যায় না কেউ একজন গেছেন। অথচ সেটা দাম্ভিকতা নয়, বরং ঈর্ষণীয় এক ব্যক্তিত্ব হাজী মো. রুহুর আমিন পাটওয়ারী।

হাজী মো. রুহুর আমিন পাটওয়ারী এ প্রতিবেদককে বলেন, আমার জীবনের তেমন কোন ইচ্ছে নেই। শুধু ইচ্ছে মানুষের জন্য কিছু করা। এটাই আমার কাছে আনন্দ। মরে গেলে কিছুই যাবে না আমার সঙ্গে। শুধু ভালো যতটুকু কাজ করে যাবো সেইটুকুর জন্যই হয়তো আল্লাহ পাক আমাকে জান্নাতবাসী করতে পারেন। আমি যত বড়ই ব্যবসায়ী হই না কেন।

একটা সময় গিয়ে আমার কিছুই থাকবে না। এজন্য আমার নিজ দায়িত্ব থেকেই মানুষের জন্য কিছু করার চেষ্টা করছি। ‘দিন দিন মাদ্রাসার ব্যয় বাড়ছে, অসহায় ছিন্নমূল এতিম শিশুদের সুস্থ্য ধারায় মানসিক বিকাশে এবং আলোকিত মানুষ গড়ার প্রত্যয়ে আমি যে উদ্যোগ বিগত বছর যাবত গ্রহণ করেছি, তার ধারাবাহিকতা রক্ষায় সরকার ও সমাজের বিত্তবান মানুষদের এগিয়ে আসার দৃঢ় আহ্বান জানাচ্ছি।’

তিনি আরো বলেন, এই প্রতিষ্ঠানটি আজ এই জায়গায় নিয়ে আসতে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। তিল তিল করে দাড় করিয়েছি। আমি মরে গেলেও যেন প্রতিষ্ঠানটিতে যারা কর্মরত আছেন তারা; এবং শিক্ষার্থীদের যেন কোন সমস্যা না হয় এটাই সমাজের কাছে আমার চাওয়া। কথায় আছে যেন কোন একা করা অনেক কঠিক। আর সবাই যখন সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিবেন তখন আর পিছু তাকিয়ে থাকতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

দারুল উলুম রশিদিয়া মাদ্রাসা এতিমখানা ও লিল্লাহ বোডিং

আলোকিত মানুষ গড়ার এক অনন্য নাম রুহুল আমিন পাটওয়ারী

আপডেট : ০৭:০৩:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ জুলাই ২০২৩

আলোকিত মানুষ বলতে তাদেরই আমরা বুঝি, যাদের জ্ঞানের আলোয় আলোকিত আমাদের সমাজ। যে মানুষদের মহৎ চিন্তার বাস্তবায়নে সমাজের উন্নয়ন হচ্ছে, মানুষের চিন্তাধারায় পরিবর্তন আসছে, সর্বোপরি উন্নয়ন হচ্ছে। আমরা জানি আলোকিত মানুষ তৈরির জন্য সুশিক্ষার খুব বেশি প্রয়োজন। কিন্তু সুশিক্ষার আজ বড্ড অভাব।

আজকের এই ঘুণেধরা, ক্ষয়ে যাওয়া সমাজটাকে পরিবর্তন করে মানুষের জন্য বসবাসযোগ্য করে গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজন আলোকিত মানুষ। এমনই একজন আলোকিত মানুষ চাঁদপুর জেলাধিন ফরিদগঞ্জ উপজেলার চররাঘব রায় গ্রামের হাজী মো. রুহুল আমিন পাটওয়ারী।

তিনি তার কর্ম জীবনে বিভিন্ন অঙ্গনে শক্তিমান নেতৃত্ব দিয়ে জাতিকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়েছেন বটে। তার নিরঅহংকার জ্ঞান, প্রজ্ঞা, সততা এবং কর্ম সত্যিকার অরথে রুপ দিতে সমাজের পিছিয়ে পরা এতিম ও ছিন্নমূল শিশু কিশোরদের সুন্দর আগামীর ভবিষ্যৎ বির্নিমানে নিজ অর্থায়নে ফরিদগঞ্জ উপজেলার চররাঘব রায় গ্রামের পাটওয়ারী বাড়িতে ২০০২ সালে ২৯ কাঠা জমিতে গড়ে তুলেছেন ‘দারুল উলুম রশিদিয়া মাদ্রাসা এতিমখানা ও লিল্লাহ বোডিং’।

পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ হচ্ছে সময়, এবং জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে-মানুষের জন্য কিছু করা। তারই উজ্জল দৃষ্টান্ত হাজী মো. রুহুল আমিন পাটওয়ারী। এতিম ছিন্নমূল শিশুদের আলোকিত মানুষ গড়ার প্রত্যয়ে তিল তিল করে গড়ে তোলা ‘দারুল উলুম রশিদিয়া মাদ্রাসা এতিমখানা ও লিল্লাহ বোডিং’ এর প্রায় সারে ২৯ কাঠা সম্পত্তি এবং সেই সম্পত্তির উপরে ভবন নির্মান করে দেন তিনি। তা ২০১৭ সালে ওয়াকফ্ করে দেন প্রতিষ্ঠানের নামে। যার বর্তমান বাজার মূল্য রয়েছে প্রায় ৫ কোটি টাকার উপরে।

ভবিষ্যত প্রজন্ম ও এতিম ছিন্নমূল শিশুদের অমানিশার ঘোর অন্ধকারের কঢ়াল গ্রাস থেকে রক্ষায় প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩ তলা বিশিষ্টি ভবন দ্বীতল মসজিদ নির্মাণ করেছেন, নিরহংকার এই ব্যবসায়ী হাজী মো. রুহুল আমিন পাটওয়ারী। যা আজকে চাঁদপুর জেলায় আলোচিত এবং আলোকিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে সুপরিচিত রশিদিয়া দারুল উলুম মাদ্রাসা এতিমখানা ও লিল্লাহ বোডিং।

২০০২ সালে প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকে মাদ্রাসা থেকে প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী দেশের বিভিন্ন স্থানে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করছেন বলে জানা যায়। প্রতিষ্ঠানটি ২০১০ সালে ২১ জন ছাত্র নিয়ে হিফজ বিভাগ চালু করে। বর্তমানে ২ শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে এ প্রতিষ্ঠানে। এর মধ্যে ৫০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে এতিম ছিন্নমূল। অধ্যয়নরত অর্ধশত এতিম শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা এবং থাকা- খাওয়ার ব্যবস্থা করে যাচ্ছেন, মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা হাজী মো. রুহুর আমিন পাটওয়ারী।

চারটি বিভাগের মধ্যে নুরানী বিভাগে ৭০ জন, নাজেরা বিভাগে ১৯, হিফজ বিভাগে ৩২, এবং কিতাব বিভাগে ২৯ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত অবস্থায় রয়েছে। এসব শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার দায়িত্বে রয়েছেন মুহতামিম মুফতি এনামুল হাসানসহ ৯ জন শিক্ষক। আবাসিক হলে ১২০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। অনবাসিকে ৩০ জন। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার মানবৃদ্ধির লক্ষে ডে-কেয়ার সিস্টেম চালু রেখেছেন। অধ্যবধি মাদ্রাসাটি থেকে প্রায় ১শ’ এতিম ও সাধারণ শিক্ষার্থী হাফেজ হয়ে দেশের বিভিন্ন মসজিদ-মাদ্রাসায় দায়িত্ব পালন করছেন বলে জানা গেছে।

তার চলন-বলন, মতাদর্শ-কার্যকলাপ, চিন্তাভাবনা, ধ্যানধারণায় আকাশছোঁয়া উচ্চতার ব্যক্তিত্ব। তিনি পাশ দিয়ে হেঁটে গেলেও বোঝা যায় না কেউ একজন গেছেন। অথচ সেটা দাম্ভিকতা নয়, বরং ঈর্ষণীয় এক ব্যক্তিত্ব হাজী মো. রুহুর আমিন পাটওয়ারী।

হাজী মো. রুহুর আমিন পাটওয়ারী এ প্রতিবেদককে বলেন, আমার জীবনের তেমন কোন ইচ্ছে নেই। শুধু ইচ্ছে মানুষের জন্য কিছু করা। এটাই আমার কাছে আনন্দ। মরে গেলে কিছুই যাবে না আমার সঙ্গে। শুধু ভালো যতটুকু কাজ করে যাবো সেইটুকুর জন্যই হয়তো আল্লাহ পাক আমাকে জান্নাতবাসী করতে পারেন। আমি যত বড়ই ব্যবসায়ী হই না কেন।

একটা সময় গিয়ে আমার কিছুই থাকবে না। এজন্য আমার নিজ দায়িত্ব থেকেই মানুষের জন্য কিছু করার চেষ্টা করছি। ‘দিন দিন মাদ্রাসার ব্যয় বাড়ছে, অসহায় ছিন্নমূল এতিম শিশুদের সুস্থ্য ধারায় মানসিক বিকাশে এবং আলোকিত মানুষ গড়ার প্রত্যয়ে আমি যে উদ্যোগ বিগত বছর যাবত গ্রহণ করেছি, তার ধারাবাহিকতা রক্ষায় সরকার ও সমাজের বিত্তবান মানুষদের এগিয়ে আসার দৃঢ় আহ্বান জানাচ্ছি।’

তিনি আরো বলেন, এই প্রতিষ্ঠানটি আজ এই জায়গায় নিয়ে আসতে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। তিল তিল করে দাড় করিয়েছি। আমি মরে গেলেও যেন প্রতিষ্ঠানটিতে যারা কর্মরত আছেন তারা; এবং শিক্ষার্থীদের যেন কোন সমস্যা না হয় এটাই সমাজের কাছে আমার চাওয়া। কথায় আছে যেন কোন একা করা অনেক কঠিক। আর সবাই যখন সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিবেন তখন আর পিছু তাকিয়ে থাকতে হবে।