ঢাকা ০৩:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ক্লিনিকের অংশীদারিত্ব নিয়ে দ্বন্দ্ব, ইনজেকশন পুশ করে হত্যা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ১১:২৭:১৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • / 106

অভিযুক্ত নার্স সাদ্দাম হোসেন

বগুড়ার গাবতলীতে ক্লিনিকের অংশীদারিত্ব নিয়ে দ্বন্দ্বে শজিমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সেলিম হোসেনকে (২৭) চেতনানাশক ইনজেকশন পুশ করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত সেলিম হোসেন গাবতলী উপজেলার আটবাড়িয়া গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে। নিহতের বড় ভাই আব্দুস সামাদ বাদী হয়ে বগুড়া সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতেই ইনজেকশন পুশ করা সাদ্দাম হোসেনকে (২৬) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত সাদ্দাম হোসেন উপজেলার রামেশ্বরপুর উত্তরপাড়ার জিন্নাহ মিয়ার ছেলে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বগুড়া সদরের পীরগাছা বাজারে সালমা ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড ক্লিনিকের অংশীদারিত্ব নিয়ে অংশীদার তথা নার্স সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে শাহিন আলম ও তার ভাই সেলিম হোসেনের (ম্যানেজার) বিরোধ সৃষ্টি হয়। প্রায় দুই মাস আগে শাহিনকে চেতনানাশক ইনজেকশন পুশ করে হত্যার অভিযোগ ওঠে। কোনও ‘প্রমাণ’ না থাকায় ঘটনাটি চাপা পড়ে যায়।

সেলিমের ভাই আবদুস সামাদ বলেন, তারা সাতজন প্রায় নয় মাস আগে পীরগাছা বাজারে সালমা ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করেন। সাতজনের মধ্যে তাদের পরিবারের চারজনের অর্ধেক এবং অপর অর্ধেক শেয়ার সাদ্দাম হোসেনের ছিল। তাদের মধ্যে সাদ্দাম হোসেন নার্সের (সেবক) এবং সেলিম ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করতেন।

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টায় ক্লিনিকে থাকা অবস্থায় সেলিম অসুস্থ বোধ করেন। তখন সাদ্দাম হোসেন বলেন তার (সেলিম) উচ্চ রক্তচাপ আছে, হাসপাতালে নেয়া দরকার। খবর পেয়ে সামাদ ১০টা ৫০ মিনিটে ভাইকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের চতুর্থ তলায় মেডিসিন বিভাগে ভর্তি করে। সাদ্দাম হোসেন রাত ১২টা ৫ মিনিটে সেলিমকে দেখতে যান। এ সময় তার শরীরে স্যালাইন চলছিল।

এক পর্যায়ে সাদ্দাম হোসেন তার পকেট থেকে ইনজেকশন বের করে সেলিমের হাতে লাগানো ক্যানুলা দিয়ে পুশ করে। কী ইনজেকশন দেয়া হলো তখন সাদ্দাম বলে গ্যাসের ইনজেকশন। সে অ্যাম্পুলের লেবেল ছিঁড়ে ফেলে এবং হাসপাতাল থেকে পালানোর চেষ্টা করে। ইনজেকশন পুশের ১০ মিনিটের মধ্যে সেলিমের মৃত্যু হয়। এ সময় কর্তব্যরত নার্স সাদ্দামকে চেতনানাশক ইনজেকশনের অ্যাম্পুলসহ পুলিশে দেয়।

সেলিমের ভাই আবদুস সামাদ আরও বলেন, গত ৭ জুলাই তার আরেক ছোট ভাই শাহিন আলমকে পীরগাছা বাজারের ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্যালাইনের মাধ্যমে চেতনানাশক ইনজেকশন পুশ করার পর রাতে তার মৃত্যু হয়। পরে বলা হয়, হৃদরোগে মৃত্যু হয়েছে। তখন শাহিনের মৃত্যুর ঘটনায় কাউকে সন্দেহ করা হয়নি। সাদ্দাম হোসেন একই কায়দায় হত্যা করেছে সেলিমকে।

বগুড়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সেলিম রেজা এ প্রতিবেদককে বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাদ্দাম হোসেন হত্যার উদ্দেশে ইনজেকশন পুশ করার কথা স্বীকার করেছে। ক্লিনিকের আয় থেকে তাকে বঞ্চিত করা হচ্ছিলো। সাদ্দামকে আদালতের মাধ্যমে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ক্লিনিকের অংশীদারিত্ব নিয়ে দ্বন্দ্ব, ইনজেকশন পুশ করে হত্যা

আপডেট : ১১:২৭:১৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২১
বগুড়ার গাবতলীতে ক্লিনিকের অংশীদারিত্ব নিয়ে দ্বন্দ্বে শজিমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সেলিম হোসেনকে (২৭) চেতনানাশক ইনজেকশন পুশ করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত সেলিম হোসেন গাবতলী উপজেলার আটবাড়িয়া গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে। নিহতের বড় ভাই আব্দুস সামাদ বাদী হয়ে বগুড়া সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতেই ইনজেকশন পুশ করা সাদ্দাম হোসেনকে (২৬) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত সাদ্দাম হোসেন উপজেলার রামেশ্বরপুর উত্তরপাড়ার জিন্নাহ মিয়ার ছেলে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বগুড়া সদরের পীরগাছা বাজারে সালমা ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড ক্লিনিকের অংশীদারিত্ব নিয়ে অংশীদার তথা নার্স সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে শাহিন আলম ও তার ভাই সেলিম হোসেনের (ম্যানেজার) বিরোধ সৃষ্টি হয়। প্রায় দুই মাস আগে শাহিনকে চেতনানাশক ইনজেকশন পুশ করে হত্যার অভিযোগ ওঠে। কোনও ‘প্রমাণ’ না থাকায় ঘটনাটি চাপা পড়ে যায়।

সেলিমের ভাই আবদুস সামাদ বলেন, তারা সাতজন প্রায় নয় মাস আগে পীরগাছা বাজারে সালমা ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করেন। সাতজনের মধ্যে তাদের পরিবারের চারজনের অর্ধেক এবং অপর অর্ধেক শেয়ার সাদ্দাম হোসেনের ছিল। তাদের মধ্যে সাদ্দাম হোসেন নার্সের (সেবক) এবং সেলিম ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করতেন।

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টায় ক্লিনিকে থাকা অবস্থায় সেলিম অসুস্থ বোধ করেন। তখন সাদ্দাম হোসেন বলেন তার (সেলিম) উচ্চ রক্তচাপ আছে, হাসপাতালে নেয়া দরকার। খবর পেয়ে সামাদ ১০টা ৫০ মিনিটে ভাইকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের চতুর্থ তলায় মেডিসিন বিভাগে ভর্তি করে। সাদ্দাম হোসেন রাত ১২টা ৫ মিনিটে সেলিমকে দেখতে যান। এ সময় তার শরীরে স্যালাইন চলছিল।

এক পর্যায়ে সাদ্দাম হোসেন তার পকেট থেকে ইনজেকশন বের করে সেলিমের হাতে লাগানো ক্যানুলা দিয়ে পুশ করে। কী ইনজেকশন দেয়া হলো তখন সাদ্দাম বলে গ্যাসের ইনজেকশন। সে অ্যাম্পুলের লেবেল ছিঁড়ে ফেলে এবং হাসপাতাল থেকে পালানোর চেষ্টা করে। ইনজেকশন পুশের ১০ মিনিটের মধ্যে সেলিমের মৃত্যু হয়। এ সময় কর্তব্যরত নার্স সাদ্দামকে চেতনানাশক ইনজেকশনের অ্যাম্পুলসহ পুলিশে দেয়।

সেলিমের ভাই আবদুস সামাদ আরও বলেন, গত ৭ জুলাই তার আরেক ছোট ভাই শাহিন আলমকে পীরগাছা বাজারের ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্যালাইনের মাধ্যমে চেতনানাশক ইনজেকশন পুশ করার পর রাতে তার মৃত্যু হয়। পরে বলা হয়, হৃদরোগে মৃত্যু হয়েছে। তখন শাহিনের মৃত্যুর ঘটনায় কাউকে সন্দেহ করা হয়নি। সাদ্দাম হোসেন একই কায়দায় হত্যা করেছে সেলিমকে।

বগুড়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সেলিম রেজা এ প্রতিবেদককে বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাদ্দাম হোসেন হত্যার উদ্দেশে ইনজেকশন পুশ করার কথা স্বীকার করেছে। ক্লিনিকের আয় থেকে তাকে বঞ্চিত করা হচ্ছিলো। সাদ্দামকে আদালতের মাধ্যমে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হবে।