ঢাকা ০৭:৪৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ২৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঢাবি ছাত্রী তুষ্টির মায়ের আর্তনাদ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ০১:৩০:১৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ জুন ২০২১
  • / 195

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ইসরাত জাহান তুষ্টি। ছবি সংগৃহীত

::নিজস্ব প্রতিবেদক::

রাজধানীর আজিমপুর এলাকায় পলাশী সরকারি স্টাফ কোয়ার্টারের একটি ভবনের বাথরুম থেকে ইসরাত জাহান তুষ্টি (২১) নামের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

রোববার সকাল সোয়া ৭টার দিকে তাকে উদ্ধার করে পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন চিকিৎসকরা।

মারা যাওয়া ওই ছাত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে ২য় বর্ষে অধ্যায়নরত ছিলেন। তিনি বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলে থাকতেন। তাদের বাড়ি নেত্রকোনা জেলায়।

তাড়াতাড়ি ময়নাতদন্তের কাজ শেষ হওয়ায় এখন তুষ্টির মরদেহবাহী গাড়ি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ছেড়ে নেত্রকোণার গ্রামের বাড়ির দিকে রওনা হয়েছে। বাদ আসর প্রথম নামাজে জানাজা ক্যাম্পাসের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে হওয়ার কথা থাকলেও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে তা বাতিল করা হয়।

এদিকে বাংলাদেশ জার্নালের নেত্রকোনা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, তুষ্টির মরদেহ উদ্ধারের পর থেকেই তার গ্রামের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।

রোববার দুপুরের দিকে নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার সুখারী ইউনিয়নের নীলকণ্ঠপুর গ্রামের বাড়িতে গিয়ে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্য দেখা যায়। মেধাবী এ ছাত্রীর অকাল মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না কেউই।

তুষ্টির চাচা ঈমাম হোসেন বলেন, ‘ধর্মরায় রামধনু উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি পাশ করেছিলো তুষ্টি। পরে মদন উপজেলার জোবাইদা রহমান মহিলা কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। তুষ্টি খুব মেধাবী ছিল। তারা তিন ভাই এক বোন। বড়ভাই মাসুদ মিয়া সৌদি আরবে থাকে। তুর্জয় মিয়া অষ্টম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। আরেক ভাই মাহির বয়স ছয় বছর।’

তার আরেক চাচা মোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘আমাদেরে বংশের গৌরব ছিল তুষ্টি। তার কোনো অসুখ ছিল না। এই ঘটনা কেন ঘটল বুঝতে পারছি না। এর সঙ্গে কেউ জড়িত থাকলে তার বিচার চাই আমরা।’

এদিকে মেয়ের মৃত্যুর খবর শুনে মা হেনা আক্তার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। তিনি বলেন, এত কষ্ট করে মেয়েকে লেখাপড়া করাইছি। কেন এই সর্বনাশ হল আমার? আমার মেয়েকে এনে দাও বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল বন্ধ থাকায় ইসরাত জাহান তুষ্টিসহ তিন বান্ধবী স্টাফ কোয়ার্টারের ওই ভবনের নিচতলায় থাকতেন। যদিও তিনি বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলে সংযুক্ত ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ঢাবি ছাত্রী তুষ্টির মায়ের আর্তনাদ

আপডেট : ০১:৩০:১৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ জুন ২০২১
::নিজস্ব প্রতিবেদক::

রাজধানীর আজিমপুর এলাকায় পলাশী সরকারি স্টাফ কোয়ার্টারের একটি ভবনের বাথরুম থেকে ইসরাত জাহান তুষ্টি (২১) নামের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

রোববার সকাল সোয়া ৭টার দিকে তাকে উদ্ধার করে পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন চিকিৎসকরা।

মারা যাওয়া ওই ছাত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে ২য় বর্ষে অধ্যায়নরত ছিলেন। তিনি বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলে থাকতেন। তাদের বাড়ি নেত্রকোনা জেলায়।

তাড়াতাড়ি ময়নাতদন্তের কাজ শেষ হওয়ায় এখন তুষ্টির মরদেহবাহী গাড়ি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ছেড়ে নেত্রকোণার গ্রামের বাড়ির দিকে রওনা হয়েছে। বাদ আসর প্রথম নামাজে জানাজা ক্যাম্পাসের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে হওয়ার কথা থাকলেও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে তা বাতিল করা হয়।

এদিকে বাংলাদেশ জার্নালের নেত্রকোনা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, তুষ্টির মরদেহ উদ্ধারের পর থেকেই তার গ্রামের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।

রোববার দুপুরের দিকে নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার সুখারী ইউনিয়নের নীলকণ্ঠপুর গ্রামের বাড়িতে গিয়ে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্য দেখা যায়। মেধাবী এ ছাত্রীর অকাল মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না কেউই।

তুষ্টির চাচা ঈমাম হোসেন বলেন, ‘ধর্মরায় রামধনু উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি পাশ করেছিলো তুষ্টি। পরে মদন উপজেলার জোবাইদা রহমান মহিলা কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। তুষ্টি খুব মেধাবী ছিল। তারা তিন ভাই এক বোন। বড়ভাই মাসুদ মিয়া সৌদি আরবে থাকে। তুর্জয় মিয়া অষ্টম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। আরেক ভাই মাহির বয়স ছয় বছর।’

তার আরেক চাচা মোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘আমাদেরে বংশের গৌরব ছিল তুষ্টি। তার কোনো অসুখ ছিল না। এই ঘটনা কেন ঘটল বুঝতে পারছি না। এর সঙ্গে কেউ জড়িত থাকলে তার বিচার চাই আমরা।’

এদিকে মেয়ের মৃত্যুর খবর শুনে মা হেনা আক্তার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। তিনি বলেন, এত কষ্ট করে মেয়েকে লেখাপড়া করাইছি। কেন এই সর্বনাশ হল আমার? আমার মেয়েকে এনে দাও বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল বন্ধ থাকায় ইসরাত জাহান তুষ্টিসহ তিন বান্ধবী স্টাফ কোয়ার্টারের ওই ভবনের নিচতলায় থাকতেন। যদিও তিনি বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলে সংযুক্ত ছিলেন।