ঢাকা ০৯:৪৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চট্টগ্রাম কাস্টমে লিখিত পরীক্ষায় জালিয়াতি, আটক ২৩

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
  • আপডেট : ০৬:৪৪:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২২
  • / 154
চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে সিপাহী পদে লিখিত পরীক্ষার জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়ায় মৌখিক পরীক্ষা দিতে আসা ২৩ জনকে আটক করে থানায় হস্তান্তর করেছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।

বুধবার সকালে ৫ জন এবং মঙ্গলবার ১৮ জনকে চট্টগ্রাম পাহাড়তলী থাকায় হস্তান্তর করার পাশাপাশি দুটি পৃথক মামলাও দায়ের করা হয়েছে। কাস্টমসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ চৌধুরী বাদী হয়ে মামলা দুটি দায়ের করেন।

পাহাড়তলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) রোজিনা খাতুন এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, মামলায় ২৩ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ২৩ জনকে আসামি করা হয়েছে।

আটক পরীক্ষার্থীরা হলেন— মো. আবুল বাশার (রোল-১১০৯৯), মো. এনামুল হক (রোল-১২৭৫২), মো. শহীদুল ইসলাম (রোল-১০৮৩২), মো. রফিকুল ইসলাম (রোল-১৩৭৬২), মো, আব্দুর রশিদ (রোল-১৫০১১), সবুজ চন্দ্র (রোল-১৩০৭৬), জয় চন্দ্র দে (রোল-১১২৩৪), আবুল মিয়া (রোল-১২৪১৬), মো. মোবারক হোসেন (রোল-১২৫৬৬), মো. আক্তারুজ্জামান (রোল-১৭০৭৭), মো. খলিলুর রহমান (রোল-১৪১৭২), মো. আরিফুর রহমান (১৫১৫৩), মো. সূজন সরকার (রোল-১৬৪৮৯), নিতোষ চাকমা (রোল-১৭০৭৪), মো, সোহেল রানা (রোল-১৯৯১৭), মো. ইলিয়াছ (রোল-১৯৭৬০), কাজী দেলোয়ার হোসেন (রোল-১৯৯৮৯), মো. মহি উদ্দিন (রোল-১০২০৬)।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, প্রথমিকভাবে আটককৃত ১৮ জন প্রার্থীর মৌখিক পরীক্ষা নেয়ার সময় তাদের হাতের লেখায় গড়মিল পরিলক্ষিত হয়। একইসঙ্গে লিখিত পরীক্ষার খাতার লেখার কোন প্রশ্নের জবাবও দিতে পরেননি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে ১০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকার বিনিময়ে কৌশলে লিখিত পরীক্ষায় অন্যকে দিয়ে পরীক্ষা দিয়েছিলেন।

কাস্টম সূত্রে জানা গেছে, ৯৮ জন সিপাহী পদে ৩ হাজার ৩৪৪ জন প্রাথী অংশগ্রহণ করেছিল। এরমধ্যে গত ২২ ডিসেম্বর লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ৩৫০ জন প্রার্থী গত সোমবার, মঙ্গলবার ও আজ বুধবার মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেয়। লিখিত পরীক্ষায় জালিয়াতির বিষয় মৌখিক পরীক্ষার সময় ধরা পড়ায় ২৩ জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানান নিয়োগ পরীক্ষায় সঙ্গে সংশ্লিষ্ট্র কর্মকর্তারা।

কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, এর আগে গত ২৩ ডিসেম্বর জালিয়াতির মাধ্যমে লিখিত পরীক্ষা দিতে আসা ৭ জনকে আটক করা চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছিল।

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের যুগ্ম কমিশনার তারেক হাসান বলেন, চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে সিপাহী পদে লিখিত পরীক্ষার জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়ায় মৌখিক পরীক্ষা দিতে আসা ২৩ জনকে আটক করে পাহাড়তলী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। নিয়োগ কমিটি জড়িতদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছে। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ চায় নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আসুক। কোন অনিয়মকে প্রশ্রয় দেয়ার সুযোগ নেই।

উল্লেখ্য, ২০১৪ ও ২০১৭ সালে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলেও নানা জটিলতায় পরীক্ষাটি নেয়নি কাস্টমস। প্রায় আট বছর পর পরীক্ষা হওয়ায় চাকরির প্রার্থীদের আবেদনের ছবির সঙ্গে বর্তমান চেহারার অনেক পরিবর্তন এসেছে। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে একটি চক্র মূল প্রার্থীর বদলে অন্যজনকে দিয়ে লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করিয়েছে বলে মনে করছে কাস্টমস।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

চট্টগ্রাম কাস্টমে লিখিত পরীক্ষায় জালিয়াতি, আটক ২৩

আপডেট : ০৬:৪৪:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২২
চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে সিপাহী পদে লিখিত পরীক্ষার জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়ায় মৌখিক পরীক্ষা দিতে আসা ২৩ জনকে আটক করে থানায় হস্তান্তর করেছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।

বুধবার সকালে ৫ জন এবং মঙ্গলবার ১৮ জনকে চট্টগ্রাম পাহাড়তলী থাকায় হস্তান্তর করার পাশাপাশি দুটি পৃথক মামলাও দায়ের করা হয়েছে। কাস্টমসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ চৌধুরী বাদী হয়ে মামলা দুটি দায়ের করেন।

পাহাড়তলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) রোজিনা খাতুন এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, মামলায় ২৩ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ২৩ জনকে আসামি করা হয়েছে।

আটক পরীক্ষার্থীরা হলেন— মো. আবুল বাশার (রোল-১১০৯৯), মো. এনামুল হক (রোল-১২৭৫২), মো. শহীদুল ইসলাম (রোল-১০৮৩২), মো. রফিকুল ইসলাম (রোল-১৩৭৬২), মো, আব্দুর রশিদ (রোল-১৫০১১), সবুজ চন্দ্র (রোল-১৩০৭৬), জয় চন্দ্র দে (রোল-১১২৩৪), আবুল মিয়া (রোল-১২৪১৬), মো. মোবারক হোসেন (রোল-১২৫৬৬), মো. আক্তারুজ্জামান (রোল-১৭০৭৭), মো. খলিলুর রহমান (রোল-১৪১৭২), মো. আরিফুর রহমান (১৫১৫৩), মো. সূজন সরকার (রোল-১৬৪৮৯), নিতোষ চাকমা (রোল-১৭০৭৪), মো, সোহেল রানা (রোল-১৯৯১৭), মো. ইলিয়াছ (রোল-১৯৭৬০), কাজী দেলোয়ার হোসেন (রোল-১৯৯৮৯), মো. মহি উদ্দিন (রোল-১০২০৬)।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, প্রথমিকভাবে আটককৃত ১৮ জন প্রার্থীর মৌখিক পরীক্ষা নেয়ার সময় তাদের হাতের লেখায় গড়মিল পরিলক্ষিত হয়। একইসঙ্গে লিখিত পরীক্ষার খাতার লেখার কোন প্রশ্নের জবাবও দিতে পরেননি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে ১০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকার বিনিময়ে কৌশলে লিখিত পরীক্ষায় অন্যকে দিয়ে পরীক্ষা দিয়েছিলেন।

কাস্টম সূত্রে জানা গেছে, ৯৮ জন সিপাহী পদে ৩ হাজার ৩৪৪ জন প্রাথী অংশগ্রহণ করেছিল। এরমধ্যে গত ২২ ডিসেম্বর লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ৩৫০ জন প্রার্থী গত সোমবার, মঙ্গলবার ও আজ বুধবার মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেয়। লিখিত পরীক্ষায় জালিয়াতির বিষয় মৌখিক পরীক্ষার সময় ধরা পড়ায় ২৩ জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানান নিয়োগ পরীক্ষায় সঙ্গে সংশ্লিষ্ট্র কর্মকর্তারা।

কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, এর আগে গত ২৩ ডিসেম্বর জালিয়াতির মাধ্যমে লিখিত পরীক্ষা দিতে আসা ৭ জনকে আটক করা চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছিল।

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের যুগ্ম কমিশনার তারেক হাসান বলেন, চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে সিপাহী পদে লিখিত পরীক্ষার জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়ায় মৌখিক পরীক্ষা দিতে আসা ২৩ জনকে আটক করে পাহাড়তলী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। নিয়োগ কমিটি জড়িতদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছে। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ চায় নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আসুক। কোন অনিয়মকে প্রশ্রয় দেয়ার সুযোগ নেই।

উল্লেখ্য, ২০১৪ ও ২০১৭ সালে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলেও নানা জটিলতায় পরীক্ষাটি নেয়নি কাস্টমস। প্রায় আট বছর পর পরীক্ষা হওয়ায় চাকরির প্রার্থীদের আবেদনের ছবির সঙ্গে বর্তমান চেহারার অনেক পরিবর্তন এসেছে। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে একটি চক্র মূল প্রার্থীর বদলে অন্যজনকে দিয়ে লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করিয়েছে বলে মনে করছে কাস্টমস।